গাজীউল হাসান খান
এ কথা ঠিক যে, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাসহ সমগ্র বিশ্ববাসী গাজায় ঘোষিত যুদ্ধবিরতির ঘোষণায় আপাতত খুশি এবং স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। কারণ ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের অখণ্ডতা ভঙ্গ করে ১৯৪৮ সালে এখানে বলপূর্বক একটি ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ অঞ্চলের শান্তি-স্বস্তি প্রায় উধাও হয়ে গিয়েছিল। পর্যায়ক্রমিক সংঘাত-সংঘর্ষ কিংবা যুদ্ধ-বিগ্রহে বিগত প্রায় আট দশক ধরে স্থানীয় আরব বাসিন্দাদের কোনো শান্তি বা জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে ন্যূনতম নিরাপত্তাও ছিল না। প্রায় বিপর্যস্ত বা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল তাদের ভবিষ্যৎ জীবন কিংবা অস্তিত্বের প্রশ্নটি। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইহুদিবাদী একটি শক্তির সমন্বিত চক্রান্তের ফলে ইসরাইল নামক একটি ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল এ ভূখণ্ডে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে থেকে এ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হলেও, সেই পরিকল্পনা বাস্তবে রূপলাভ করে যুদ্ধের পর। তবে জার্মানি, রাশিয়াসহ পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইহুদিদের আসার মূল উদ্দেশ্য ছিল এখানে একটি ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের রাষ্ট্র বা নিজ বাসভূমি গড়ে তোলা। সে কারণেই এ ভূখণ্ডে এসেই তারা স্থানীয় অর্থাৎ ফিলিস্তিনি আরবদের বিভিন্ন কৌশলে বিতাড়ন শুরু করে। কিন্তু জাতিসংঘ, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের এ অঞ্চলে ইহুদিদের জন্য একটি পৃথক রাষ্ট্র গড়ে তোলার সম্পূর্ণ বিরোধিতা করে আরব জনগণ, যা আজও অব্যাহত রয়েছে। তেল আবিবকে রাজধানী করে ১৯৪৮ সালে ইসরাইল নামক একটি ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হলেও ইহুদিবাদীদের উদ্দেশ্য ছিল এখানে অর্থাৎ এ ভূখণ্ডে জেরুসালেমকে রাজধানী করে একটি বৃহত্তর এবং শক্তিশালী ইহুদি রাষ্ট্র গড়ে তোলা। তাদের পরিকল্পনা ছিল নীল নদের অববাহিকা থেকে শুরু করে ইরাকের উপর দিয়ে প্রবহমান ফোরাত নদীর তীর পর্যন্ত সে রাজ্যের ব্যাপ্তি ঘটানো। তাতে মিসরের সিনাই অঞ্চল থেকে লেবানন, জর্ডান, ফিলিস্তিনি এবং ইরাকের বিভিন্ন এলাকা তাতে সন্নিবেশিত করা। ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলের হাতেগোনা কয়েকজন রাষ্ট্রনায়ককে বাদ দিলে অধিকাংশেরই ধ্যান-ধারণা ছিল তাই। এর মধ্যে ইসরাইলের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অন্যতম প্রধান ব্যক্তি বলে এখনো বিবেচিত হচ্ছেন। নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনের স্বাধীনতায় মোটেও বিশ্বাস করেন না। ফিলিস্তিনি সমস্যার একটি দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান তার কাছে প্রহসন মাত্র।
তেমন একটি অবস্থা বা পরিস্থিতিতে এ অঞ্চলের অন্যান্য আরব এবং মুসলিম রাষ্ট্রের প্রধান এবং বিশ্ববাসীর বিভিন্ন রাজনৈতিক চাপে শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাধ্য হয়েছেন একটি ব্যবস্থা নিতে। তিনি গাজায় যুদ্ধবিরতি, বন্দিবিনিময় ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করেছেন তার ঘোষিত ২০ দফাভিত্তিক যুদ্ধবিরতিসহ ধাপে ধাপে অন্যান্য প্রস্তাব মেনে নিতে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ‘মতলববাজ প্রেসিডেন্ট’ ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সেদিনও গাজাবাসীর নিজ ভূখণ্ড ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন। তিনি গাজা দখল করে নেওয়াসহ একপর্যায়ে কিনে নেওয়ারও প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তাতে সমগ্র আরব ও মুসলিম বিশ্বসহ শান্তিকামী বিশ্ববাসী রুখে দাঁড়ায়। ‘গাজা বিক্রির জন্য নয়’ এবং ‘গাজায় স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্মগত অধিকার গাজাবাসীর রয়েছে’। বিশ্বব্যাপী এই প্রতিবাদী স্লোগানের কারণে ক্রমে ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়ে ইহুদিবাদী নেতানিয়াহু এবং সাম্রাজ্যবাদী ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বব্যাপী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বিশেষ করে নেতানিয়াহু সম্পূর্ণভাবে একঘরে হয়ে পড়েছিলেন। জাতিসংঘের ৮০তম অধিবেশনে নেতানিয়াহুর ভাষণধানকালে সমগ্র হলটিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ তাদের তাঁবেদার দু-একটি ছোটখাটো দেশের প্রতিনিধি ছাড়া আর কেউ উপস্থিত ছিলেন না। ডোনাল্ড ট্রাম্প এ দৃশ্যটিই শেষ পর্যন্ত তুলে ধরেছিলেন নেতানিয়াহুর কাছে যে, ‘বিশ্বব্যাপী তোমার কোথাও কোনো সমর্থন নেই। তুমি সম্পূর্ণ একঘরে হয়ে পড়েছো’। ট্রাম্প বলেছেন, নেতানিয়াহু অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিসহ তা ২০ দফা শান্তি প্রস্তাব মেনে না নিলে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন গাজায় কিংবা ফিলিস্তিনে সংঘর্ষ চালিয়ে যাওয়ার জন্য অর্থনৈতিক কিংবা সামরিক সাজসরঞ্জাম সরবরাহের ক্ষেত্রে তাকে আর কোনো মদত দিতে পারবেন না।
গাজার ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলনকারী দল হামাস ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের অভ্যন্তরে হামলা চালানোর পর থেকে বিগত দুই বছরে যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে ৪০ বিলিয়ন ডলারের সামরিক অস্ত্রশস্ত্র সাহায্য হিসেবে পাঠিয়েছে। ইসরাইলের হয়ে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে এবং ইয়েমেনের সশস্ত্র আনসারুল্লাহ বাহিনীর ওপর পর্যায়ক্রমে হামলা চালিয়েছে। কিন্তু তাতে ইসরাইলের অবস্থান সুদৃঢ় হয়নি; বরং ক্রমে ক্রমে ইসরাইল দুর্বল হয়ে পড়েছে। পরিকল্পিতভাবে তাদের সে আক্রমণ অব্যাহত রাখার ক্ষমতা কোনোদিক থেকে তাদের এখন আর নেই। সুতরাং ট্রাম্পের ২০ দফা প্রস্তাব অনুযায়ী নেতানিয়াহুকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, বন্দিবিনিময় এবং আপাতত শান্তি প্রতিষ্ঠায় ট্রাম্প বাধ্য করতে সক্ষম হয়েছেন। তবে দীর্ঘ মেয়াদে ফিলিস্তিনসহ মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে না বলে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ এবং বিশিষ্ট রাজনৈতিক ভাষ্যকার জেফ্রি স্যাকস পরিষ্কারভাবে মতপ্রকাশ করেছেন। নিজে একজন ইহুদি ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি বলেছেন, এ চুক্তি শেষ পর্যন্ত কার্যকর হবে না। কারণ দীর্ঘ মেয়াদে এটি একটি ‘ধাপ্পাবাজি’। বর্তমান বিপর্যস্ত সামরিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক পরিস্থিতি থেকে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইল ও তার পর্যুদস্ত নেতা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে উদ্ধার করার জন্যই ট্রাম্প এ কৌশল এঁটেছেন। নেতানিয়াহু আপাতত দেশের আদালতে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা কিংবা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে গণহত্যা কিংবা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ থেকে বাঁচার জন্য যে সাময়িক কৌশল গ্রহণ করেছেন, তাতে মধ্যপ্রাচ্যে এবং বিশেষ করে গাজাসহ ফিলিস্তিনবাসীর নিরাপত্তা অধিকার কিংবা স্বাধীনতা নিশ্চিত হবে না। কারণ ট্রাম্পের ২০ দফা প্রস্তাবে মধ্যপ্রাচ্যে ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধানে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক পরিকল্পনার শক্তিশালী কোনো রূপরেখা নেই। এটি শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে সময় অপচয় এবং আরব বা মুসলিম রাষ্ট্রগুলোসহ বিশ্ববাসীকে পথভ্রষ্ট করার একটি কৌশল। সে কৌশলে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার ইহুদি জামাতা জ্যারেড কুশনার মধ্যপ্রাচ্যে রিয়্যাল এস্টেটসহ ব্যবসা-বাণিজ্য জোরদার করবেন।
বর্তমান পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং গণমাধ্যম-বিশেষজ্ঞরা যুদ্ধবিরতির গ্যারান্টর তুরস্ক, মিসর ও কাতারের প্রতি অবিলম্বে মধ্যপ্রাচ্যে ফিলিস্তিন সমস্যার একটি দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের ফর্মুলা উপস্থাপন করার জোর সুপারিশ করেছেন। নতুবা এ তথাকথিত যুদ্ধবিরতি কিংবা বন্দিবিনিময় গাজায় নিহত ৬৭ হাজার নিরীহ নিরস্ত্র মানুষের জীবনদানের প্রতি কোনো সুবিচার করতে পারবে না। একটি সুচিন্তিত ও বিস্তৃত পরিকল্পনার অভাবে বিধ্বস্ত গাজার পুনর্বাসন কিংবা বুভুক্ষু মানুষের অনাহারে মৃত্যুবরণ ঠেকাতে পারবে না। গাজাসহ ফিলিস্তিনে কর্মসংস্থান সৃষ্টি কিংবা প্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করার কোনো উদ্যোগ ট্রাম্পের প্রস্তাব কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের নেতাদের মধ্যে এখনো সুস্পষ্টভাবে দেখা যায়নি। এ ক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলকে পর্যায়ক্রমে শান্তি, সমৃদ্ধি ও আঞ্চলিক সহযোগিতার নামে ‘আব্রাহাম চুক্তি’র মতো কৌশলে মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে আবার সম্পৃক্ত করে তাদের আধিপত্যই প্রতিষ্ঠা করার প্রয়াস পাবে। ইহুদিবাদীদের স্বার্থে আঘাত লাগলে যুক্তরাষ্ট্রের ধনকুবের ইহুদি সম্প্রদায় এবং তাদের ‘আমেরিকান ইসরাইলি পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কমিটির’ নেতারা শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পের পরামর্শ, উদ্যোগ কিংবা নেতৃত্বকে মেনে নিতে অস্বীকার করবেন। সুতরাং প্রকৃত অর্থে মধ্যপ্রাচ্যে এবং বিশেষ করে ফিলিস্তিনের অধিকার, নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে শুরুতেই দক্ষতা এবং কার্যকারিতার সঙ্গে পরিকল্পনা এবং কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। এ বিষয়টি নিয়ে অবিলম্বে গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল (জিসিসি), আরব লিগ এবং প্রয়োজনবোধে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) সভা আহ্বান করা আবশ্যক বলে অনেকে মতপ্রকাশ করেছেন। নতুবা ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির গ্যারান্টর তুরস্ক, কাতার ও সৌদি আরবের সঙ্গে ইহুদিবাদী ইসরাইলের সংঘর্ষ বেধে যেতে পারে। কারণ ফিলিস্তিনি সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক কোনো মৌলিক বিষয়ে ইসরাইল এখনো ন্যূনতম কোনো মতৈক্য প্রকাশ করেনি। সে অবস্থায় যুদ্ধবিরতি কতদিন এবং কীভাবে স্থায়ী হতে পারে কিংবা দুই রাষ্ট্রের পাশাপাশি সহাবস্থানের ক্ষেত্রে কী ধরনের নীতিমালা আবশ্যক, সেগুলো এখনই গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করতে হবে। নতুবা ট্রাম্পের চাপিয়ে দেওয়া শর্তাবলি গাজায় ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস কিংবা অন্য নেতারা নাও মেনে নিতে পারেন। কেননা এ ক্ষেত্রে হামাস কিংবা গাজাসহ ফিলিস্তিনের সশস্ত্র