আন্দালিব রহমান
মানুষের জন্য কাজ করার শুরু তার কোভিড মহামারির সময়। তত দিনে সিফাত শাহরিয়ার কিয়ামের এসএসসি পরীক্ষা শেষ। তিনি খেয়াল করলেন, এই মহামারিতে দিন এনে দিন খাওয়া মানুষের মধ্যে ভোগান্তি নেমে এসেছে এবং চারদিকে মহামারিতে আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি ভাবতে শুরু করলেন, কীভাবে অভাবী মানুষগুলোকে সাহায্য করা যায়। কিন্তু মা-বাবা তাকে বাইরে যেতে দিতে চাইতেন না মহামারির প্রকোপের ভয়ে। অনেক সময় বকাবকিও করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিয়ামেরই জয় হয়েছে। সহপাঠীদের একত্র করলেন তিনি। নিজের পরিবার ও বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে অল্পস্বল্প সাহায্য সংগ্রহ করতে লাগলেন। সেই টাকায় ৩০টি পরিবারকে চাল, ডাল ও আলু কিনে দিলেন তারা। তবে কিয়ামের চোখে পড়ল আশপাশে আরো অনেক গরিব মানুষ রয়ে গেছেন, তাদেরও সাহায্য প্রয়োজন। সরকার বিনা মূল্যে ত্রাণ বিলি করলেও অনেকে ঠিকমতো পাচ্ছেন না। এই অবস্থা দেখে তিনি ছুটে গেলেন চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমানের কাছে। সহশিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত থেকে ও বিদ্যালয়ভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সাফল্য লাভের ফলে তার সঙ্গে কিয়ামের বেশ সখ্য গড়ে উঠেছিল।
এরপর তিনি তার কাছে সমস্যাগুলো জেনে সাহায্য করতে হবে, এমন পরিবারগুলোর তালিকা চাইলেন। তারপর তাদের সাহায্য দেওয়া হলো। এ ছাড়া তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে কিয়াম তার বন্ধুদের নিয়ে একটি আইটি টিম গড়ে তুললেন, যারা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমানের প্রশাসনকে সরাসরি সাহায্য করেছেন। স্বাস্থ্যসুরক্ষার দিক থেকে পরিবারের বাধা থাকলেও এসব কার্যক্রমের পাশাপাশি কিয়াম মাস্ক, স্যানিটাইজার বিলি ও সচেতনতামূলক কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার শখের সহশিক্ষা কার্যক্রম আজ আমাকে একজন সামাজিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছে, যার ফলে সমাজের অসহায় মানুষগুলোর বিপদে-আপদে সহযোগিতা করা সম্ভব হয়।’
পাঠকমেলার এই সদস্যের নিজের একটি সমাজসেবামূলক সংগঠন আছে—‘ভাইব্রেন্ট ভিশনারিজ নেটওয়ার্ক’। গত রমজানের শেষের দিকে কিয়াম অসহায় মানুষদের ঈদ উপহার বিলি করবেন। তিনি মাত্র ২০ টাকা চাঁদা ধার্য করেন। এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনেকেই এগিয়ে আসেন এবং এর ফলে দরিদ্র মানুষদের ঈদ উপহার বিতরণ ও গরিব শিশুদের মধ্যে অগ্রিম ঈদ সালামি বিলি করা সম্ভব হয়। তিনি শিশুদের অধিকার রক্ষা, শীতবস্ত্র বিতরণ এবং তাপপ্রবাহের সময় ট্রাফিক পুলিশ ও দিনমজুরদের মধ্যে বিশুদ্ধ খাবার পানি, স্যালাইন ও শরবত বিলি করেছেন। ব্র্যাকের ‘আমরা নতুন নেটওয়ার্ক’-এর মাধ্যমে নদীভাঙনের ফলে বাস্তুচ্যুত নারীদের ক্ষমতায়ন ও পরিবেশের উন্নয়নের জন্য তিনি গড়ে তুলেছেন ‘প্রজেক্ট উদ্ভাসিনী’। এই প্রকল্পের আওতায় ফেলে দেওয়া জিন্স, কাপড়, প্লাস্টিক ইত্যাদি রিসাইকেল করার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের শৌখিন পণ্য, জুয়েলারি বক্স ও হোম ডেকোর তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। অনগ্রসর নারীদের হাতে তৈরি এসব পরিবেশবান্ধব পণ্যসামগ্রী বিক্রির ফলে তারা যেমন উপার্জনের সুযোগ পাচ্ছেন, তেমনি প্লাস্টিকের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ কমছে এবং তারা পরিবেশ সংরক্ষণে ভূমিকা রাখছেন। এ ছাড়া তারা নিজেরাও পরিবেশ সচেতন হচ্ছেন।
