মন্তব্য প্রতিবেদন

বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণদের জাতির জন্য বার্তা

প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮: ২২

বাংলাদেশের সুশীলরা সব হাহাকার করে সমস্বরে বলছেন, ‘বাংলাদেশ গেছে, এই পোড়া দেশে আর থাকা যাবে না।’ এটা তাদের কল্পনারও অতীত ছিল যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল ভিপি এবং জিএসসহ ২৮টি পদের মধ্যে ২৩টিতে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জিততে পারে।

শুধু তা-ই নয়, সবাইকে অবাক করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩টি হলের মধ্যে ভিপি পদে ১০টি এবং জিএস পদে ৯টি হলেও শিবির জয়লাভ করেছে। ছাত্রদল শুধু জগন্নাথ হলে একটি ভিপি পদ পেয়েছে। এটাও এক অত্যাশ্চর্য ব্যতিক্রম। এর আগে ছাত্রলীগ এবং বাম সমর্থিতরা ছাড়া আর কেউ জগন্নাথ হলে কখনো জিততে পারেনি।

বিজ্ঞাপন

এবার সেই হলের ছাত্ররা ডাকসুর ভিপি পদে ছাত্রদলকে এবং জিএস পদে ছাত্র ইউনিয়নের মেঘমল্লার বসুকে ভোট দিয়ে দেশের নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় যথেষ্ট মুনশিয়ানার পরিচয় দিয়েছে। ভোটের এ ধরনের কৌশলগত প্রয়োগ জগন্নাথ হলের ছাত্ররা কি নিজেদের বুদ্ধিতে করেছে নাকি সীমান্তের ওপার থেকে নির্দেশিত হয়েছে সেটা আমার জানা নেই।

হল এবং ডাকসু মিলিয়ে সার্বিক ফলাফলের বিবেচনায় শিবির প্রশ্নাতীতভাবে প্রথম, বাগছাস দ্বিতীয় এবং ছাত্রদল তৃতীয় স্থান লাভ করেছে। এই সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে শিবির ট্যাগ দিয়ে ছাত্রদের টর্চার করে হলের ছাদ থেকে ফেলে নিশ্চিন্তে হত্যা করা যেত, তথাকথিত প্রগতিশীলদের ভয়ে ধর্মপ্রাণ তরুণদের ফজরের নামাজ লুকিয়ে পড়তে হতো এবং পবিত্র রমজান মাসে সবাই মিলে ইফতার করার ওপর আওয়ামী ভিসিদের নিষেধাজ্ঞা ছিল।

ইস্তাম্বুলে নির্বাসন থেকে আমি একবার সাবেক ভিসি আখতারুজ্জামানকে ফোনে এসব বিষয়ে প্রতিবাদ জানালে তিনি আমাকে বেশ রূঢ়ভাবে বলেছিলেন, আমার নাকি চরিত্রের কোনো সংশোধন হয়নি। হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর আখতারুজ্জামানের কোনো সংশোধন হয়েছে কি না সেটা আমিও এখন পর্যন্ত জানতে পারিনি। তার সঙ্গে কখনো দেখা হলে জিজ্ঞেস করে নেব। সুশীলদের সর্বাঙ্গে ডাকসু নির্বাচনের ভয়াবহ আঘাতের ক্ষত না শুকাতেই জাকসু থেকে তাদের ওপর আবার মর্মান্তিক আঘাত এসেছে। বেচারাদের ওপর জুলুমটা বড় বেশি হয়ে যাচ্ছে।

জাকসু নির্বাচনের আগের সন্ধ্যায় এক তরুণ, যার সঙ্গে ‘প্রগতিশীলদের’ বেশ মেলামেশা আছে, সে আমাকে জানালো যে, ডাকসুর ফল প্রকাশের পর থেকেই নাকি অনেক সুশীলের বাড়িতে চুলা জ্বলেনি। আহার-নিদ্রা ত্যাগ করে তারা সব শয্যাশায়ী। আমি ভরসা দিয়ে সেই তরুণকে বলেছিলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তো শুনেছি ভারতপন্থি বামদের অবস্থান বেশ শক্তিশালী। সেখানে ড. আনোয়ার হোসেনের মতো চিহ্নিত ইসলামবিদ্বেষী ব্যক্তি ভিসি ছিলেন। কাজেই একটা দিন ধৈর্য ধরলেই তো সুশীলদের জন্য খানিকটা সুসংবাদ আসা উচিত। আমাকে অবাক করে দিয়ে সেই তরুণ বলল, সেখানেও ‘চেতনাজীবীদের’ অবস্থা খুব ভালো মনে হচ্ছে না।

