সামিন রওনক সরদার
বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির মেঘনা ভবনে আমার দেশ পাঠকমেলা কেন্দ্রীয় কমিটির তৃতীয় পাঠচক্র অনুষ্ঠিত হয়।
বন্দর ব্যবস্থাপনা ও সরবরাহ বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাদুল ইসলামের সঞ্চালনায় পাঠচক্রে আলোচ্য বিষয় ছিল ‘বাংলাদেশে পাশ্চাত্য মূল্যবোধের প্রভাব’। এই পাঠচক্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ও বিভিন্ন সেশনের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থেকে নির্ধারিত বিষয়ের ওপর তাদের সুচিন্তিত মন্তব্য তুলে ধরেন।
বাংলাদেশে পাশ্চাত্য মূল্যবোধের প্রভাব আছে কি না, থাকলে কতটা আছে এবং আমাদের নিয়মিত কার্যক্রমে কতটুকু প্রভাবিত করে—এর ইতিবাচক ও নেতিবাচক বিষয় নিয়ে অংশগ্রহণকারীরা তাদের মূল্যবান মতামত ব্যক্ত করেন। সেইসঙ্গে পাশ্চাত্য মূল্যবোধ আমাদের যুবসমাজের ওপর যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, তা নিয়েও আলোচনা তুলে ধরা হয়।
পশ্চিমের কল্যাণে নারীবাদী তত্ত্বের শোরগোল আজ আমাদের চারপাশে। নারীর ক্ষমতায়নে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষ পাল্লা দিয়ে সমাজকে এগিয়ে নিচ্ছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে ইতিহাসের এক এমন অধ্যায়ে আমরা অবস্থান করছি, যখন নারীর পরিপূর্ণ মর্যাদা এবং নিরাপত্তা বিধানে আমরা বহুলাংশেই ব্যর্থ। নারীর সম্মানের প্রশ্নে আপসহীন হয়ে সামাজিক, প্রশাসনিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে নারীর নিরাপত্তা বিধান করতে বদ্ধপরিকর শিক্ষার্থীরা।
পাশ্চাত্য মূল্যবোধের প্রসঙ্গে অতি স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কথা এবং দূর-দূরান্তের মানুষের যোগাযোগ সহজ করার ইতিবাচকতা। কিন্তু বর্তমান বিশ্বের খ্যাতিমান প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা কেন এই অতি প্রয়োজনীয় প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ‘আমাদের মতো’ ইতিবাচক নয়, সেটা অবশ্যই ভাবনা জাগানিয়া। ফেসবুকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ চামাত পালিহাপিতিয়া, প্রথম প্রেসিডেন্ট সিয়ান পার্কার, এমনকি ‘বিশ্বায়নের প্রবর্তক’ মার্শাল ম্যাকলুহান—এ রকম আরো অনেকেই এই তালিকায় আছেন। পাঠচক্রে শিক্ষার্থীদের বক্তব্যে ফুটে উঠেছে বারবার—পশ্চিম থেকে আমদানি হলেই সেটি কল্যাণকর নাও হতে পারে।
প্রযুক্তির কল্যাণে শিক্ষার প্রচার ও প্রসার আজ সহজলভ্য। বিশেষত আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে, যেখানে সবার কাছে শিক্ষার আলো পৌঁছানোই এক বিরাট চ্যালেঞ্জ, সেখানে তথ্যপ্রযুক্তির এহেন বিপ্লব আমাদের জন্য নিঃসন্দেহে আশীর্বাদ। তবে পরীক্ষালব্ধ গবেষণাও ভুলে গেলে চলবে না, যেখানে শিক্ষক, গবেষক এমনকি চিকিৎসকরা সাবধান করছেন বারংবার—এ দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীরা, বিশেষ করে যুবসমাজ আজ সবচেয়ে বেশি প্রযুক্তিতে আসক্ত।
এই গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল প্রসঙ্গের অবতারণা করে একজন শিক্ষার্থী তার মনের কথা ব্যক্ত করে বলেন, বর্তমান যুবসমাজ আজ হতাশাগ্রস্ত। ফেসবুক-ইউটিউবের গ্ল্যামারের জগৎ তাদের মস্তিষ্ককে দিচ্ছে সাময়িক ডোপামিনের ধোঁকা। এটি তৈরি করছে এক কাল্পনিক জগৎ, যে জগৎটা ভরে যাচ্ছে ‘আমি’, ‘আমিত্ব’ আর মিথ্যা কিছু বিনোদনে, যা সেই আমিত্বের আগুনকে উসকে দিচ্ছে। এটি যুবকদের করে দিচ্ছে একা ও হতাশাগ্রস্ত এবং আসল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করছে, দূরে সরিয়ে দিচ্ছে সমাজ-পরিবার থেকে। রাস্তা থেকে বাসা, রিকশা থেকে মেট্রো, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস থেকে রেস্তোরাঁ—প্রযুক্তিতেই ডুবে থাকাটাই যেন এখন স্মার্টনেস।
আলোচনার শেষের দিকে সবাই অন্তত একটি ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, পশ্চিমা সংস্কৃতি ততক্ষণই কল্যাণকর, যতক্ষণ না সেটি আঘাত হানছে আমাদের নিজস্ব সভ্যতা এবং সংস্কৃতিতে। তবে ভুলে গেলে চলবে না, বহুল চর্চিত এবং বহুলাংশে গণমনস্তত্ত্বের সঙ্গে সংযুক্ত সংস্কৃতিই অপর অচর্চিত সংস্কৃতিকে পরাভূত করে। সামাজিক মনস্তত্ত্বের তথা সমাজের চালক সংস্কৃতি বা কৃষ্টি নিজের জায়গা দখল করবেই।
সুতরাং, আমাদের আপন সংস্কৃতি রক্ষার এবং যেকোনো আমদানিকৃত কৃষ্টি থেকে শুধু ইতিবাচক দিকটা গ্রহণ করে নেতিবাচকতা বর্জনের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশকে ঢেলে সাজানোর গুরুদায়িত্ব আমাদের তথা শিক্ষার্থীদেরই নিতে হবে। এটি করতে হবে অবশ্যই একটি গ্রহণযোগ্য, যুগোপযোগী, যৌক্তিক ও কার্যকর গণ ও জনসংযোগের মধ্য দিয়ে। তবেই একটি পরিপূর্ণ স্বাধীন, স্বতন্ত্র ও সুস্থ সংস্কৃতিচর্চার বাংলাদেশের স্বপ্ন আমাদের মাঝে বাস্তব মনে হবে।
বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির মেঘনা ভবনে আমার দেশ পাঠকমেলা কেন্দ্রীয় কমিটির তৃতীয় পাঠচক্র অনুষ্ঠিত হয়।
বন্দর ব্যবস্থাপনা ও সরবরাহ বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাদুল ইসলামের সঞ্চালনায় পাঠচক্রে আলোচ্য বিষয় ছিল ‘বাংলাদেশে পাশ্চাত্য মূল্যবোধের প্রভাব’। এই পাঠচক্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ও বিভিন্ন সেশনের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থেকে নির্ধারিত বিষয়ের ওপর তাদের সুচিন্তিত মন্তব্য তুলে ধরেন।
বাংলাদেশে পাশ্চাত্য মূল্যবোধের প্রভাব আছে কি না, থাকলে কতটা আছে এবং আমাদের নিয়মিত কার্যক্রমে কতটুকু প্রভাবিত করে—এর ইতিবাচক ও নেতিবাচক বিষয় নিয়ে অংশগ্রহণকারীরা তাদের মূল্যবান মতামত ব্যক্ত করেন। সেইসঙ্গে পাশ্চাত্য মূল্যবোধ আমাদের যুবসমাজের ওপর যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, তা নিয়েও আলোচনা তুলে ধরা হয়।
পশ্চিমের কল্যাণে নারীবাদী তত্ত্বের শোরগোল আজ আমাদের চারপাশে। নারীর ক্ষমতায়নে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষ পাল্লা দিয়ে সমাজকে এগিয়ে নিচ্ছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে ইতিহাসের এক এমন অধ্যায়ে আমরা অবস্থান করছি, যখন নারীর পরিপূর্ণ মর্যাদা এবং নিরাপত্তা বিধানে আমরা বহুলাংশেই ব্যর্থ। নারীর সম্মানের প্রশ্নে আপসহীন হয়ে সামাজিক, প্রশাসনিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে নারীর নিরাপত্তা বিধান করতে বদ্ধপরিকর শিক্ষার্থীরা।
পাশ্চাত্য মূল্যবোধের প্রসঙ্গে অতি স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কথা এবং দূর-দূরান্তের মানুষের যোগাযোগ সহজ করার ইতিবাচকতা। কিন্তু বর্তমান বিশ্বের খ্যাতিমান প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা কেন এই অতি প্রয়োজনীয় প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ‘আমাদের মতো’ ইতিবাচক নয়, সেটা অবশ্যই ভাবনা জাগানিয়া। ফেসবুকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ চামাত পালিহাপিতিয়া, প্রথম প্রেসিডেন্ট সিয়ান পার্কার, এমনকি ‘বিশ্বায়নের প্রবর্তক’ মার্শাল ম্যাকলুহান—এ রকম আরো অনেকেই এই তালিকায় আছেন। পাঠচক্রে শিক্ষার্থীদের বক্তব্যে ফুটে উঠেছে বারবার—পশ্চিম থেকে আমদানি হলেই সেটি কল্যাণকর নাও হতে পারে।
