বিতর্কিত, সমালোচিত, কূটকৌশল, ভজকট ও বয়কটে পড়া বিসিবির নির্বাচন আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ০০
আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ২৫

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে ক্ষণে ক্ষণে বদলেছে পরিস্থিতি। মিরপুরে ছিল দিনভর নানা উত্তেজনা। এমন উত্তেজনার মধ্যে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের চারপাশে দেখা গেছে ক্লাব ক্যাটাগরি থেকে নির্বাচনে দাঁড়ানোদের পোস্টার, ব্যানার-ফেস্টুন। কাউন্সিলরশিপ বদল, কাউন্সিলর জমা দেওয়ার সময় পরিবর্তন, নির্ধারিত সময়ের আগে ভোট হয়ে যাওয়া- নানা অভিযোগ নিয়ে আজ হোটেল সোনারগাঁওয়ের বলরুমে হবে নির্বাচন। মোট ১৫৬ জন কাউন্সিলর অর্থাৎ ১৫৬ জন ভোটার ভোট দেবেন নির্বাচনে। ১৯১ জন ভোটার থাকলেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বেশ কয়েকজন পরিচালক হয়ে যাওয়ায় সেসব পদে কোনো ভোট হবে না। ১৫৬ জন ভোটারের মধ্যে ৫৮ জন পোস্টাল বা ই-ব্যালটে ভোট দেবেন। বাকি ৯৮ জন সশরীরে ভোট দেবেন। এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৩৪ জন প্রার্থী। এর মধ্যে নির্ধারিত সময়ের পর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন চারজন।

বিজ্ঞাপন

নির্বাচনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ছয়জন। তারা জেলা ও বিভাগীয় পর্যায় অর্থাৎ, ক্যাটাগরি-১ থেকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়াদের মধ্যে আছেন- চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে আসিফ আকবর ও আহসান ইকবাল চৌধুরী, খুলনা বিভাগ থেকে জুলফিকার আলী খান ও আব্দুর রাজ্জাক, সিলেট থেকে রাহাত শামস এবং বরিশাল থেকে শাখাওয়াত হোসেন। এই ক্যাটাগরি থেকে নির্ধারিত সময়ের পর নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন ঢাকা বিভাগের জামালপুর জেলার কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদুয়ান ও রাজশাহী বিভাগ থেকে নির্বাচনে দাঁড়ানো হাসিবুল আলম। তবে নির্বাচন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিলেও তাদের নাম থাকবে ব্যালট পেপারে।

নাটকীয় ঘটনার জন্ম দিয়েছে ক্লাব অর্থাৎ ক্যাটাগরি-২ থেকে নির্বাচনে দাঁড়ানো প্রার্থীরা। এই ক্যাটাগরি থেকে মোট ৩২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। তবে তামিম ইকবালসহ মোট ১৫ জন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। তাতে মোট প্রার্থী দাঁড়ায় ১৭ জনে। মাঝে অনিয়মের দায়ে অভিযুক্ত ১৫ ক্লাবকে নির্বাচনের ভোটাধিকার সরিয়ে দেওয়ায় প্রার্থী সংখ্যা নেমে আসে ১৬-তে। তবে গতকাল সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালতের রায়ে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ইফতেখার রহমান মিঠু। ফলে এই ক্যাটাগরির নির্বাচনি ব্যালটে থাকবে ১৭ প্রার্থীর নাম। শেষ মুহূর্তে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত আসায় ব্যালট পেপারে তার নাম নতুন করে যুক্ত করা হবে। আর তাই আগে পাঠিয়ে দেওয়া ই-ব্যালটগুলো বাতিল করতে বাধ্য হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। একজোট বেঁধে শুক্রবার রাতে বনানীর শেরাটন হোটেলে ক্যাটাগরি-২ এর সরকার সমর্থিত পুরো প্যানেলকে ই-ব্যালটে ভোট দিয়েছিলেন ২৪ থেকে ২৬ জন ভোটার। এখন তাদের সবার সেই ভোট বাতিল করতে হচ্ছে। নতুনভাবে তাদের কাছে ই-ব্যালট পাঠানো হচ্ছে, যেখানে দুজন প্রার্থীর সংখ্যা আরো বাড়ছে।

ক্যাটাগরি-৩ থেকে এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক ক্রিকেটার হিসেবে বিসিবি নির্বাচনে কাউন্সিলর হওয়া খালেদ মাসুদ পাইলট ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কাউন্সিলর হওয়া দেবব্রত পাল। মোট ৪৫ কাউন্সিলর ভোট দিয়ে একজনকে নির্বাচিত করবেন। এই ক্যাটাগরিতে মনোনয়নপত্র নিয়েছিলেন তিনজন। এর মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিলর সিরাজউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর। বিসিবি নির্বাচনে নোংরামি হচ্ছে এমন অভিযোগ দিয়ে তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন।

নির্বাচন থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেওয়া ক্রিকেট সংগঠকরা আজ বিসিবির নির্বাচনে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারা এক অর্থে বিসিবির বহুল বিতর্কিত, সমালোচিত এবং কূটকৌশলের নির্বাচনকে এক অর্থে বয়কট করছেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত