• facebook
  • fb_group
  • twitter
  • tiktok
  • whatsapp
  • pinterest
  • youtube
  • linkedin
  • instagram
  • google
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ
জাতীয়
রাজনীতি
বাণিজ্য
সারা দেশ
বিশ্ব
খেলা
আইন-আদালত
ধর্ম ও ইসলাম
বিনোদন
ফিচার
আমার দেশ পরিবার
ইপেপার
আমার দেশযোগাযোগশর্তাবলি ও নীতিমালাগোপনীয়তা নীতিডিএমসিএ
facebookfb_grouptwittertiktokwhatsapppinterestyoutubelinkedininstagramgoogle
স্বত্ব: ©️ আমার দেশ | সম্পাদক ও প্রকাশক, মাহমুদুর রহমান 
মাহমুদুর রহমান কর্তৃক ঢাকা ট্রেড সেন্টার (৮ম ফ্লোর), ৯৯, কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫ থেকে প্রকাশিত এবং আমার দেশ পাবলিকেশন লিমিটেড প্রেস, ৪৪৬/সি ও ৪৪৬/ডি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্য বিভাগ: ঢাকা ট্রেড সেন্টার, ৯৯, কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।ফোন: ০২-৫৫০১২২৫০। ই-মেইল: info@dailyamardesh.comবার্তা: ফোন: ০৯৬৬৬-৭৪৭৪০০। ই-মেইল: news@dailyamardesh.comবিজ্ঞাপন: ফোন: +৮৮০-১৭১৫-০২৫৪৩৪ । ই-মেইল: ad@dailyamardesh.comসার্কুলেশন: ফোন: +৮৮০-০১৮১৯-৮৭৮৬৮৭ । ই-মেইল: circulation@dailyamardesh.com
ওয়েব মেইল
কনভার্টারআর্কাইভবিজ্ঞাপনসাইটম্যাপ
> মতামত

হাসিনার সব অপরাধেরই বিচার হওয়া উচিত

সৈয়দ আবদাল আহমদ
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩৪
আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩৫
logo
হাসিনার সব অপরাধেরই বিচার হওয়া উচিত

সৈয়দ আবদাল আহমদ

প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩৪

আজ ১৭ নভেম্বর সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে-১ (আইসিটি) মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিচারের ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করা হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কয়েক মাস ধরে এই মামলার শুনানি চলেছে। শুনানির আগে এই মামলার বিষয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান ও তদন্ত হয়। তদন্তের পর মামলাটি ট্রাইব্যুনালে করা হয়।

মামলার রায় কী হবে, সেটি আদালতের বিচার্য বিষয়। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর সমন্বয়ে তিন সদস্যের বিচারক প্যানেল মামলাটির যাবতীয় বিষয় পর্যবেক্ষণ এবং বিশ্লেষণ করেছে, প্রমাণাদি দেখেছে এবং রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিদের আইনজীবীদের যুক্তিতর্কও শুনেছে। রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি অর্থাৎ চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন। তিনি সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, একটি হত্যার জন্য যদি একটি ফাঁসির দণ্ড হয়, তাহলে ১৪০০ হত্যার জন্য শেখ হাসিনার ১৪০০ বার ফাঁসি হওয়া উচিত। কিন্তু মানবিক কারণে আমরা তার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি। রাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান এবং মামলার বাদী পক্ষও সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছে। আগেই বলেছি, রায় কী হবে, সেটি একান্তই আদালতের বিষয়।

তবে এদেশের অধিকাংশ মানুষই মনে করে, শেখ হাসিনার অপরাধ শুধু ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলন চলাকালে গণহত্যা কিংবা মানবতাবিরোধী অপরাধই নয়, ১৫ বছর তার ফ্যাসিবাদী শাসনামলে তিনি বেশ কয়েকটি গণহত্যাসহ যেসব ভয়াবহ অপকর্ম করেছেন এবং দেশের সর্বনাশ ডেকে এনেছেন, এরও বিচার হওয়া উচিত। এই বিচার হলেই দেশে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে এবং তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে, যাতে অন্য কোনো শাসক দেশের এবং জনগণের সর্বনাশের জন্য এমন কুকর্ম আর না করেন। শেখ হাসিনা ১৫ বছরে কী অপকর্ম করেছেন, সেই সম্পর্কে পরে আসছি। আজ ট্রাইব্যুনালে যে রায় হবে, শেখ হাসিনার অপরাধ কী, সে সম্পর্কে কিছু আলোকপাত করা যাক।

Hasina-Rai2

শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধগুলো

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। গত ১৭ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই মামলার বিষয়ে প্রথম শুনানি হয় এবং সেদিই শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। প্রসিকিউশন এ বছরের ১২ মে ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। গত ৩ আগস্ট থেকে ৮ অক্টোবরের মধ্যে ৫৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। বিশিষ্ট কয়েকজন সাক্ষীর মধ্যে ছিলেন আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জুলাই আন্দোলনের শীর্ষ ছাত্রনেতা ও সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমরও প্রসিকিউশনে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন। মামলাটির যুক্তিতর্ক চলে পাঁচ কার্যদিবস এবং তা শেষ হয় ২৩ অক্টোবর। ট্রাইব্যুনাল রায়ের জন্য ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করে।

ফরমাল চার্জের সঙ্গে ১৪ খণ্ডে প্রায় ১০ হাজার পৃষ্ঠার দালিলিক সাক্ষ্য জমা দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে পত্রপত্রিকা, দেশি ও আন্তর্জাতিক অনুসন্ধান প্রতিবেদন, শহীদ এবং আহতদের গেজেট, তালিকা, বই, স্মারকগ্রন্থ, ঘটনাস্থলভিত্তিক আন্দোলনে আহত-নিহতের তালিকা, গাইল ও গ্রাফিতির বই, অভ্যুত্থানকালীন প্রকাশিত পত্রিকার প্রথম পাতা-সংবলিত বই, শহীদ এবং আহতদের চিকিৎসা সনদ, পোস্টমর্টেম ও সুরতহাল প্রতিবেদন, অস্ত্র এবং বুলেট ব্যবহারের হিসাব-সংবলিত জিডি ও প্রতিবেদন, হেলিকপ্টারের ফ্লাইট শিডিউল ইত্যাদি। ৯০টি প্রদর্শনীর মাধ্যমে ওই দালিলিক সাক্ষ্য ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়। ৩৭টি বস্তু প্রদর্শনী, যাতে অসংখ্য বুলেট, পিলেট, রক্তমাখা কাপড়, ভিডিও ওডিও-সংবলিত ডিভিডি, পেনড্রাইভ, বই ইত্যাদি।

মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার তদন্ত প্রতিবেদনের মূল অভিযোগ হচ্ছে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট ৩৬ দিনের আন্দোলন চলাকালে শেখ হাসিনা বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক এবং পদ্ধতিগত দমনপীড়ন চালানোর সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন, যা গণহত্যা, খুন ও ভয়াবহ নির্যাতনের শামিল। প্রতিবেদনে প্রধান যে অভিযোগ আনা হয়, সেগুলো হলোÑসরাসরি আদেশ অর্থাৎ শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের সব বাহিনী, তার দল আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনগুলো বিশেষ করে ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সশস্ত্র ক্যাডারদের বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরাসরি নির্দেশ দেন। গণহত্যা ও নির্যাতনÑহাসিনার নির্দেশের ফলে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত এবং ২৫ হাজারের বেশি আহত, অঙ্গহানি এবং নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছে। সুনির্দিষ্ট ঘটনার মধ্যে পাঁচটির কথা উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকার চানখাঁরপুলে নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের গুলি করে হত্যা, আশুলিয়ায় ছয়জন বিক্ষোভকারীকে গুলি করে হত্যা ও পরে তাদের লাশ পুড়িয়ে দেওয়া, ছাত্রবিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার এবং গুলিবর্ষণের নির্দেশ, হেলিকপ্টার থেকে গুলি ও প্রমাণ ধ্বংসের জন্য লাশ গুম এবং মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলা। তদন্ত প্রতিবেদনের মধ্যে তথ্যসূত্র, জব্দ করা দলিল, আলামত এবং ভুক্তভোগীদের তালিকা। মামলায় সাক্ষ্য দেওয়া উল্লেখযোগ্য সাক্ষীদের মধ্যে রয়েছেন ভুক্তভোগী, চিকিৎসক, সাংবাদিক এবং একজন শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা। ট্রাইব্যুনালে ৫৪ জন সাক্ষীই জবানবন্দি দিয়েছেন। এর মধ্যে পুলিশের সাবেক আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এই মামলায় রাজসাক্ষী বা স্টেট অ্যাপ্রুভার হয়ে আদালতে জবানবন্দি দেন, যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ মোড় ছিল। দুজন ডাক্তার ও একজন নার্স তাদের সাক্ষ্যে জানান, জুলাই আহতদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে তারা বাধার সম্মুখীন হন। আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান তার সাক্ষ্যে একজন সাংবাদিক, লেখক, গবেষক হিসেবে জবানবন্দিতে বলেন, শেখ হাসিনা বিদেশি শক্তির সমর্থনে একটি ‘ফ্যাসিবাদী শাসন’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ অন্য ভুক্তভোগী এবং নিহতদের স্বজনরা ও শিক্ষার্থীরা এ মামলায় সাক্ষ্য দেন। হাসিনার বিরুদ্ধে আদালতের কাছে বড় প্রমাণ হিসেবে প্রসিকিউশন মনে করে টেলিফোন কথোপকথনের রেকর্ড বা অডিও ক্লিপ এবং সাবেক আইজিপির সাক্ষ্য যিনি নিজে দোষ স্বীকার করে বলেছেন, ঘটনার সময় তিনি সরাসরি জড়িত ছিলেন এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সরাসরি নির্দেশ দেন গণহত্যায়। মেডিকেল রিপোর্টও অন্যতম বড় প্রমাণ।

শেখ হাসিনার মামলায় পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে : অভিযোগ নম্বর ১ : ১৪ জুলাই ২০২৪ গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা, রাজাকারের নাতিপুতি’ সম্বোধন করে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। সেই বক্তব্য সমর্থন করে ওবায়দুল কাদেরসহ কয়েকজন নেতাও উসকানিমূলক মন্তব্য করেন। যার ফলে ছাত্ররা আন্দোলনে ফেটে পড়ে, ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের সশস্ত্র কেডাররা আন্দোলনকারীদের ওপর আক্রমণ করে নির্যাতন চালায়।

সাক্ষ্যপ্রমাণ : ১. বিটিভি থেকে প্রাপ্ত (১৪ জুলাই ২০২৪) গণভবনে শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনের ভিডিওর মূল কপি। ২. শেখ হাসিনার বক্তব্য সমর্থন করে ওবায়দুল কাদের এবং আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের উসকানিমূলক বক্তব্যের সম্পর্কিত ভিডিও ও পত্রিকার খবর। ৩. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর আওয়ামী লীগ কর্তৃক পরিচালিত নির্যাতন ও নিপীড়নের নিজস্ব অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। ৪. শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সারা দেশে হত্যা ও নির্যাতনের খবর-সংবলিত পত্রিকা, ভিডিও রিপোর্ট। ৫. শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের উসকানিমূলক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে যেসব ছাত্র দেশব্যাপী আন্দোলন শুরু করে এবং তাদের ওপরে যে নির্যাতন পরিচালিত হয়, সেসব সাক্ষীর মৌখিক সাক্ষ্য।

অভিযোগ নম্বর ২ : কাউন্ট ১ : ১৪ জুলাই, ২০২৪ রাতে তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মাকসুদ কামালের সঙ্গে আসামি শেখ হাসিনা মোবাইল কথোপকথনে তিনি আন্দোলনকারীদের রাজাকার ট্যাগ দিয়ে তাদের ফাঁসি অর্থাৎ হত্যার নির্দেশ দেন। কাউন্ট ২ : ১৮ জুলাই ২০২৪ শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথনে দেখা যায়, আন্দোলন দমনে তিনি লেথাল উইপন অর্থাৎ মারণাস্ত্র ব্যবহার করে ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। ড্রোন ব্যবহার করে ছাত্র-জনতার অবস্থান নির্ণয় করা এবং হেলিকপ্টার থেকে গুলি করার নির্দেশ দেন। সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পুড়িয়ে জনতার ওপর দায় চাপানোর নির্দেশ দেন। কাউন্ট ৩ : শেখ হাসিনা ও হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে দুটি কথোপকথনে দেখা যায়, আন্দোলন দমনে হেলিকপ্টার থেকে আন্দোলনকারীদের ওপর বোম্বিং করা এবং তাদের নামে তালিকা তৈরির মাধ্যমে আটক করে নির্যাতন করা এবং তাদের বিএনপি-জামায়াত ও জঙ্গি ট্যাগ দেওয়ার নির্দেশ দেন।