আমি সেই তরুণের কথায় তেমন একটা বিশ্বাস করিনি। চিরদিন জাহাঙ্গীরনগরে সব ডাকসাইটে সুশীল অধ্যাপকদের বিপুল জনপ্রিয়তার গল্প শুনে এসেছি। সুতরাং, সেখানে বাম, ছাত্রদল এবং বাগছাসের পরে একেবারে শেষে শিবিরের অবস্থান হওয়ার কথা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখলাম জাকসুতেও শিবিরের জয়জয়কার। জিএসসহ ছাত্র সংসদে ২০টি পদে জিতে শিবির চমক দেখিয়েছে। শুধু ভিপি পদে জুলাই বিপ্লবের এক লড়াকু সমন্বয়ক স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়েও জয়লাভ করেছে। তাকে আমার বিশেষ অভিনন্দন।

এই রায়ের মধ্য দিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা জুলাই আদর্শের প্রতি তাদের অবিচল শ্রদ্ধার স্বাক্ষর রেখেছেন। অবশ্য জাকসু নির্বাচন নিয়ে দলবাজ শিক্ষকদের সীমাহীন অব্যবস্থাপনাও ছিল। মাত্র আট হাজার ভোট গুনতে তারা পাক্কা দুই দিন লাগিয়ে দিয়েছিলেন। সবার আশা ছিল, ডাকসুর পরে যেহেতু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন হচ্ছে সে ক্ষেত্রে ওখানে সম্পূর্ণ ভুলত্রুটিমুক্ত একটি প্রশংসনীয় নির্বাচন হবে। কিন্তু বাস্তবে উল্টোটা ঘটেছে। নির্বাচন আয়োজনে চরম ব্যর্থতার মধ্যে একজন অধ্যাপিকার দুঃখজনক মৃত্যুও আমাদের দেখতে হয়েছে। মহান আল্লাহতায়ালা তার রুহের মাগফিরাত করুন। যাই হোক, আমরা এবার রাকসু এবং চাকসু থেকে বার্তার জন্য অপেক্ষা করব। বাংলাদেশের তরুণরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেছে।

দেশের এসব ভবিষ্যৎ কর্ণধার কিন্তু প্রকৃতপক্ষে জুলাই বিপ্লবেই জাতির সামনে নতুন রাজনৈতিক বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছিল। ‘তুমি কে, আমি কে, রাজাকার রাজাকার, কে বলেছে, কে বলেছে, স্বৈরাচার, স্বৈরাচার’ স্লোগান দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা অর্ধশতাব্দী ধরে চলে আসা বিভাজনের রাজনীতিকে যে বিদায় করেছিল, এটা বুঝতে না পারা রাজনৈতিক পণ্ডিতদের এক বিশাল ব্যর্থতা।

বালিতে মাথা গুঁজে থাকা মহাজ্ঞানী সুশীল সমাজ এবং দেশের বড় বড় দলের নীতিনির্ধারকরা তরুণদের ভাষা বুঝতে না পেরে এখন গভীর গাড্ডায় পড়েছেন। বিশেষ করে, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আগামীতে সম্ভাব্য সরকারি দল বিএনপির জন্য কার্যকর রাজনৈতিক বয়ান নির্মাণ সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলছেন, গত বছর ৫ আগস্টের পর থেকে বিএনপি সচেতনভাবেই আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক করায়ত্ত করার লক্ষ্যে বাঙালি জাতীয়তাবাদকে ব্যবহার করতে চেয়েছে। এই কৌশল যে একেবারে ব্যর্থ হয়েছে তা বলা যাবে না। না হলে জগন্নাথ হলে ছাত্রদল প্রথমবারের মতো বিজয় অর্জন করতে পারত না।

