আমাদের জুলাই জেনারেশনের এক প্রিয় অভিব্যক্তি ‘নয়া বন্দোবস্ত’। তারা প্রায়ই বলে, রাজনীতিতে নয়া বন্দোবস্ত আনাই ওদের লক্ষ্য। অবশ্য এই কথাটির মাধ্যমে ওরা ঠিক কী বোঝাতে চায়, সেটা আমার কাছে এখনো পরিষ্কার নয়। আমি আজকের লেখার শিরোনামে নয়া বন্দোবস্ত বলতে মূলত আমাদের সার্বভৌমত্বের পাহারাদার, প্রিয় সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ এবং চিন্তার ‘Reorientation’ নিয়ে আলোচনা করতে চাই। সম্ভবত এমন এক ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করলাম, যার একটি খটমটে বাংলা প্রতিশব্দ আছে, যার আবার অর্থ বোঝা ইংরেজির চেয়ে কম কঠিন নয়। প্রতিশব্দটি হলো ‘অভিযোজন’। সহজ কথায় আমি বলতে চাচ্ছি, বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশের ভেতর ও বাইরের হুমকি বিবেচনায় নিয়ে সামরিক বাহিনীর সার্বিক অবস্থান ও চিন্তাধারা পুনর্নির্ধারণ করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। কোনো রাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর নৈতিকতায় আপসকামিতা একবার প্রবেশ করলে সেই রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা কঠিন হয়ে যায়। কদিন আগে আমার দেশ-এ সেনাবাহিনীর জন্য ৪৫ বছরের পুরোনো চারটি হেলিকপ্টার কেনার বিষয়ে সংবাদ এবং তার প্রতিক্রিয়ায় আইএসপিআর প্রদত্ত প্রতিবাদ পড়েই সামরিক বাহিনী নিয়ে আমার এই মন্তব্য প্রতিবেদন লেখার ইচ্ছা হয়েছে।
আমার দেশ-এ ১১ নভেম্বর প্রকাশিত ‘সেনাবাহিনীতে ১৯৮০ সালের হেলিকপ্টার কেনার আয়োজন’ শিরোনামের সংবাদে চারটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল—
১. যে চারটি পুরোনো হেলিকপ্টার কেনার আয়োজন চলছে, তাদের জন্ম ১৯৮০ সালে।
২. সচরাচর পুরোনো যন্ত্রপাতি সরকার থেকে সরকার (G2G) প্রক্রিয়ায় কেনা হলেও এক্ষেত্রে বেসরকারি কোম্পানির মাধ্যমে কেনা হচ্ছে।
৩. যে বিশেষ বেসরকারি কোম্পানিটি ৪৫ বছরের পুরোনো হেলিকপ্টার সেনাবাহিনীকে সরবরাহ করতে যাচ্ছে, সেটি হাসিনার সব গণহত্যা ও গুম-খুনের প্রধান সহযোগী, মহা দুর্নীতিবাজ, দিল্লিতে পলাতক মেজর জেনারেল (অব.) তারিক সিদ্দিকের স্বার্থসংশ্লিষ্ট।
৪. তারিক সিদ্দিকের স্বার্থসংশ্লিষ্ট উপরোক্ত কোম্পানির সিইও’র নাম এহতেশাম হুদা যিনি ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর মহান সিপাহি-জনতা বিদ্রোহে নিহত কর্নেল হুদার ছেলে। এই কর্নেল হুদা, মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফের অন্যতম সহযোগী ছিলেন। এহতেশাম হুদার বোন, বর্তমানে পলাতক নাহিদ ইজহার খান গণহত্যার দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনার নির্দেশে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করার জন্য ‘মায়ের কান্না’ নামে এক ভুয়া সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই আওয়ামী সংগঠনটি করা হয়েছিল গুমের শিকার পরিবারদের প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সংগঠন ‘মায়ের ডাক’কে প্রতিহত করার জন্য। নাহিদ ইজহার খান নিয়মিতভাবে শহীদ জিয়ার চরিত্রহনন করতেন।
আমরা আশা করেছিলাম, পত্রিকায় এই চাঞ্চল্যকর খবর প্রকাশের পর বাংলাদেশ সরকার এবং সেনাবাহিনী তারিক সিদ্দিকের কোম্পানির কাছ থেকে পুরোনো হেলিকপ্টার কেনার প্রক্রিয়া অবিলম্বে স্থগিত করে পুরো ক্রয়প্রক্রিয়া পুনর্মূল্যায়ন করবে। কিন্তু তার পরিবর্তে আইএসপিআরের প্রতিবাদ পড়ে বেশ হতাশ হয়েছি। আইএসপিআর আমার দেশ-এ প্রকাশিত সংবাদের কোনো তথ্যের প্রতিবাদ করতে না পেরে তিনটি অতি দুর্বল ও অগ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিয়েছে—
১. সব আইনকানুন মেনে সেনাবাহিনী, অর্থাৎ ডিজিডিপি তারিক সিদ্দিকের কোম্পানিকে ক্রয়াদেশ দিয়েছে।
২. জিটুজি পদ্ধতিতে পুরোনো যন্ত্রপাতি ক্রয় করা সেনাবাহিনীর জন্য বাধ্যতামূলক নয়।
৩. কোনো ব্যবসায়ীর ব্যক্তিগত ইতিহাস সেনাবাহিনীর কাছে কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়!!!
তিন নম্বর ব্যাখ্যাটি আমাকে হতবাক করেছে এবং সেজন্যই আজ সেনাবাহিনীতে নতুন বন্দোবস্তের দাবি জানাতে হচ্ছে।
পাঠকদের মধ্যে অনেকের নিশ্চয়ই ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় যাতায়াতের অভিজ্ঞতা আছে। জাহাঙ্গীর গেটে পৌঁছালেই মিলিটারি পুলিশের সৈনিক আপনাকে থামিয়ে পরিচয় জানতে চাইবে। সেই পরিচয়ে সন্তুষ্ট হলেই কেবল আপনাকে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। এই ঝামেলার জন্য আমি কখনো ক্যান্টনমেন্ট এলাকা দিয়ে যাতায়াত করি না। যে এলাকায় আমার মতো আমজনতা কর্তৃপক্ষকে পরিচয় দিয়ে এবং প্রবেশের উদ্দেশ্য জানিয়ে সন্তুষ্ট করা ছাড়া ঢুকতেই পারে না, সেই এলাকার মালিক সেনাবাহিনীর মুখপত্র আইএসপিআর লিখিতভাবে জানাচ্ছে, হেলিকপ্টার সরবরাহের মতো সংবেদনশীল ব্যবসায় জড়িত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ইতিহাস নাকি কোনো বিবেচ্য বিষয়ই নয়। দিল্লির এজেন্ট, খুনি হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা সেনাবাহিনীতে আগের মতো ব্যবসার নামে লুটপাট অব্যাহত রাখলে এবং দেশের প্রতি হুমকি সৃষ্টি হলে, মিডিয়া সেই সংবাদ প্রকাশ করলে সেটা নাকি আইএসপিআরের ভাষায়—‘ভিত্তিহীন, বিভ্রান্তিকর এবং কোনোভাবেই কাম্য নয়।’ আইএসপিআরের প্রতিবাদপত্র পড়ে আমি নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। কারা এদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে? এদের প্রশিক্ষণ বইপুস্তকেই বা কী লেখা আছে? এটা কি ১৫ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসনের সর্বত্র অবক্ষয়ের আর একটি উদ্বেগজনক চিত্র? তাহলে আমরা এতদিন হাসিনার জমানায় বাংলাদেশের সব ক্যান্টনমেন্টে ভারতীয় গোয়েন্দাদের অবাধ বিচরণের যে প্রচারণা শুনতাম, সেগুলো কি সব সত্যি ছিল? আমি তো একজন নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষভাবে শঙ্কিত বোধ করছি।