সাক্ষ্যপ্রমাণ : ১. সরকারি প্রতিষ্ঠান এনটিএমসি থেকে তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্তৃক প্রাপ্ত ভয়েস রেকর্ড। ২. ওই ভয়েস রেকর্ডের ফরেনসিক রিপোর্ট এবং ট্রান্সক্রিপশন, ৩. মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের তালিকা। ৪. আহতদের তালিকা। ৫. বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কর্তৃক প্রকাশিত দ্বিতীয় স্বাধীনতায় শহীদ যারা নামক দশ খণ্ডের শহীদদের তালিকা। ৬. বিভিন্ন হাসপাতাল ও গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ শহীদ এবং আহত ব্যক্তিদের শরীর থেকে প্রাপ্ত বুলেট ও পিলেট। ৭. গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিদের মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ ও ছবি। ৮. গণমাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজ ও ছবি। ৯. অভ্যুত্থান চলাকালে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা। ১০. গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে আহত ও শহীদ পরিবারের সাক্ষাৎকার বা ঘটনা-সংবলিত পত্রপত্রিকা। ১১. জাতিসংঘের কমিশনের প্রতিবেদন, যেখানে ১৪০০ শহীদ হওয়ার ঘটনা ও শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ আছে। ১২. বিবিসির প্রতিবেদন, যেখানে তারা নিজস্ব প্রযুক্তির মাধ্যমে শেখ হাসিনার মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশনা-সম্পর্কিত কণ্ঠের সত্যতা পেয়েছেন এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বলপ্রয়োগের প্রমাণ পেয়েছেন। ১৩. আলজাজিরার প্রতিবেদন। ১৪. হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন। ১৫. ইন্টারন্যাশনাল ট্রুথ অ্যান্ড জাস্টিস প্রোজেক্ট আইটিজেপি কর্তৃক প্রস্তুতকৃত ভিডিও ডকুমেন্টারি। ১৬. আন্দোলনে অন্ধত্ব বরণকারী, পঙ্গুত্ববরণকারী, চিকিৎসাসেবায় বাধাগ্রস্তের শিকার, আহত এবং নিহতদের চিকিৎসা প্রদানকারী চিকিৎসক, শহীদ পরিবার ও আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী আহত ব্যক্তিদের মৌখিক সাক্ষ্য, বিশেষজ্ঞের সাক্ষ্য সহমত ৫৪ জনের জবানবন্দি। ১৭. পুলিশ হেডকোয়ার্টার এবং ডিএমপি কর্তৃক থেকে প্রাপ্ত আন্দোলন চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক তার ওপর পরিচালিত প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ গুলি ব্যবহারের প্রতিবেদন। ১৮. বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত আন্দোলন চলাকালে হেলিকপ্টার ব্যবহারের ফ্লাইট শিডিউল। ১৯. কারফিউ জারির সরকারি আদেশ এবং দেখা মাত্র গুলির নির্দেশ-সংবলিত নিউজ।

অভিযোগ তিন : ১৬ জুলাই ২০২৪ রংপুর রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ।

সাক্ষ্যপ্রমাণ : ১. ১৪ জুলাই ২০২৪ গণভবনে সংবাদ সম্মেলনের ভিডিও, ২. ১৪ জুলাই ২০২৪ রাতে মাকসুদ কামালের সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথনে আন্দোলনকারীদের দিয়ে তাদের ফাঁসি অর্থাৎ হত্যার নির্দেশনা। ৩. পুলিশ কর্তৃক আবু সাঈদকে হত্যার সময় ধারণ করা এনটিভির লাইভ ভিডিও এবং এনটিভি অফিস কর্তৃক ওই ভিডিওর মূল কপি। ৪. আবু সাঈদের পাঁচটি পোস্টমর্টেম রিপোর্ট, যা পুলিশের নির্দেশে চারবার পরিবর্তন করা। ৫. আবু সাঈদের হত্যার ঘটনায় সাজানো মিথ্যা মামলার কাগজপত্র। ৬. আবু সাঈদের পরিবারের সদস্য, আবু সাঈদকে পোস্টমর্টেম করা ডাক্তার, আবু সাঈদকে হত্যার ভিডিও ধারণকারী এনটিভির সাংবাদিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, আন্দোলনের সহযোদ্ধাদের, প্রত্যক্ষদর্শী ও আক্রমণে অংশগ্রহণকারী পুলিশ সদস্যদের মৌখিক সাক্ষ্য।

অভিযোগ চার : ৫ আগস্ট ২০২৪ ঢাকার চানখাঁরপুল এলাকায় ছয়জনকে পুলিশ কর্তৃক গুলি করে হত্যা করা।

সাক্ষ্যপ্রমাণ : ১. ঘটনার সময় চানখাঁরপুল এলাকায় পুলিশ কর্তৃক ছাত্র-জনতার উপর নির্বিচারে গুলি করার ভিডিও আর টিভির অফিস থেকে প্রাপ্ত ভিডিওর মূল কপি। ২. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত শহীদ আনাসকে গুলি করার ভিডিও। ৩. মাকে উদ্দেশ্য করে লেখা শহীদ আনাসের চিঠি। ৪. আনাসকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রিকশায় করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্যের ভিডিও। ৫. ইয়াকুবকে আহত অবস্থায় ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য রিকশায় তুলে দেওয়ার ভিডিও। ৬. ঘটনাস্থলে উপস্থিত এবং ঘটনার বসবাসকারীদের ব্যক্তিগত মোবাইলে ধারণ করা পুলিশ কর্তৃক ছাত্র-জনতার ওপর গুলির দৃশ্যের ভিডিও এবং আহতদের ধরাধরি করে কোথাও তুলে দেওয়ার ভিন্ন দৃশ্য-সংবলিত ভিডিও। ৭. বিটিভি কর্তৃক প্রকাশিত জুলাই অনির্বাণ নামক ডকুমেন্টারি। ৮. শহীদ পরিবারের সদস্য, ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্য, যাদের নির্দেশ দেওয়ার পরও গুলি করেনি এবং ওই পুলিশ সদস্য ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের মৌখিক সাক্ষ্য।

অভিযোগ ৫ : ৫ আগস্ট ২০২৪ আশুলিয়া থানা এলাকায় পুলিশ ছয়জনকে হত্যা করে তাদের লাশ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া।

সাক্ষ্যপ্রমাণ : ১. মোবাইলে ধারণ করা আশুলিয়া থানা-পুলিশ কর্তৃক মারণাস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার উপরে গুলিবর্ষণের ভিডিও। ২. হত্যার পর ছয়টি লাশ একটি প্যাডেল ভ্যানে ছুড়ে মারার দৃশ্য এবং চাদর দিয়ে ঢেকে দেওয়ার ভিডিও দৃশ্য। ৩. পুলিশ ভ্যানে লাশগুলো পুড়ে যাওয়ার পর লাশের ছবি। ৪. নিহতদের পরিবারের সদস্যদের মৌখিক সাক্ষ্য এবং তাদের উপস্থাপিত ছবি ও ভিডিও দৃশ্য। ৫. ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের মৌখিক সাক্ষ্য।

শেখ হাসিনার ১৫ বছরের অপশাসন

শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে (২০০৯-২০২৪) দুর্নীতি, অর্থপাচার, গণতন্ত্র ধ্বংস, নির্বাচনব্যবস্থা নস্যাৎ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক কলঙ্কিত অধ্যায়ের সৃষ্টি হয়েছে।