তবে একটি হলে সেই সমর্থন অর্জন করতে গিয়ে বৃহত্তর জনসমর্থনের বিবেচনায় তাদের কতটা বিসর্জন দিতে হয়েছে, তার খানিকটা ধারণা আমরা ডাকসু নির্বাচনের সার্বিক ফলাফল থেকে হয়তো পেতে পারি। দলটি নিশ্চয়ই তাদের কৌশল পুনর্মূল্যায়ন করবে। আমি অবশ্য মনে করি, বিএনপি একেবারে হঠাৎ করেই শহীদ জিয়া এবং খালেদা জিয়ার অনুসৃত ইসলামি আদর্শের মধ্যপন্থার রাজনীতি থেকে বামের দিকে সরে যায়নি। সরাসরি বাঙালি জাতীয়তাবাদকে ধারণ না করলেও ইসলামপন্থি ট্যাগ থেকে সচেতনভাবে নিজেদের বিযুক্ত করে নেওয়ার প্রক্রিয়া বর্তমান বিএনপি ২০১৮ সালের মধ্যরাতের নির্বাচনের সময় থেকেই শুরু করেছিল।

২০ দল ভেঙে দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর জিয়াবিদ্বেষী ড. কামাল হোসেনকে নির্বাচনি জোটে নেতা মেনে বিএনপি যে নতুন মতাদর্শে পথ চলতে শুরু করেছিল, সেখানে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে দলটির দ্বন্দ্ব অনিবার্য ছিল। ২০১৮ সালের অনর্থক নির্বাচনি তামাশায় জামায়াতে ইসলামী নির্বোধের মতো বিএনপির সঙ্গে আসন নিয়ে দরকষাকষি করায় নির্বাচন শেষ হওয়া মাত্র দুই দল একে অপরকে শত্রু জ্ঞান করতে থাকে। ধানের শীষ মার্কা নিয়ে নির্বাচন করে জামায়াতে ইসলামী কী অর্জন করতে চেয়েছিল, সেটা দলটির নীতিনির্ধারকরাই ভালো জানেন।

সেই সময় আমি বিএনপির সঙ্গে জামায়াতকেও নির্বাচন বর্জন করার পরামর্শ দিয়েছিলাম। আমার সেই পরামর্শ উভয় দল উড়িয়ে দিয়েছিল। নির্বাসনে থাকাকালেই আমি জানতাম যে বিএনপির নীতিনির্ধারকরা জামায়াতকে এড়িয়ে চলছেন। দুই বিরোধী দলের সাধারণ শত্রু, ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একই সময় লড়াই করলেও ২০১৮ সালের পর জামায়াতের সঙ্গে কোনো ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে বিএনপি অনেকটা প্রকাশ্যেই অনীহা দেখিয়েছে। ২০২৩ সালে সরকারবিরোধী আন্দোলন তীব্র রূপ ধারণ করলেও প্রধানত ছাত্রদলের আপত্তির কারণে অনেক চেষ্টা করেও শিবিরকে সঙ্গে নিয়ে ছাত্রলীগের মোকাবিলায় সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য গঠন করা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন সূত্রে জেনেছিলাম, ছাত্রদলের নেতারা মনে করেছিলেন তারা সাংগঠনিকভাবে অনেক বৃহৎ ও শক্তিশালী হওয়ার ফলে ‘মৌলবাদী’ শিবিরকে নিয়ে ঐক্যে তাদের তেমন কোনো ফায়দা নেই।

তাছাড়া বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতিতে শিবির ফোবিয়া বহুদিন ধরে চলমান। ছাত্রদলের সঙ্গে শিবিরের কোনোকালেই তেমন প্রীতির সম্পর্ক ছিল না। ২০১০ সালে তৎকালীন হাসিনা সরকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন ঘোষণা দিয়ে শিবির নিধন কর্মসূচি চালাচ্ছিল, সেই সময় আমি ‘ওরা মানুষ নয় ওরা শিবির’ শিরোনামে মন্তব্য প্রতিবেদন লিখেছিলাম। দলটির বর্তমানের তরুণ ছাত্র নেতৃত্ব সেই সময় হয় বালক অথবা কিশোর ছিল। তাদের মধ্যে অনেকেরই হয়তো লেখাটি পড়ার সুযোগ হয়নি। প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় সেই লেখাটির একটি অংশ এখানে উদ্ধৃত করছি :