প্রযুক্তির কল্যাণে শিক্ষার প্রচার ও প্রসার আজ সহজলভ্য। বিশেষত আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে, যেখানে সবার কাছে শিক্ষার আলো পৌঁছানোই এক বিরাট চ্যালেঞ্জ, সেখানে তথ্যপ্রযুক্তির এহেন বিপ্লব আমাদের জন্য নিঃসন্দেহে আশীর্বাদ। তবে পরীক্ষালব্ধ গবেষণাও ভুলে গেলে চলবে না, যেখানে শিক্ষক, গবেষক এমনকি চিকিৎসকরা সাবধান করছেন বারংবার—এ দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীরা, বিশেষ করে যুবসমাজ আজ সবচেয়ে বেশি প্রযুক্তিতে আসক্ত।
এই গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল প্রসঙ্গের অবতারণা করে একজন শিক্ষার্থী তার মনের কথা ব্যক্ত করে বলেন, বর্তমান যুবসমাজ আজ হতাশাগ্রস্ত। ফেসবুক-ইউটিউবের গ্ল্যামারের জগৎ তাদের মস্তিষ্ককে দিচ্ছে সাময়িক ডোপামিনের ধোঁকা। এটি তৈরি করছে এক কাল্পনিক জগৎ, যে জগৎটা ভরে যাচ্ছে ‘আমি’, ‘আমিত্ব’ আর মিথ্যা কিছু বিনোদনে, যা সেই আমিত্বের আগুনকে উসকে দিচ্ছে। এটি যুবকদের করে দিচ্ছে একা ও হতাশাগ্রস্ত এবং আসল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করছে, দূরে সরিয়ে দিচ্ছে সমাজ-পরিবার থেকে। রাস্তা থেকে বাসা, রিকশা থেকে মেট্রো, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস থেকে রেস্তোরাঁ—প্রযুক্তিতেই ডুবে থাকাটাই যেন এখন স্মার্টনেস।
আলোচনার শেষের দিকে সবাই অন্তত একটি ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, পশ্চিমা সংস্কৃতি ততক্ষণই কল্যাণকর, যতক্ষণ না সেটি আঘাত হানছে আমাদের নিজস্ব সভ্যতা এবং সংস্কৃতিতে। তবে ভুলে গেলে চলবে না, বহুল চর্চিত এবং বহুলাংশে গণমনস্তত্ত্বের সঙ্গে সংযুক্ত সংস্কৃতিই অপর অচর্চিত সংস্কৃতিকে পরাভূত করে। সামাজিক মনস্তত্ত্বের তথা সমাজের চালক সংস্কৃতি বা কৃষ্টি নিজের জায়গা দখল করবেই।
সুতরাং, আমাদের আপন সংস্কৃতি রক্ষার এবং যেকোনো আমদানিকৃত কৃষ্টি থেকে শুধু ইতিবাচক দিকটা গ্রহণ করে নেতিবাচকতা বর্জনের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশকে ঢেলে সাজানোর গুরুদায়িত্ব আমাদের তথা শিক্ষার্থীদেরই নিতে হবে। এটি করতে হবে অবশ্যই একটি গ্রহণযোগ্য, যুগোপযোগী, যৌক্তিক ও কার্যকর গণ ও জনসংযোগের মধ্য দিয়ে। তবেই একটি পরিপূর্ণ স্বাধীন, স্বতন্ত্র ও সুস্থ সংস্কৃতিচর্চার বাংলাদেশের স্বপ্ন আমাদের মাঝে বাস্তব মনে হবে।
‘সত্য, ন্যায় ও জ্ঞানের চর্চায় তরুণরাই সমাজের আলোকবর্তিকা’ এই বিশ্বাসে আমার দেশ পাঠকমেলা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো কার্যনির্বাহী সদস্যদের আলোচনা ও রাকসু নির্বাচনকে ঘিরে এক মতবিনিময় সভা।
৫ দিন আগেঢাকার প্রাণকেন্দ্র জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে চলছে মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক ইসলামি বইমেলা। বিভিন্ন দেশের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান এবং বইপ্রেমী মানুষের আগমনে মুখর বইমেলা পরিদর্শনে যান আমার দেশ পাঠকমেলা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যরা।
১২ দিন আগেআন্তর্জাতিক ইসলামী বইমেলা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হলো মুসলিম উম্মাহর ইতিহাসবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান।
১৯ দিন আগেসুশৃঙ্খল সমৃদ্ধ সমাজ বিনির্মানে বই পড়ার গুরুত্ব অপরিসীম। বই হচ্ছে জ্ঞানের আধার। বই পড়ার মধ্য দিয়ে জ্ঞানসমৃদ্ধ মানুষ গড়া সম্ভব। জ্ঞানসমৃদ্ধ মানুষ দ্বারাই সমৃদ্ধ সমাজ নির্মিত হয়। তাই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পাঠচক্র অত্যন্ত জরুরি।
১৯ দিন আগে