এর আগে শীতের সময়ে বস্তির নারীরা তাকে পিঠা তৈরির কথা বলেছিলেন। কিয়াম ও তার দল ব্যক্তিগত অর্থ প্রদান করেছেন। ফলে উৎসবমুখর পরিবেশে পিঠাগুলো তৈরি করেছেন তারা। এই পিঠাগুলো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টল সাজিয়ে বিক্রি করা হয়েছে। এর ফলে নারীদের মধ্যে নতুন আশা ও স্বপ্নের শুরু হয়েছে। কিয়ামের এই উদ্যোগগুলো ভদ্রা বস্তির মানুষগুলোর জীবনমানে বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। তিনি বলেছেন, ‘বস্তির মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে আমার এই কার্যক্রম চলবে এবং আমি আরো বড় উদ্যোগ গ্রহণ করতে চাই।’ ভদ্রা বস্তির মানুষরা তাদের প্রেরণার উৎস বলে মনে করেন তাকে।
এবারের ঈদে রাজশাহী মহানগরের ভদ্রা বস্তিতে ঈদ উপহার বিলি করেছেন সিফাত শাহরিয়ার কিয়াম। দুই বছর আগে এই বস্তিতে তিনি এসেছেন। তার পর থেকে তাদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য কাজ করে চলেছেন। এবারের ঈদেও তিনি ২০ টাকার সাহায্য প্রকল্পটি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। তাতে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রীরাও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আবারও প্রমাণিত হয়েছে ছোট একটি উদ্যোগও অনেক বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
মানুষের জন্য কাজ করার শুরু তার কোভিড মহামারির সময়। তত দিনে সিফাত শাহরিয়ার কিয়ামের এসএসসি পরীক্ষা শেষ। তিনি খেয়াল করলেন, এই মহামারিতে দিন এনে দিন খাওয়া মানুষের মধ্যে ভোগান্তি নেমে এসেছে এবং চারদিকে মহামারিতে আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি ভাবতে শুরু করলেন, কীভাবে অভাবী মানুষগুলোকে সাহায্য করা যায়। কিন্তু মা-বাবা তাকে বাইরে যেতে দিতে চাইতেন না মহামারির প্রকোপের ভয়ে। অনেক সময় বকাবকিও করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিয়ামেরই জয় হয়েছে। সহপাঠীদের একত্র করলেন তিনি। নিজের পরিবার ও বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে অল্পস্বল্প সাহায্য সংগ্রহ করতে লাগলেন। সেই টাকায় ৩০টি পরিবারকে চাল, ডাল ও আলু কিনে দিলেন তারা। তবে কিয়ামের চোখে পড়ল আশপাশে আরো অনেক গরিব মানুষ রয়ে গেছেন, তাদেরও সাহায্য প্রয়োজন। সরকার বিনা মূল্যে ত্রাণ বিলি করলেও অনেকে ঠিকমতো পাচ্ছেন না। এই অবস্থা দেখে তিনি ছুটে গেলেন চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমানের কাছে। সহশিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত থেকে ও বিদ্যালয়ভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সাফল্য লাভের ফলে তার সঙ্গে কিয়ামের বেশ সখ্য গড়ে উঠেছিল।
এরপর তিনি তার কাছে সমস্যাগুলো জেনে সাহায্য করতে হবে, এমন পরিবারগুলোর তালিকা চাইলেন। তারপর তাদের সাহায্য দেওয়া হলো। এ ছাড়া তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে কিয়াম তার বন্ধুদের নিয়ে একটি আইটি টিম গড়ে তুললেন, যারা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমানের প্রশাসনকে সরাসরি সাহায্য করেছেন। স্বাস্থ্যসুরক্ষার দিক থেকে পরিবারের বাধা থাকলেও এসব কার্যক্রমের পাশাপাশি কিয়াম মাস্ক, স্যানিটাইজার বিলি ও সচেতনতামূলক কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার শখের সহশিক্ষা কার্যক্রম আজ আমাকে একজন সামাজিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছে, যার ফলে সমাজের অসহায় মানুষগুলোর বিপদে-আপদে সহযোগিতা করা সম্ভব হয়।’