হাসিনা সরকারের বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম এবং ভিন্নমত দমনপীড়নের মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ নজির সৃষ্টি হয়েছে। গুম কমিশনে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬৭৬টি গুমের অভিযোগ জমা পড়েছে। কমিশন মনে করে, ওই শাসনামলে গুমের সংখ্যা ৩ হাজার ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে। এখনো ২৭ শতাংশ অর্থাৎ ২০৪ জন গুম হওয়া মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। গুমের ঘটনার সঙ্গে শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের র‌্যাবসহ বিভিন্ন বাহিনীর বেশ কিছু কর্মকর্তা সরাসরি জড়িত। অনেককেই বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়েছে। শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশ ও ইন্ধনে ওই সময়ে বেশ কয়েকটি গণহত্যা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিডিআর বিদ্রোহের নামে পিলখানায় ৫৭ জন দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তাকে নৃশংসভাবে হত্যা, হেফাজতের আন্দোলন চলাকালে শাপলা চত্বরে ৩০০ আলেম হত্যা, সাঈদীর রায়ের পর বিক্ষোভকারী শতাধিক লোককে হত্যা, মোদিবিরোধী বিক্ষোভে হত্যাকাণ্ড এবং সর্বশেষ জুলাই ছাত্র গণঅভ্যুত্থানে ১৪০০ মানুষকে হত্যা, যা জাতিসংঘ রিপোর্টে এসেছে।

ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার যে শ্বেতপত্র কমিটি গঠন করেছে, তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী শেখ হাসিনার ১৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৪০ বিলিয়ন ডলার বা ২ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। এ সময় দুর্নীতি হয়েছে ২৮টি উপায়ে। মেগা প্রকল্পগুলোয় বড় ধরনের দুর্নীতি হয়েছে, যার ফলে প্রকল্পের খরচ ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) মতে, সেবা খাতে এ সময় ঘুস হিসেবে প্রায় ১ দশমিক ৪৬ লাখ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। পদ্মা সেতু প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প দুর্নীতির আলোচিত ঘটনা।

শেখ হাসিনার আমলে বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, মিডিয়া এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। বিরোধীদের ওপর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা হয়েছে লাখ লাখ। তাদের হয়রানি এবং গণগ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ব্যাংক সেক্টরের কেলেঙ্কারি শেখ হাসিনার আমলের আলোচিত ঘটনা। ২০০৯-২০২৪ সময় পর্যন্ত সিপিডির হিসাবে ২৪টি বড় ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনায় ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ বা লুটপাট হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেঙ্কারি। এতে হলমার্ক গ্রুপ ২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির (২০০৯-২০১৩) ঘটনায় ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা লোপাট হয়। ফারমার্স ব্যাংক বা পদ্মা ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনায় ৫০০ কোটি টাকা লোপাট হয়। জনতা ব্যাংকের থার্মেক্স গ্রুপের কেলেঙ্কারির ঘটনায় প্রায় ৮১৬ কোটি টাকা ঋণ অনিয়ম ও আত্মসাৎ হয়। এস আলম গ্রুপ একাই ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে আত্মসাৎ করেছে, যার বেশির ভাগই শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা এবং তাদের আত্মীয়স্বজনের নামে ভাগবাটোয়ারা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হাসিনা আমলের এক কুখ্যাত ঘটনা। ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে হ্যাকাররা প্রায় ৮১০ কোটি টাকা চুরি করে নিয়ে গেছে। এছাড়া পি কে হালদার কেলেঙ্কারি, বিসমিল্লাহ গ্রুপ কেলেঙ্কারি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এসব কেলেঙ্কারির কারণে খেলাপি ঋণ বহু গুণ বেড়ে যায়, যার পরিমাণ প্রায় ২ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছায়।

শেখ হাসিনার আমলে (২০০৯-২০২৪) শেয়ারবাজারে দুটি বড় কেলেঙ্কারির ঘটনায় হাজার হাজার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে গেছে। ২০১০-১১ সালে ছিল শেয়ারবাজারের মহাধস। ইব্রাহিম খালেদের তদন্তে এসেছে শেয়ারবাজার ধসের ফলে ২০১১ সালে বাজার মূলধন থেকে প্রায় ২৭ বিলিয়ন ডলার বা ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়। এই কেলেঙ্কারির নায়ক ছিলেন সালমান এফ রহমান, লোটাস কামাল ও আবুল খায়ের হিরু, যারা হাসিনার ঘনিষ্ঠ লোক। তেমনি ২০২১ সালেও শেয়ারবাজারে বড় ধস নামে। কারসাজির মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করা হয়। তেমনি শেখ হাসিনার প্রথম আমলে (১৯৯৬-২০০১) সালেও শেয়ারবাজারে বিশাল কেলেঙ্কারি হয়।

শেখ হাসিনা ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে তিনটি ভুয়া নির্বাচন করে ক্ষমতা কবজা করে রাখেন। এই নির্বাচনগুলো বিনাভোট, রাতের ভোট ও ডামি নির্বাচন নামে চিহ্নিত হয়েছে। এর মাধ্যমে শেখ হাসিনা দেশের নির্বাচনি ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেন।

এছাড়া ২০০৮ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার হলফনামাটি ছিল মিথ্যা ও জালিয়াতিপূর্ণ। দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করে এই জালিয়াতি উদঘাটন করেছে। আইন অনুযায়ী শেখ হাসিনা সংসদ সদস্যই হতে পারেননি। অথচ তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়ে সরকার পরিচালনা করেছেন এবং পরে আরো তিনটি ভুয়া নির্বাচন করে ক্ষমতা কবজা করে রাখেন। অর্থাৎ তার সংসদ সদস্যপদ এবং প্রধানমন্ত্রীর পদ ও সরকারÑসবই ছিল অবৈধ। তার তৎকালীন নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমদ সিদ্দিকসহ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের নিয়ে শেখ হাসিনা যে টিম গঠন করেছিলেন, তারা সবাই ছিলেন দুর্নীতিগ্রস্ত এবং অপকর্মের হোতা। শেখ হাসিনার সঙ্গে তাদেরও বিচার করে শাস্তি দেওয়া হবে, দেশের মানুষ তা প্রত্যাশা করে।

লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, আমার দেশ

abdal62@mail.com

সম্পাদক ও প্রকাশক : মাহমুদুর রহমান কর্তৃক প্রকাশিত এবং আল-ফালাহ প্রিন্টিং প্রেস, ৪২৩, এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা-১২১৭ থেকে এবং অস্থায়ীভাবে মিডিয়া প্রিন্টার্স লি. ৪৪৬/এইচ, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্য বিভাগ : ঢাকা ট্রেড সেন্টার, ৯৯, কাজী নজরুল ইসলাম এভিণিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫। পিএবিএক্স : ০২-৫৫০১২২৫০। ই-মেইল : info@dailyamardesh.com

আজ ১৭ নভেম্বর সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে-১ (আইসিটি) মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিচারের ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করা হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কয়েক মাস ধরে এই মামলার শুনানি চলেছে। শুনানির আগে এই মামলার বিষয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান ও তদন্ত হয়। তদন্তের পর মামলাটি ট্রাইব্যুনালে করা হয়।

