জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকায় অনেক দুস্থ, অসচ্ছল ও অসহায় মানুষ বাস করে। তাদের মধ্যে আছে রিকশাচালক, ফুল বিক্রেতা, ভবঘুরে, অসহায় নারী ও পথশিশুরা। ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আমার দেশ পাঠক মেলা’র সদস্যরা ছিন্নমূল এসব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এক মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন ৬ মার্চ। পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের পাশে ছিন্নমূল মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণ করা হয়েছে।
ইফতার পেয়ে অসহায় শিশুদের চোখে আনন্দের ঝলক ফুটে ওঠে। নারীদের মধ্যে অনেকে আবেগি কণ্ঠে বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ নিজেও ভালো কিছু খেতে পারি না, বাচ্চাদেরও খাওয়াতে পারি না। আপনারা ছাত্ররা সামর্থ্য অনুযায়ী আমাদের সহায়তা করেছেন, এই আমাদের জন্য অনেক বেশি পাওয়া।’
ইফতার বিতরণের সময় তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন ও প্রত্যেকের অনুমতি নিয়ে ছবি তোলা হয়। পাশাপাশি তাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার প্রতিও গুরুত্ব দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, ছবি তোলার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল—মানুষকে ভালো কাজে উৎসাহিত করা, অনুপ্রেরণা দেওয়া।
ইফতার বিলি নিয়ে পাঠকমেলার কার্যকরী সদস্য আকরাম খান বলেন, ‘রমজান মানবতা, সহমর্মিতা ও সমাজসেবার মাস। ইফতার বিতরণ কার্যক্রম এমনই একটি মহতী উদ্যোগ, যা রমজানের প্রকৃত শিক্ষাকে জীবন্ত করে তোলে। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা মানবতার বার্তা ছড়িয়ে দিই। প্রতিটি ইফতার প্যাকেট শুধু ক্ষুধা নিবারণের মাধ্যমই নয়, একটি আশার আলো, ভালোবাসার নিদর্শন ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধের প্রতীক।’
আরেক কার্যকরী সদস্য ফাহিম হাসনাত বলেন, ‘রমজান মাসে দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষদের সহায়তা করার মাধ্যমে আত্মিক প্রশান্তি লাভ করা যায়। আমার বিশ্বাস, পরিসর ছোট হলেও আমাদের দেখে আরো অনেক মানুষ উৎসাহিত হয়ে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াবেন।’ আলামিন হোসেন বলেন, ‘রমজান মাস মুসলিম বিশ্বের জন্য বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ, পবিত্র সময়। রোজা একদিকে যেমন আমাদের আত্মসংযম ও ধৈর্যশীলতা শেখায়, তেমনি অন্যদিকে মনে গরিব ও অসহায় মানুষের প্রতি সহানুভূতির অনুভূতি জাগিয়ে তোলে।
ইফতার বিতরণ কর্মসূচি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আমার দেশ পাঠকমেলা’র সামাজসেবামূলক কার্যক্রমের একটি অংশ । ভবিষ্যতে যেন আরো ব্যাপক পরিসরে সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজে অংশগ্রহণ এবং অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষদের পাশে দাঁড়ানো যায়, সেজন্য ‘আমার দেশ পাঠক মেলা’র সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন।