পাঠকমেলার এই সদস্যের নিজের একটি সমাজসেবামূলক সংগঠন আছে—‘ভাইব্রেন্ট ভিশনারিজ নেটওয়ার্ক’। গত রমজানের শেষের দিকে কিয়াম অসহায় মানুষদের ঈদ উপহার বিলি করবেন। তিনি মাত্র ২০ টাকা চাঁদা ধার্য করেন। এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনেকেই এগিয়ে আসেন এবং এর ফলে দরিদ্র মানুষদের ঈদ উপহার বিতরণ ও গরিব শিশুদের মধ্যে অগ্রিম ঈদ সালামি বিলি করা সম্ভব হয়। তিনি শিশুদের অধিকার রক্ষা, শীতবস্ত্র বিতরণ এবং তাপপ্রবাহের সময় ট্রাফিক পুলিশ ও দিনমজুরদের মধ্যে বিশুদ্ধ খাবার পানি, স্যালাইন ও শরবত বিলি করেছেন। ব্র্যাকের ‘আমরা নতুন নেটওয়ার্ক’-এর মাধ্যমে নদীভাঙনের ফলে বাস্তুচ্যুত নারীদের ক্ষমতায়ন ও পরিবেশের উন্নয়নের জন্য তিনি গড়ে তুলেছেন ‘প্রজেক্ট উদ্ভাসিনী’। এই প্রকল্পের আওতায় ফেলে দেওয়া জিন্স, কাপড়, প্লাস্টিক ইত্যাদি রিসাইকেল করার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের শৌখিন পণ্য, জুয়েলারি বক্স ও হোম ডেকোর তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। অনগ্রসর নারীদের হাতে তৈরি এসব পরিবেশবান্ধব পণ্যসামগ্রী বিক্রির ফলে তারা যেমন উপার্জনের সুযোগ পাচ্ছেন, তেমনি প্লাস্টিকের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ কমছে এবং তারা পরিবেশ সংরক্ষণে ভূমিকা রাখছেন। এ ছাড়া তারা নিজেরাও পরিবেশ সচেতন হচ্ছেন।
এর আগে শীতের সময়ে বস্তির নারীরা তাকে পিঠা তৈরির কথা বলেছিলেন। কিয়াম ও তার দল ব্যক্তিগত অর্থ প্রদান করেছেন। ফলে উৎসবমুখর পরিবেশে পিঠাগুলো তৈরি করেছেন তারা। এই পিঠাগুলো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টল সাজিয়ে বিক্রি করা হয়েছে। এর ফলে নারীদের মধ্যে নতুন আশা ও স্বপ্নের শুরু হয়েছে। কিয়ামের এই উদ্যোগগুলো ভদ্রা বস্তির মানুষগুলোর জীবনমানে বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। তিনি বলেছেন, ‘বস্তির মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে আমার এই কার্যক্রম চলবে এবং আমি আরো বড় উদ্যোগ গ্রহণ করতে চাই।’ ভদ্রা বস্তির মানুষরা তাদের প্রেরণার উৎস বলে মনে করেন তাকে।
এবারের ঈদে রাজশাহী মহানগরের ভদ্রা বস্তিতে ঈদ উপহার বিলি করেছেন সিফাত শাহরিয়ার কিয়াম। দুই বছর আগে এই বস্তিতে তিনি এসেছেন। তার পর থেকে তাদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য কাজ করে চলেছেন। এবারের ঈদেও তিনি ২০ টাকার সাহায্য প্রকল্পটি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। তাতে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রীরাও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আবারও প্রমাণিত হয়েছে ছোট একটি উদ্যোগও অনেক বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
‘সত্য, ন্যায় ও জ্ঞানের চর্চায় তরুণরাই সমাজের আলোকবর্তিকা’ এই বিশ্বাসে আমার দেশ পাঠকমেলা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো কার্যনির্বাহী সদস্যদের আলোচনা ও রাকসু নির্বাচনকে ঘিরে এক মতবিনিময় সভা।
৫ দিন আগেঢাকার প্রাণকেন্দ্র জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে চলছে মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক ইসলামি বইমেলা। বিভিন্ন দেশের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান এবং বইপ্রেমী মানুষের আগমনে মুখর বইমেলা পরিদর্শনে যান আমার দেশ পাঠকমেলা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যরা।
১২ দিন আগেবন্দর ব্যবস্থাপনা ও সরবরাহ বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাদুল ইসলামের সঞ্চালনায় পাঠচক্রে আলোচ্য বিষয় ছিল ‘বাংলাদেশে পাশ্চাত্য মূল্যবোধের প্রভাব’। এই পাঠচক্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ও বিভিন্ন সেশনের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থেকে নির্ধারিত বিষয়ের ওপর তাদের সুচিন্তিত মন্তব্য তুলে ধরেন।
১২ দিন আগেআন্তর্জাতিক ইসলামী বইমেলা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হলো মুসলিম উম্মাহর ইতিহাসবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান।
১৯ দিন আগে