যোদ্ধারা কোনো পরাজিত শক্তি নন। বর্তমান যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব অনুযায়ী ইসরাইলের ডিফেন্স ফোর্সকে (আইডিএফ) পেছনে সরানো হবে কিন্তু যেকোনো পরিস্থিতিতে তারা আবার আগের মতো চুক্তিভঙ্গ করে সামনে এগোলে হামাসসহ অন্যরা বসে থাকবে না। নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করবে না তুরস্ক, সৌদি আরব ও কাতারের গ্যারান্টর বাহিনী। তাছাড়া, এই সমগ্র ব্যাপারটিতে মধ্যপ্রাচ্য সংঘর্ষ নিরসনের ক্ষেত্রে একটি অপ্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি ইরানকে কোনো বিবেচনাতেই কাছে ডাকা কিংবা পরামর্শ করা হচ্ছে না। অথচ ইহুদিবাদী সামরিক শক্তি ইসরাইলের ভবিষ্যৎ গোপন পরিকল্পনা হচ্ছে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ছড়িয়ে তার নীলনকশা বাস্তবায়ন করা। কিন্তু ইরান বসে নেই। জল, স্থল ও আকাশ পথে সংঘর্ষের জন্য তার ব্যাপক প্রস্তুতি চলমান রয়েছে।
লেখক : বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক
gaziulhkhan@gmail.com
এ কথা ঠিক যে, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাসহ সমগ্র বিশ্ববাসী গাজায় ঘোষিত যুদ্ধবিরতির ঘোষণায় আপাতত খুশি এবং স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। কারণ ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের অখণ্ডতা ভঙ্গ করে ১৯৪৮ সালে এখানে বলপূর্বক একটি ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ অঞ্চলের শান্তি-স্বস্তি প্রায় উধাও হয়ে গিয়েছিল। পর্যায়ক্রমিক সংঘাত-সংঘর্ষ কিংবা যুদ্ধ-বিগ্রহে বিগত প্রায় আট দশক ধরে স্থানীয় আরব বাসিন্দাদের কোনো শান্তি বা জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে ন্যূনতম নিরাপত্তাও ছিল না। প্রায় বিপর্যস্ত বা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল তাদের ভবিষ্যৎ জীবন কিংবা অস্তিত্বের প্রশ্নটি। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইহুদিবাদী একটি শক্তির সমন্বিত চক্রান্তের ফলে ইসরাইল নামক একটি ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল এ ভূখণ্ডে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে থেকে এ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হলেও, সেই পরিকল্পনা বাস্তবে রূপলাভ করে যুদ্ধের পর। তবে জার্মানি, রাশিয়াসহ পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইহুদিদের আসার মূল উদ্দেশ্য ছিল এখানে একটি ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের রাষ্ট্র বা নিজ বাসভূমি গড়ে তোলা। সে কারণেই এ ভূখণ্ডে এসেই তারা স্থানীয় অর্থাৎ ফিলিস্তিনি আরবদের বিভিন্ন কৌশলে বিতাড়ন শুরু করে। কিন্তু জাতিসংঘ, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের এ অঞ্চলে ইহুদিদের জন্য একটি পৃথক রাষ্ট্র গড়ে তোলার সম্পূর্ণ বিরোধিতা করে আরব জনগণ, যা আজও অব্যাহত রয়েছে। তেল আবিবকে রাজধানী করে ১৯৪৮ সালে ইসরাইল নামক একটি ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হলেও ইহুদিবাদীদের উদ্দেশ্য ছিল এখানে অর্থাৎ এ ভূখণ্ডে জেরুসালেমকে রাজধানী করে একটি বৃহত্তর এবং শক্তিশালী ইহুদি রাষ্ট্র গড়ে তোলা। তাদের পরিকল্পনা ছিল নীল নদের অববাহিকা থেকে শুরু করে ইরাকের উপর দিয়ে প্রবহমান ফোরাত নদীর তীর পর্যন্ত সে রাজ্যের ব্যাপ্তি ঘটানো। তাতে মিসরের সিনাই অঞ্চল থেকে লেবানন, জর্ডান, ফিলিস্তিনি এবং ইরাকের বিভিন্ন এলাকা তাতে সন্নিবেশিত করা। ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলের হাতেগোনা কয়েকজন রাষ্ট্রনায়ককে বাদ দিলে অধিকাংশেরই ধ্যান-ধারণা ছিল তাই। এর মধ্যে ইসরাইলের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অন্যতম প্রধান ব্যক্তি বলে এখনো বিবেচিত হচ্ছেন। নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনের স্বাধীনতায় মোটেও বিশ্বাস করেন না। ফিলিস্তিনি সমস্যার একটি দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান তার কাছে প্রহসন মাত্র।