মামলার রায় কী হবে, সেটি আদালতের বিচার্য বিষয়। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর সমন্বয়ে তিন সদস্যের বিচারক প্যানেল মামলাটির যাবতীয় বিষয় পর্যবেক্ষণ এবং বিশ্লেষণ করেছে, প্রমাণাদি দেখেছে এবং রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিদের আইনজীবীদের যুক্তিতর্কও শুনেছে। রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি অর্থাৎ চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন। তিনি সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, একটি হত্যার জন্য যদি একটি ফাঁসির দণ্ড হয়, তাহলে ১৪০০ হত্যার জন্য শেখ হাসিনার ১৪০০ বার ফাঁসি হওয়া উচিত। কিন্তু মানবিক কারণে আমরা তার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি। রাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান এবং মামলার বাদী পক্ষও সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছে। আগেই বলেছি, রায় কী হবে, সেটি একান্তই আদালতের বিষয়।

বিজ্ঞাপন

তবে এদেশের অধিকাংশ মানুষই মনে করে, শেখ হাসিনার অপরাধ শুধু ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলন চলাকালে গণহত্যা কিংবা মানবতাবিরোধী অপরাধই নয়, ১৫ বছর তার ফ্যাসিবাদী শাসনামলে তিনি বেশ কয়েকটি গণহত্যাসহ যেসব ভয়াবহ অপকর্ম করেছেন এবং দেশের সর্বনাশ ডেকে এনেছেন, এরও বিচার হওয়া উচিত। এই বিচার হলেই দেশে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে এবং তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে, যাতে অন্য কোনো শাসক দেশের এবং জনগণের সর্বনাশের জন্য এমন কুকর্ম আর না করেন। শেখ হাসিনা ১৫ বছরে কী অপকর্ম করেছেন, সেই সম্পর্কে পরে আসছি। আজ ট্রাইব্যুনালে যে রায় হবে, শেখ হাসিনার অপরাধ কী, সে সম্পর্কে কিছু আলোকপাত করা যাক।

Hasina-Rai2

শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধগুলো

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। গত ১৭ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই মামলার বিষয়ে প্রথম শুনানি হয় এবং সেদিই শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। প্রসিকিউশন এ বছরের ১২ মে ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। গত ৩ আগস্ট থেকে ৮ অক্টোবরের মধ্যে ৫৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। বিশিষ্ট কয়েকজন সাক্ষীর মধ্যে ছিলেন আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জুলাই আন্দোলনের শীর্ষ ছাত্রনেতা ও সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমরও প্রসিকিউশনে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন। মামলাটির যুক্তিতর্ক চলে পাঁচ কার্যদিবস এবং তা শেষ হয় ২৩ অক্টোবর। ট্রাইব্যুনাল রায়ের জন্য ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করে।

ফরমাল চার্জের সঙ্গে ১৪ খণ্ডে প্রায় ১০ হাজার পৃষ্ঠার দালিলিক সাক্ষ্য জমা দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে পত্রপত্রিকা, দেশি ও আন্তর্জাতিক অনুসন্ধান প্রতিবেদন, শহীদ এবং আহতদের গেজেট, তালিকা, বই, স্মারকগ্রন্থ, ঘটনাস্থলভিত্তিক আন্দোলনে আহত-নিহতের তালিকা, গাইল ও গ্রাফিতির বই, অভ্যুত্থানকালীন প্রকাশিত পত্রিকার প্রথম পাতা-সংবলিত বই, শহীদ এবং আহতদের চিকিৎসা সনদ, পোস্টমর্টেম ও সুরতহাল প্রতিবেদন, অস্ত্র এবং বুলেট ব্যবহারের হিসাব-সংবলিত জিডি ও প্রতিবেদন, হেলিকপ্টারের ফ্লাইট শিডিউল ইত্যাদি। ৯০টি প্রদর্শনীর মাধ্যমে ওই দালিলিক সাক্ষ্য ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়। ৩৭টি বস্তু প্রদর্শনী, যাতে অসংখ্য বুলেট, পিলেট, রক্তমাখা কাপড়, ভিডিও ওডিও-সংবলিত ডিভিডি, পেনড্রাইভ, বই ইত্যাদি।

মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার তদন্ত প্রতিবেদনের মূল অভিযোগ হচ্ছে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট ৩৬ দিনের আন্দোলন চলাকালে শেখ হাসিনা বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক এবং পদ্ধতিগত দমনপীড়ন চালানোর সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন, যা গণহত্যা, খুন ও ভয়াবহ নির্যাতনের শামিল। প্রতিবেদনে প্রধান যে অভিযোগ আনা হয়, সেগুলো হলোÑসরাসরি আদেশ অর্থাৎ শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের সব বাহিনী, তার দল আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনগুলো বিশেষ করে ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সশস্ত্র ক্যাডারদের বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরাসরি নির্দেশ দেন। গণহত্যা ও নির্যাতনÑহাসিনার নির্দেশের ফলে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত এবং ২৫ হাজারের বেশি আহত, অঙ্গহানি এবং নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছে। সুনির্দিষ্ট ঘটনার মধ্যে পাঁচটির কথা উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকার চানখাঁরপুলে নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের গুলি করে হত্যা, আশুলিয়ায় ছয়জন বিক্ষোভকারীকে গুলি করে হত্যা ও পরে তাদের লাশ পুড়িয়ে দেওয়া, ছাত্রবিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার এবং গুলিবর্ষণের নির্দেশ, হেলিকপ্টার থেকে গুলি ও প্রমাণ ধ্বংসের জন্য লাশ গুম এবং মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলা। তদন্ত প্রতিবেদনের মধ্যে তথ্যসূত্র, জব্দ করা দলিল, আলামত এবং ভুক্তভোগীদের তালিকা। মামলায় সাক্ষ্য দেওয়া উল্লেখযোগ্য সাক্ষীদের মধ্যে রয়েছেন ভুক্তভোগী, চিকিৎসক, সাংবাদিক এবং একজন শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা। ট্রাইব্যুনালে ৫৪ জন সাক্ষীই জবানবন্দি দিয়েছেন। এর মধ্যে পুলিশের সাবেক আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এই মামলায় রাজসাক্ষী বা স্টেট অ্যাপ্রুভার হয়ে আদালতে জবানবন্দি দেন, যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ মোড় ছিল। দুজন ডাক্তার ও একজন নার্স তাদের সাক্ষ্যে জানান, জুলাই আহতদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে তারা বাধার সম্মুখীন হন। আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান তার সাক্ষ্যে একজন সাংবাদিক, লেখক, গবেষক হিসেবে জবানবন্দিতে বলেন, শেখ হাসিনা বিদেশি শক্তির সমর্থনে একটি ‘ফ্যাসিবাদী শাসন’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ অন্য ভুক্তভোগী এবং নিহতদের স্বজনরা ও শিক্ষার্থীরা এ মামলায় সাক্ষ্য দেন। হাসিনার বিরুদ্ধে আদালতের কাছে বড় প্রমাণ হিসেবে প্রসিকিউশন মনে করে টেলিফোন কথোপকথনের রেকর্ড বা অডিও ক্লিপ এবং সাবেক আইজিপির সাক্ষ্য যিনি নিজে দোষ স্বীকার করে বলেছেন, ঘটনার সময় তিনি সরাসরি জড়িত ছিলেন এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সরাসরি নির্দেশ দেন গণহত্যায়। মেডিকেল রিপোর্টও অন্যতম বড় প্রমাণ।