এটা নিয়ে সম্ভবত বিতর্কের কোনো সুযোগ নেই যে, দিল্লি ও শেখ হাসিনার পক্ষে মেজর জেনারেল তারিক সিদ্দিক ১৫ বছর ধরে সামরিক বাহিনীর হর্তাকর্তা সেজে ছিলেন। বেশ কয়েকজন বর্তমান এবং সাবেক সিনিয়র সেনা কর্মকর্তা আমার কাছে স্বীকার করেছেন, তারা তারিক সিদ্দিকের প্রভাবের কাছে অসহায় ছিলেন। কর্নেলের ওপরে কারা পদোন্নতি পাবেন, সেটি ‘র’, হাসিনা ও তারিক সিদ্দিকের ভয়ংকর ট্রয়কা স্থির করত। সেই সময় হাসিনার সরাসরি নির্দেশে ডিজিএফআই মহা প্রভাবশালী এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল। আমি আইসিটির কাছে দেওয়া ডিজিএফআইয়ের এক সাবেক প্রধানের জবানবন্দি শুনেছি। সেখানে তিনি ব্রিগেডিয়ার আযমীর গুমের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি নাকি শেখ হাসিনার কাছে একাধিকবার ব্রিগেডিয়ার আযমীকে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব করলে সেই খুনি শাসক সম্মত হননি। অর্থাৎ, ডিজিএফআইয়ের আয়নাঘর এবং সেখানকার ভিকটিমদের বিষয়ে সেনাবাহিনীর জেনারেলরা অবগত ছিলেন। সম্ভবত তারা সবাই এখন কোনো কিছু না জানার দাবি করবেন। অপরাধী জেনারেলদের অধিকাংশই ভারতে পালিয়েছেন, অথবা তাদের পালিয়ে যেতে দেওয়া হয়েছে। শুনেছি, সেনাপ্রধানরা তাদের দায়িত্বের অংশ হিসেবে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন পর্যায়ের অফিসারদের সঙ্গে দরবারে বসেন। ফ্যাসিবাদের ১৫ বছরে কোনো দরবারে তৎকালীন রাজনৈতিক সরকারের অপকর্মে সেনাবাহিনীকে জড়িত করার বিরুদ্ধে কোনো জেনারেল কি আওয়াজ তুলেছেন? দেশের সার্বভৌমত্ব লুণ্ঠিত হওয়ার সময় তাদের ভূমিকা কী ছিল? একজন সাবেক সামরিক কর্মকর্তা আমাকে সম্প্রতি একদিন অভিযোগ করে বলছিলেন, হাসিনার দুঃশাসনের জন্য জনগণ সেনাবাহিনীকে অধিক মাত্রায় দায়ী করলেও সুবিধাবাদী আমলাদের ব্যাপারে কিছু বলে না। আমি তাকে জবাবে বলেছিলাম, সেনাবাহিনীর কাছে দেশপ্রেমের প্রত্যাশা আমলাদের তুলনায় অনেক বেশি থাকার কারণেই উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও দুর্নীতিপরায়ণ জেনারেলদের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণের এত অভিযোগ। আমি তাকে আরো বলেছিলাম, সেনাবাহিনীর প্রতি জনগণের এই প্রত্যাশা ও ভালোবাসার কারণে তার তো গর্ববোধ করা উচিত। জেনারেল আজিজ বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রধান হওয়ার পর কনক সারওয়ারের সঙ্গে ইস্তাম্বুল থেকে টকশোতে অংশ নিয়ে আমি দুঃখ করে বলেছিলাম, আমাদের অন্য সামরিক কর্মকর্তারা আজিজের মতো ব্যক্তিকে স্যালুট করছেন কী করে? সামরিক বাহিনীতে প্রায় দেড় দশকের এই অব্যাহত পচনের চিকিৎসা ড. ইউনূস কতটা করতে পেরেছেন, সেটি তিনিই ভালো জানেন। তার একজন লেফটেন্যান্ট জেনারেল সামরিক উপদেষ্টা এবং একজন বেসামরিক স্কলার নিরাপত্তা উপদেষ্টা রয়েছেন। তাদের দায়িত্ব ও কাজের বিভাজন সম্পর্কে আমার জানা নেই। কিন্তু হাসিনার আমলে পদোন্নতিপ্রাপ্ত এবং বিতর্কিত সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তারা তেমন কোনো ব্যবস্থা নিয়েছেন, এ রকম সংবাদ পাওয়া যায়নি।