তেমন একটি অবস্থা বা পরিস্থিতিতে এ অঞ্চলের অন্যান্য আরব এবং মুসলিম রাষ্ট্রের প্রধান এবং বিশ্ববাসীর বিভিন্ন রাজনৈতিক চাপে শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাধ্য হয়েছেন একটি ব্যবস্থা নিতে। তিনি গাজায় যুদ্ধবিরতি, বন্দিবিনিময় ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করেছেন তার ঘোষিত ২০ দফাভিত্তিক যুদ্ধবিরতিসহ ধাপে ধাপে অন্যান্য প্রস্তাব মেনে নিতে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ‘মতলববাজ প্রেসিডেন্ট’ ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সেদিনও গাজাবাসীর নিজ ভূখণ্ড ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন। তিনি গাজা দখল করে নেওয়াসহ একপর্যায়ে কিনে নেওয়ারও প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তাতে সমগ্র আরব ও মুসলিম বিশ্বসহ শান্তিকামী বিশ্ববাসী রুখে দাঁড়ায়। ‘গাজা বিক্রির জন্য নয়’ এবং ‘গাজায় স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্মগত অধিকার গাজাবাসীর রয়েছে’। বিশ্বব্যাপী এই প্রতিবাদী স্লোগানের কারণে ক্রমে ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়ে ইহুদিবাদী নেতানিয়াহু এবং সাম্রাজ্যবাদী ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বব্যাপী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বিশেষ করে নেতানিয়াহু সম্পূর্ণভাবে একঘরে হয়ে পড়েছিলেন। জাতিসংঘের ৮০তম অধিবেশনে নেতানিয়াহুর ভাষণধানকালে সমগ্র হলটিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ তাদের তাঁবেদার দু-একটি ছোটখাটো দেশের প্রতিনিধি ছাড়া আর কেউ উপস্থিত ছিলেন না। ডোনাল্ড ট্রাম্প এ দৃশ্যটিই শেষ পর্যন্ত তুলে ধরেছিলেন নেতানিয়াহুর কাছে যে, ‘বিশ্বব্যাপী তোমার কোথাও কোনো সমর্থন নেই। তুমি সম্পূর্ণ একঘরে হয়ে পড়েছো’। ট্রাম্প বলেছেন, নেতানিয়াহু অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিসহ তা ২০ দফা শান্তি প্রস্তাব মেনে না নিলে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন গাজায় কিংবা ফিলিস্তিনে সংঘর্ষ চালিয়ে যাওয়ার জন্য অর্থনৈতিক কিংবা সামরিক সাজসরঞ্জাম সরবরাহের ক্ষেত্রে তাকে আর কোনো মদত দিতে পারবেন না।
গাজার ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলনকারী দল হামাস ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের অভ্যন্তরে হামলা চালানোর পর থেকে বিগত দুই বছরে যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে ৪০ বিলিয়ন ডলারের সামরিক অস্ত্রশস্ত্র সাহায্য হিসেবে পাঠিয়েছে। ইসরাইলের হয়ে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে এবং ইয়েমেনের সশস্ত্র আনসারুল্লাহ বাহিনীর ওপর পর্যায়ক্রমে হামলা চালিয়েছে। কিন্তু তাতে ইসরাইলের অবস্থান সুদৃঢ় হয়নি; বরং ক্রমে ক্রমে ইসরাইল দুর্বল হয়ে পড়েছে। পরিকল্পিতভাবে তাদের সে আক্রমণ অব্যাহত রাখার ক্ষমতা কোনোদিক থেকে তাদের এখন আর নেই। সুতরাং ট্রাম্পের ২০ দফা প্রস্তাব অনুযায়ী নেতানিয়াহুকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, বন্দিবিনিময় এবং আপাতত শান্তি প্রতিষ্ঠায় ট্রাম্প বাধ্য করতে সক্ষম হয়েছেন। তবে দীর্ঘ মেয়াদে ফিলিস্তিনসহ মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে না বলে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ এবং বিশিষ্ট রাজনৈতিক ভাষ্যকার জেফ্রি স্যাকস পরিষ্কারভাবে মতপ্রকাশ করেছেন। নিজে একজন ইহুদি ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি বলেছেন, এ চুক্তি শেষ পর্যন্ত কার্যকর হবে না। কারণ দীর্ঘ মেয়াদে এটি একটি ‘ধাপ্পাবাজি’। বর্তমান বিপর্যস্ত সামরিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক পরিস্থিতি থেকে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইল ও তার পর্যুদস্ত নেতা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে উদ্ধার করার জন্যই ট্রাম্প এ কৌশল এঁটেছেন। নেতানিয়াহু আপাতত দেশের আদালতে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা কিংবা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে গণহত্যা কিংবা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ থেকে বাঁচার জন্য যে সাময়িক কৌশল গ্রহণ করেছেন, তাতে মধ্যপ্রাচ্যে এবং বিশেষ করে গাজাসহ ফিলিস্তিনবাসীর নিরাপত্তা অধিকার কিংবা স্বাধীনতা নিশ্চিত হবে না। কারণ ট্রাম্পের ২০ দফা প্রস্তাবে মধ্যপ্রাচ্যে ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধানে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক পরিকল্পনার শক্তিশালী কোনো রূপরেখা নেই। এটি শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে সময় অপচয় এবং আরব বা মুসলিম রাষ্ট্রগুলোসহ বিশ্ববাসীকে পথভ্রষ্ট করার একটি কৌশল। সে কৌশলে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার ইহুদি জামাতা জ্যারেড কুশনার মধ্যপ্রাচ্যে রিয়্যাল এস্টেটসহ ব্যবসা-বাণিজ্য জোরদার করবেন।
বর্তমান পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং গণমাধ্যম-বিশেষজ্ঞরা যুদ্ধবিরতির গ্যারান্টর তুরস্ক, মিসর ও কাতারের প্রতি অবিলম্বে মধ্যপ্রাচ্যে ফিলিস্তিন সমস্যার একটি দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের ফর্মুলা উপস্থাপন করার জোর সুপারিশ করেছেন। নতুবা এ তথাকথিত যুদ্ধবিরতি কিংবা বন্দিবিনিময় গাজায় নিহত ৬৭ হাজার নিরীহ নিরস্ত্র মানুষের জীবনদানের প্রতি কোনো সুবিচার করতে পারবে না। একটি সুচিন্তিত ও বিস্তৃত পরিকল্পনার অভাবে বিধ্বস্ত গাজার পুনর্বাসন কিংবা বুভুক্ষু মানুষের অনাহারে মৃত্যুবরণ ঠেকাতে পারবে না। গাজাসহ ফিলিস্তিনে কর্মসংস্থান সৃষ্টি কিংবা প্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করার কোনো উদ্যোগ ট্রাম্পের প্রস্তাব কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের নেতাদের মধ্যে এখনো সুস্পষ্টভাবে দেখা যায়নি। এ ক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলকে পর্যায়ক্রমে শান্তি, সমৃদ্ধি ও আঞ্চলিক সহযোগিতার নামে ‘আব্রাহাম চুক্তি’র মতো কৌশলে মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে আবার সম্পৃক্ত করে তাদের আধিপত্যই প্রতিষ্ঠা করার প্রয়াস পাবে। ইহুদিবাদীদের স্বার্থে আঘাত লাগলে যুক্তরাষ্ট্রের ধনকুবের ইহুদি সম্প্রদায় এবং তাদের ‘আমেরিকান ইসরাইলি পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কমিটির’ নেতারা শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পের পরামর্শ, উদ্যোগ কিংবা নেতৃত্বকে মেনে নিতে অস্বীকার করবেন। সুতরাং প্রকৃত অর্থে মধ্যপ্রাচ্যে এবং বিশেষ করে ফিলিস্তিনের অধিকার, নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে শুরুতেই দক্ষতা এবং কার্যকারিতার সঙ্গে পরিকল্পনা এবং কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। এ বিষয়টি নিয়ে অবিলম্বে গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল (জিসিসি), আরব লিগ এবং প্রয়োজনবোধে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) সভা আহ্বান করা আবশ্যক বলে অনেকে মতপ্রকাশ করেছেন। নতুবা ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির গ্যারান্টর তুরস্ক, কাতার ও সৌদি আরবের সঙ্গে ইহুদিবাদী ইসরাইলের সংঘর্ষ বেধে যেতে পারে। কারণ ফিলিস্তিনি সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক কোনো মৌলিক বিষয়ে ইসরাইল এখনো ন্যূনতম কোনো মতৈক্য প্রকাশ করেনি। সে অবস্থায় যুদ্ধবিরতি কতদিন এবং কীভাবে স্থায়ী হতে পারে কিংবা দুই রাষ্ট্রের পাশাপাশি সহাবস্থানের ক্ষেত্রে কী ধরনের নীতিমালা আবশ্যক, সেগুলো এখনই গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করতে হবে। নতুবা ট্রাম্পের চাপিয়ে দেওয়া শর্তাবলি গাজায় ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস কিংবা অন্য নেতারা নাও মেনে নিতে পারেন। কেননা এ ক্ষেত্রে হামাস কিংবা গাজাসহ ফিলিস্তিনের সশস্ত্র যোদ্ধারা কোনো পরাজিত শক্তি নন। বর্তমান যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব অনুযায়ী ইসরাইলের ডিফেন্স ফোর্সকে (আইডিএফ) পেছনে সরানো হবে কিন্তু যেকোনো পরিস্থিতিতে তারা আবার আগের মতো চুক্তিভঙ্গ করে সামনে এগোলে হামাসসহ অন্যরা বসে থাকবে না। নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করবে না তুরস্ক, সৌদি আরব ও কাতারের গ্যারান্টর বাহিনী। তাছাড়া, এই সমগ্র ব্যাপারটিতে মধ্যপ্রাচ্য সংঘর্ষ নিরসনের ক্ষেত্রে একটি অপ্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি ইরানকে কোনো বিবেচনাতেই কাছে ডাকা কিংবা পরামর্শ করা হচ্ছে না। অথচ ইহুদিবাদী সামরিক শক্তি ইসরাইলের ভবিষ্যৎ গোপন পরিকল্পনা হচ্ছে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ছড়িয়ে তার নীলনকশা বাস্তবায়ন করা। কিন্তু ইরান বসে নেই। জল, স্থল ও আকাশ পথে সংঘর্ষের জন্য তার ব্যাপক প্রস্তুতি চলমান রয়েছে।
লেখক : বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক
gaziulhkhan@gmail.com
এই বছর অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে উদ্ভাবন ও সৃজনশীল ধ্বংসের প্রক্রিয়া (creative destruction) কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে সেই গবেষণার ওপর। নতুন প্রযুক্তি ও ধারণা পুরোনো ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করে সমাজ যখন পরিবর্তনের জন্য উন্মুক্ত থাকে, তখনই টেক
৪ ঘণ্টা আগে‘মনের তালা খুলল কে, চাবিওয়ালা, চাবিওয়ালা!’ প্রখ্যাত শিল্পী রুনা লায়লার সেই সুরেলা প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজে বেড়াচ্ছি! তবে ব্যক্তিগত জীবনে নয়, রাষ্ট্রীয় জীবনে। এই রাষ্ট্রের জীবনেও একটা বিশেষ তালা আছে, আর তার নাম আর্টিকেল ৭০! এই তালা লাগানো হয়েছিল সেই সব মাননীয়র জন্য, যাদের মধ্যে ‘ছাগলীয়’ প্রবৃত্তি রয়ে
৪ ঘণ্টা আগেভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রায়ই তার পরম বন্ধু বলে বেশ গৌরবের সঙ্গে প্রচার করে থাকেন। ভিন্ন দেশের এ দুই রাজনীতিবিদের প্রগাঢ় বন্ধুত্বের মূল সূত্র হলো মুসলমানদের প্রতি তাদের তীব্র ঘৃণা। বর্তমান বিশ্বে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত শীর্ষ দুটি
৫ ঘণ্টা আগেগাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন হতাশা চরমে, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন এক নতুন ‘২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা’। সেখানে তিনি নিজেকে বসিয়েছেন একটি তথাকথিত ‘বোর্ড অব পিস’-এর চেয়ারম্যান হিসেবে।
১ দিন আগে