শেখ হাসিনার মামলায় পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে : অভিযোগ নম্বর ১ : ১৪ জুলাই ২০২৪ গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা, রাজাকারের নাতিপুতি’ সম্বোধন করে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। সেই বক্তব্য সমর্থন করে ওবায়দুল কাদেরসহ কয়েকজন নেতাও উসকানিমূলক মন্তব্য করেন। যার ফলে ছাত্ররা আন্দোলনে ফেটে পড়ে, ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের সশস্ত্র কেডাররা আন্দোলনকারীদের ওপর আক্রমণ করে নির্যাতন চালায়।

সাক্ষ্যপ্রমাণ : ১. বিটিভি থেকে প্রাপ্ত (১৪ জুলাই ২০২৪) গণভবনে শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনের ভিডিওর মূল কপি। ২. শেখ হাসিনার বক্তব্য সমর্থন করে ওবায়দুল কাদের এবং আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের উসকানিমূলক বক্তব্যের সম্পর্কিত ভিডিও ও পত্রিকার খবর। ৩. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর আওয়ামী লীগ কর্তৃক পরিচালিত নির্যাতন ও নিপীড়নের নিজস্ব অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। ৪. শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সারা দেশে হত্যা ও নির্যাতনের খবর-সংবলিত পত্রিকা, ভিডিও রিপোর্ট। ৫. শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের উসকানিমূলক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে যেসব ছাত্র দেশব্যাপী আন্দোলন শুরু করে এবং তাদের ওপরে যে নির্যাতন পরিচালিত হয়, সেসব সাক্ষীর মৌখিক সাক্ষ্য।

অভিযোগ নম্বর ২ : কাউন্ট ১ : ১৪ জুলাই, ২০২৪ রাতে তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মাকসুদ কামালের সঙ্গে আসামি শেখ হাসিনা মোবাইল কথোপকথনে তিনি আন্দোলনকারীদের রাজাকার ট্যাগ দিয়ে তাদের ফাঁসি অর্থাৎ হত্যার নির্দেশ দেন। কাউন্ট ২ : ১৮ জুলাই ২০২৪ শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথনে দেখা যায়, আন্দোলন দমনে তিনি লেথাল উইপন অর্থাৎ মারণাস্ত্র ব্যবহার করে ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। ড্রোন ব্যবহার করে ছাত্র-জনতার অবস্থান নির্ণয় করা এবং হেলিকপ্টার থেকে গুলি করার নির্দেশ দেন। সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পুড়িয়ে জনতার ওপর দায় চাপানোর নির্দেশ দেন। কাউন্ট ৩ : শেখ হাসিনা ও হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে দুটি কথোপকথনে দেখা যায়, আন্দোলন দমনে হেলিকপ্টার থেকে আন্দোলনকারীদের ওপর বোম্বিং করা এবং তাদের নামে তালিকা তৈরির মাধ্যমে আটক করে নির্যাতন করা এবং তাদের বিএনপি-জামায়াত ও জঙ্গি ট্যাগ দেওয়ার নির্দেশ দেন।

সাক্ষ্যপ্রমাণ : ১. সরকারি প্রতিষ্ঠান এনটিএমসি থেকে তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্তৃক প্রাপ্ত ভয়েস রেকর্ড। ২. ওই ভয়েস রেকর্ডের ফরেনসিক রিপোর্ট এবং ট্রান্সক্রিপশন, ৩. মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের তালিকা। ৪. আহতদের তালিকা। ৫. বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কর্তৃক প্রকাশিত দ্বিতীয় স্বাধীনতায় শহীদ যারা নামক দশ খণ্ডের শহীদদের তালিকা। ৬. বিভিন্ন হাসপাতাল ও গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ শহীদ এবং আহত ব্যক্তিদের শরীর থেকে প্রাপ্ত বুলেট ও পিলেট। ৭. গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিদের মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ ও ছবি। ৮. গণমাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজ ও ছবি। ৯. অভ্যুত্থান চলাকালে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা। ১০. গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে আহত ও শহীদ পরিবারের সাক্ষাৎকার বা ঘটনা-সংবলিত পত্রপত্রিকা। ১১. জাতিসংঘের কমিশনের প্রতিবেদন, যেখানে ১৪০০ শহীদ হওয়ার ঘটনা ও শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ আছে। ১২. বিবিসির প্রতিবেদন, যেখানে তারা নিজস্ব প্রযুক্তির মাধ্যমে শেখ হাসিনার মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশনা-সম্পর্কিত কণ্ঠের সত্যতা পেয়েছেন এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বলপ্রয়োগের প্রমাণ পেয়েছেন। ১৩. আলজাজিরার প্রতিবেদন। ১৪. হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন। ১৫. ইন্টারন্যাশনাল ট্রুথ অ্যান্ড জাস্টিস প্রোজেক্ট আইটিজেপি কর্তৃক প্রস্তুতকৃত ভিডিও ডকুমেন্টারি। ১৬. আন্দোলনে অন্ধত্ব বরণকারী, পঙ্গুত্ববরণকারী, চিকিৎসাসেবায় বাধাগ্রস্তের শিকার, আহত এবং নিহতদের চিকিৎসা প্রদানকারী চিকিৎসক, শহীদ পরিবার ও আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী আহত ব্যক্তিদের মৌখিক সাক্ষ্য, বিশেষজ্ঞের সাক্ষ্য সহমত ৫৪ জনের জবানবন্দি। ১৭. পুলিশ হেডকোয়ার্টার এবং ডিএমপি কর্তৃক থেকে প্রাপ্ত আন্দোলন চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক তার ওপর পরিচালিত প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ গুলি ব্যবহারের প্রতিবেদন। ১৮. বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত আন্দোলন চলাকালে হেলিকপ্টার ব্যবহারের ফ্লাইট শিডিউল। ১৯. কারফিউ জারির সরকারি আদেশ এবং দেখা মাত্র গুলির নির্দেশ-সংবলিত নিউজ।

অভিযোগ তিন : ১৬ জুলাই ২০২৪ রংপুর রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ।

সাক্ষ্যপ্রমাণ : ১. ১৪ জুলাই ২০২৪ গণভবনে সংবাদ সম্মেলনের ভিডিও, ২. ১৪ জুলাই ২০২৪ রাতে মাকসুদ কামালের সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথনে আন্দোলনকারীদের দিয়ে তাদের ফাঁসি অর্থাৎ হত্যার নির্দেশনা। ৩. পুলিশ কর্তৃক আবু সাঈদকে হত্যার সময় ধারণ করা এনটিভির লাইভ ভিডিও এবং এনটিভি অফিস কর্তৃক ওই ভিডিওর মূল কপি। ৪. আবু সাঈদের পাঁচটি পোস্টমর্টেম রিপোর্ট, যা পুলিশের নির্দেশে চারবার পরিবর্তন করা। ৫. আবু সাঈদের হত্যার ঘটনায় সাজানো মিথ্যা মামলার কাগজপত্র। ৬. আবু সাঈদের পরিবারের সদস্য, আবু সাঈদকে পোস্টমর্টেম করা ডাক্তার, আবু সাঈদকে হত্যার ভিডিও ধারণকারী এনটিভির সাংবাদিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, আন্দোলনের সহযোদ্ধাদের, প্রত্যক্ষদর্শী ও আক্রমণে অংশগ্রহণকারী পুলিশ সদস্যদের মৌখিক সাক্ষ্য।

অভিযোগ চার : ৫ আগস্ট ২০২৪ ঢাকার চানখাঁরপুল এলাকায় ছয়জনকে পুলিশ কর্তৃক গুলি করে হত্যা করা।

সাক্ষ্যপ্রমাণ : ১. ঘটনার সময় চানখাঁরপুল এলাকায় পুলিশ কর্তৃক ছাত্র-জনতার উপর নির্বিচারে গুলি করার ভিডিও আর টিভির অফিস থেকে প্রাপ্ত ভিডিওর মূল কপি। ২. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত শহীদ আনাসকে গুলি করার ভিডিও। ৩. মাকে উদ্দেশ্য করে লেখা শহীদ আনাসের চিঠি। ৪. আনাসকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রিকশায় করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্যের ভিডিও। ৫. ইয়াকুবকে আহত অবস্থায় ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য রিকশায় তুলে দেওয়ার ভিডিও। ৬. ঘটনাস্থলে উপস্থিত এবং ঘটনার বসবাসকারীদের ব্যক্তিগত মোবাইলে ধারণ করা পুলিশ কর্তৃক ছাত্র-জনতার ওপর গুলির দৃশ্যের ভিডিও এবং আহতদের ধরাধরি করে কোথাও তুলে দেওয়ার ভিন্ন দৃশ্য-সংবলিত ভিডিও। ৭. বিটিভি কর্তৃক প্রকাশিত জুলাই অনির্বাণ নামক ডকুমেন্টারি। ৮. শহীদ পরিবারের সদস্য, ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্য, যাদের নির্দেশ দেওয়ার পরও গুলি করেনি এবং ওই পুলিশ সদস্য ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের মৌখিক সাক্ষ্য।

অভিযোগ ৫ : ৫ আগস্ট ২০২৪ আশুলিয়া থানা এলাকায় পুলিশ ছয়জনকে হত্যা করে তাদের লাশ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া।

সাক্ষ্যপ্রমাণ : ১. মোবাইলে ধারণ করা আশুলিয়া থানা-পুলিশ কর্তৃক মারণাস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার উপরে গুলিবর্ষণের ভিডিও। ২. হত্যার পর ছয়টি লাশ একটি প্যাডেল ভ্যানে ছুড়ে মারার দৃশ্য এবং চাদর দিয়ে ঢেকে দেওয়ার ভিডিও দৃশ্য। ৩. পুলিশ ভ্যানে লাশগুলো পুড়ে যাওয়ার পর লাশের ছবি। ৪. নিহতদের পরিবারের সদস্যদের মৌখিক সাক্ষ্য এবং তাদের উপস্থাপিত ছবি ও ভিডিও দৃশ্য। ৫. ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের মৌখিক সাক্ষ্য।

শেখ হাসিনার ১৫ বছরের অপশাসন

শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে (২০০৯-২০২৪) দুর্নীতি, অর্থপাচার, গণতন্ত্র ধ্বংস, নির্বাচনব্যবস্থা নস্যাৎ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক কলঙ্কিত অধ্যায়ের সৃষ্টি হয়েছে।

হাসিনা সরকারের বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম এবং ভিন্নমত দমনপীড়নের মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ নজির সৃষ্টি হয়েছে। গুম কমিশনে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬৭৬টি গুমের অভিযোগ জমা পড়েছে। কমিশন মনে করে, ওই শাসনামলে গুমের সংখ্যা ৩ হাজার ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে। এখনো ২৭ শতাংশ অর্থাৎ ২০৪ জন গুম হওয়া মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। গুমের ঘটনার সঙ্গে শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের র‌্যাবসহ বিভিন্ন বাহিনীর বেশ কিছু কর্মকর্তা সরাসরি জড়িত। অনেককেই বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়েছে। শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশ ও ইন্ধনে ওই সময়ে বেশ কয়েকটি গণহত্যা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিডিআর বিদ্রোহের নামে পিলখানায় ৫৭ জন দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তাকে নৃশংসভাবে হত্যা, হেফাজতের আন্দোলন চলাকালে শাপলা চত্বরে ৩০০ আলেম হত্যা, সাঈদীর রায়ের পর বিক্ষোভকারী শতাধিক লোককে হত্যা, মোদিবিরোধী বিক্ষোভে হত্যাকাণ্ড এবং সর্বশেষ জুলাই ছাত্র গণঅভ্যুত্থানে ১৪০০ মানুষকে হত্যা, যা জাতিসংঘ রিপোর্টে এসেছে।

ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার যে শ্বেতপত্র কমিটি গঠন করেছে, তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী শেখ হাসিনার ১৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৪০ বিলিয়ন ডলার বা ২ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। এ সময় দুর্নীতি হয়েছে ২৮টি উপায়ে। মেগা প্রকল্পগুলোয় বড় ধরনের দুর্নীতি হয়েছে, যার ফলে প্রকল্পের খরচ ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) মতে, সেবা খাতে এ সময় ঘুস হিসেবে প্রায় ১ দশমিক ৪৬ লাখ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। পদ্মা সেতু প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প দুর্নীতির আলোচিত ঘটনা।

শেখ হাসিনার আমলে বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, মিডিয়া এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। বিরোধীদের ওপর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা হয়েছে লাখ লাখ। তাদের হয়রানি এবং গণগ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ব্যাংক সেক্টরের কেলেঙ্কারি শেখ হাসিনার আমলের আলোচিত ঘটনা। ২০০৯-২০২৪ সময় পর্যন্ত সিপিডির হিসাবে ২৪টি বড় ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনায় ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ বা লুটপাট হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেঙ্কারি। এতে হলমার্ক গ্রুপ ২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির (২০০৯-২০১৩) ঘটনায় ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা লোপাট হয়। ফারমার্স ব্যাংক বা পদ্মা ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনায় ৫০০ কোটি টাকা লোপাট হয়। জনতা ব্যাংকের থার্মেক্স গ্রুপের কেলেঙ্কারির ঘটনায় প্রায় ৮১৬ কোটি টাকা ঋণ অনিয়ম ও আত্মসাৎ হয়। এস আলম গ্রুপ একাই ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে আত্মসাৎ করেছে, যার বেশির ভাগই শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা এবং তাদের আত্মীয়স্বজনের নামে ভাগবাটোয়ারা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হাসিনা আমলের এক কুখ্যাত ঘটনা। ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে হ্যাকাররা প্রায় ৮১০ কোটি টাকা চুরি করে নিয়ে গেছে। এছাড়া পি কে হালদার কেলেঙ্কারি, বিসমিল্লাহ গ্রুপ কেলেঙ্কারি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এসব কেলেঙ্কারির কারণে খেলাপি ঋণ বহু গুণ বেড়ে যায়, যার পরিমাণ প্রায় ২ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছায়।

শেখ হাসিনার আমলে (২০০৯-২০২৪) শেয়ারবাজারে দুটি বড় কেলেঙ্কারির ঘটনায় হাজার হাজার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে গেছে। ২০১০-১১ সালে ছিল শেয়ারবাজারের মহাধস। ইব্রাহিম খালেদের তদন্তে এসেছে শেয়ারবাজার ধসের ফলে ২০১১ সালে বাজার মূলধন থেকে প্রায় ২৭ বিলিয়ন ডলার বা ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়। এই কেলেঙ্কারির নায়ক ছিলেন সালমান এফ রহমান, লোটাস কামাল ও আবুল খায়ের হিরু, যারা হাসিনার ঘনিষ্ঠ লোক। তেমনি ২০২১ সালেও শেয়ারবাজারে বড় ধস নামে। কারসাজির মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করা হয়। তেমনি শেখ হাসিনার প্রথম আমলে (১৯৯৬-২০০১) সালেও শেয়ারবাজারে বিশাল কেলেঙ্কারি হয়।

শেখ হাসিনা ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে তিনটি ভুয়া নির্বাচন করে ক্ষমতা কবজা করে রাখেন। এই নির্বাচনগুলো বিনাভোট, রাতের ভোট ও ডামি নির্বাচন নামে চিহ্নিত হয়েছে। এর মাধ্যমে শেখ হাসিনা দেশের নির্বাচনি ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেন।

এছাড়া ২০০৮ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার হলফনামাটি ছিল মিথ্যা ও জালিয়াতিপূর্ণ। দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করে এই জালিয়াতি উদঘাটন করেছে। আইন অনুযায়ী শেখ হাসিনা সংসদ সদস্যই হতে পারেননি। অথচ তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়ে সরকার পরিচালনা করেছেন এবং পরে আরো তিনটি ভুয়া নির্বাচন করে ক্ষমতা কবজা করে রাখেন। অর্থাৎ তার সংসদ সদস্যপদ এবং প্রধানমন্ত্রীর পদ ও সরকারÑসবই ছিল অবৈধ। তার তৎকালীন নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমদ সিদ্দিকসহ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের নিয়ে শেখ হাসিনা যে টিম গঠন করেছিলেন, তারা সবাই ছিলেন দুর্নীতিগ্রস্ত এবং অপকর্মের হোতা। শেখ হাসিনার সঙ্গে তাদেরও বিচার করে শাস্তি দেওয়া হবে, দেশের মানুষ তা প্রত্যাশা করে।

লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, আমার দেশ

abdal62@mail.com

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

আমার দেশআদালতফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা
সর্বশেষ
১

যে কারণে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন না হাসিনা

২

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ককটেল বিস্ফোরণ

৩

আ.লীগের নৈরাজ্য ঠেকাতে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে বিএনপির অবস্থান

৪

আজকের রায় ‘গুরুত্বপূর্ণ’, বললেন বাংলাদেশের সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত

৫

হাসিনার রায়ের আগে ট্রাইব্যুনাল চত্বরে সাদিক মুগ্ধ হাদি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত

আধুনিক ঢাকার রূপকার জি এ মাদানি

আজকের গুলশান, বনানীর বাসিন্দাদের মধ্যে খুব কম লোকই জানেন এই প্লটগুলোর আদি মালিকের অনেককেই জোর করে প্লটগুলো গছিয়ে দিয়েছিলেন গুলাম আহমেদ মাদানি। প্রাক্তন এই আইসিএস অফিসার ছিলেন ১৯৬০-এর দশকে ডিআইটির (ঢাকা ইম্প্রুভমেন্ট ট্রাস্ট) প্রথম চেয়ারম্যান, যিনি শুধু মাদানি নামেই বহুল পরিচিত।

৪ ঘণ্টা আগে

ইহুদিবাদ ও পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে মামদানির লড়াই

যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের পরাজয় ডেমোক্রেটিক পার্টিকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ও নেতৃত্ব থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। হোয়াইট হাউসের পাশাপাশি কংগ্রেসের দুই কক্ষের নিয়ন্ত্রণও হারিয়েছেন ডেমোক্র্যাটরা।

৪ ঘণ্টা আগে

আমাদের রাজনীতির মুকুটহীন সম্রাট ভাসানী

আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ, তৎকালীন পাকিস্তান কিংবা এই উপমহাদেশের সামগ্রিক রাজনীতি ও আন্দোলন-সংগ্রামের এক অবিসংবাদিত অগ্নিপুরুষ ছিলেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। তার জীবনটাই ছিল একটা সামগ্রিক আন্দোলনের ধারাবাহিকতা।

৪ ঘণ্টা আগে

বাংলাদেশ ঘিরে দুই পরাশক্তির দ্বন্দ্ব

সৃষ্টির শুরু থেকেই জীবজগতে ছোট-বড় প্রত্যেক প্রাণীর মধ্যে প্রাকৃতিক সম্পদ দখলের অলিখিত লড়াই চলছে। বিরামহীন এই লড়াইয়ে সবল প্রাণীরা অপেক্ষাকৃত দুর্বলদের হারিয়ে ক্রমে এই গ্রহে নিজেদের দখল নিশ্চিত করেছে।

১ দিন আগে
আধুনিক ঢাকার রূপকার জি এ মাদানি

আধুনিক ঢাকার রূপকার জি এ মাদানি

ইহুদিবাদ ও পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে মামদানির লড়াই

ইহুদিবাদ ও পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে মামদানির লড়াই

আমাদের রাজনীতির মুকুটহীন সম্রাট ভাসানী

আমাদের রাজনীতির মুকুটহীন সম্রাট ভাসানী

হাসিনার সব অপরাধেরই বিচার হওয়া উচিত

হাসিনার সব অপরাধেরই বিচার হওয়া উচিত