আমি মনে করি, বিচার বিভাগ এবং সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনে প্রয়োজনীয় শুদ্ধি অভিযান না চালাতে পারাটাই প্রফেসর ইউনূসের ১৫ মাসের শাসনের প্রধান ব্যর্থতা হয়ে থাকবে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের চরিত্র বুঝতে না পারার কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এক মহান বিপ্লবের প্রক্রিয়ায় জন্মলাভ করা একটি রক্তস্নাত সরকারের নাম যে ‘অন্তর্বর্তীকালীন’ হতে পারে না, এটাই প্রফেসর ইউনূস ও তার উপদেষ্টারা উপলব্ধি করেননি। সংবিধান নামের কোন ‘ডকুমেন্ট’ অনুযায়ী আমাদের সন্তানেরা জীবন দেয়নি, দানব হাসিনাকে উৎখাত করেনি এবং ভারতীয় আগ্রাসনকে চ্যালেঞ্জ করেনি। প্রফেসর ইউনূস প্রত্যাশিত দৃঢ়তার সঙ্গে পচে যাওয়া সিস্টেমকে তার পক্ষে যতটা সম্ভব পরিবর্তন না করে মানিয়ে চলার নীতি গ্রহণ করে দুর্বলতার পরিচয় দিয়েছেন। এই নষ্ট সিস্টেম বাংলাদেশে ‘কদমবুসি রাষ্ট্রপতি’ এবং ‘কদমবুসি জেনারেল’দের জন্ম দিয়েছে। তিনি প্রশাসনে দিল্লি প্রভাবিত ‘স্ট্যাটাস কো’ বজায় রেখেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর রাজপথের শক্তিকে ভয়ের দৃষ্টিতে দেখেছেন এবং বিভিন্ন মহলের যৌক্তিক ও অযৌক্তিক শত শত দাবি-দাওয়া মেটানোর চেষ্টা করেছেন। অথচ প্রথম থেকেই সরকার বিপ্লবী চরিত্র ধারণ করতে পারলে শেখ হাসিনা তার প্রভুর আশ্রয়ে থেকে আজ আস্ফালন করতে পারতেন না, সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনে এত দিনে সফলভাবে শুদ্ধি অভিযান চালানো যেত, অনর্থক বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা যেত এবং শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিয়ে জনমনে আর কোনো শঙ্কা থাকত না। অতি সম্প্রতি জাতির উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণে প্রফেসর ইউনূস বিলম্বে হলেও সঠিক এবং দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন। এখন সরকারের প্রধান কাজ হবে ঘোষিত গণভোটের চার দফার আলোকে ফেব্রুয়ারির প্রত্যাশিত নির্বাচন সম্পন্ন করা। তবে দলীয় ভাবধারায় বিভক্ত আমলাতন্ত্র কতটা নিরপেক্ষভাবে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে, সেটি নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। নির্বাচনে কোন দল জিতবে, সেটি আমাদের আগাম জানার কোনো উপায় নেই। তবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে প্রচলিত ধারণা বা জ্ঞান (Conventional Wisdom) বলে একটি বহুল প্রচলিত কথা আছে। সেই প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী পরবর্তী সংসদে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর যথাক্রমে সরকারি এবং বিরোধী বেঞ্চে বসার কথা। আমার ব্যক্তিগত প্রত্যাশা, দেশের স্বাধীনতার স্বার্থে তারা পারস্পরিক সম্মতিক্রমে সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনে ভারতীয় পঞ্চম বাহিনীকে চিহ্নিত করে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে বর্তমান সরকারের অসমাপ্ত কাজটি সম্পন্ন করবে। এ ক্ষেত্রে দুর্বলতা দেখালে কিংবা বিলম্ব করলে সরকার পরিচালনার বিষয়টি কঠিন হওয়ার আশঙ্কা আছে। আশা করি, কোনো সংকীর্ণ দলীয় চিন্তা তাদের ওপর জনগণের অর্পিত মহান দায়িত্ব পালনে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।


হাসিনাকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জোরালো হচ্ছে
২২ বছর পর ভারতকে হারালো বাংলাদেশ