“স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর শিবির উৎখাতের ঘোষণা সংবিধান পরিপন্থী ও ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থার জ্বলন্ত প্রমাণ। রাষ্ট্রযন্ত্রের এ জাতীয় কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যাওয়ার সুযোগ থাকলেও ‘স্বাধীন আদালতে’ ন্যায়বিচার কতটা পাওয়া যায় তার অতি সাম্প্রতিক বিরূপ অভিজ্ঞতা আমারই রয়েছে। সে সম্পর্কে গতকালের আমার দেশ পত্রিকায় একটি সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। সংবিধান, আইন ও আদালতের কোনো তোয়াক্কা বর্তমান সরকার যে করে না তা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আরও একটি বক্তব্যে প্রমাণিত হয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় এক সমাবেশে তিনি বলেছেন, ‘রাজশাহীতে আমাদের এক ভাইকে খুন করেছে। অনেকের হাত-পায়ের রগ কেটে দিয়েছে। শিবির সারা দেশে ছাত্রলীগের ভাইদের হত্যার ষড়যন্ত্র করছে।

তাদের প্রতিহত করতে হবে। স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবিরকে আর ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ জার্মানির এডলফ হিটলার যখন সেদেশে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নির্মূলের জন্য কমিউনিস্টবিরোধী এবং ইহুদিদের বিরুদ্ধে জাতিগত শুদ্ধি অভিযান (Ethnic Cleansing) চালিয়েছিলেন, ইতিহাসের পাতা ঘাঁটলে তার সাঙ্গপাঙ্গদের মুখে অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের মতোই ভাষা পাওয়া যাবে” (আমার দেশ : ১৬-২-২০১০)। এর কয়েক মাসের মধ্যেই জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের গ্রেপ্তার করে তথাকথিত আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছিল। সেই সাহারা খাতুন আজ আর ইহজগতে নেই, তার দানব নেত্রী দিল্লিতে প্রভুর কাছে পালিয়েছেন এবং ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে শিবির ডাকসু নির্বাচনে একচ্ছত্র বিজয় লাভ করেছে। এটাই বোধহয় ইতিহাসের অমোঘ বিচার।

বাংলাদেশের দুই প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ ছাত্রছাত্রীরা ফ্যাসিবাদ এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে তাদের পরিষ্কার বার্তা জানিয়ে দিয়েছে। অতি ব্যবহারে জীর্ণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বয়ান তারা বিপুল সংখ্যাধিক্যে প্রত্যাখ্যান করেছে। এই বয়ান ব্যবহার করেই দিল্লি বাংলাদেশকে এক অঘোষিত উপনিবেশে পরিণত করেছিল এবং পুতুল সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের ওপর অমানবিক নিপীড়ন চালিয়েছে।

সেই দিল্লি থেকেই শেখ হাসিনা ভারতীয় ডিপ স্টেটের সহায়তাক্রমে এখনো যাবতীয় বাংলাদেশবিরোধী অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন। এমতাবস্থায় যে কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা গোষ্ঠী বিশ্ববিদ্যালয়ের আজকের তরুণদের শেখ হাসিনার বয়ান ব্যবহার করে আকৃষ্ট করতে চাইলে তাতে সফল হওয়া কঠিন। রাজনৈতিক বয়ানে নতুনত্ব লাগবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ফলাফল জাতীয় নির্বাচনে আদৌ কোনো প্রভাব ফেলবে কি না, এ নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে যথেষ্ট মতবিরোধ রয়েছে। আমি মনে করি, এ বিষয়ে মন্তব্য করার জন্য আমাদের আরো কিছুদিন জনমত পর্যবেক্ষণ করা উচিত।

আমার প্রত্যাশা, আওয়ামী ফ্যাসিবাদ এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদকে প্রতিরোধ করার প্রশ্নে জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হবে। অন্তত এই দুটি বিষয়ে তারা কোনো আপস করবেন না। তাদের প্রতি আমার আহ্বান থাকবে যে, ক্ষমতার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে গিয়ে এমন তিক্ত রেষারেষি তৈরি করবেন না যাতে কোনো ভারতীয় সেবাদাস অথবা ফ্যাসিস্ট শক্তির রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ সৃষ্টি হয়। যারাই মহান জুলাই বিপ্লবের বৃহত্তর ঐক্য এবং জাতীয়তাবাদী আদর্শের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন, আত্মপরিচয়ে বলীয়ান বাংলাদেশের জেগে ওঠা তরুণরা তাদের প্রতিহত করবে বলেই আমি বিশ্বাস করি। ডাকসু এবং জাকসুর বার্তা আমার সেই বিশ্বাসকে দৃঢ়তর করেছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত