মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ছিল সাজসাজ রব। স্টেডিয়ামের গেটে, মিডিয়া বিল্ডিংয়ে এবং গ্যালারির যেদিকে তাকানো হচ্ছিল, সব জায়গায় শুধুই মুশফিকুর রহিম। বিষয়বস্তু প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে মুশফিকের শততম টেস্ট। টসের পর বিশেষ আয়োজনের মাধ্যমে মুশফিককে দেওয়া হয় সম্মাননা স্মারক। দেওয়া হয় শততম টেস্টের বিশেষ টেস্ট ক্যাপ। এছাড়া মুশফিকের হাতে তুলে দেওয়া হয় তার অভিষেক ও শততম টেস্ট খেলা ক্রিকেটারদের স্বাক্ষর সংবলিত জার্সি। সব মিলিয়ে গতকাল টেস্ট শুরুর পূর্বমুহূর্তটা পুরোটাই ছিল মুশফিকময়।
২০০৫ সালে লর্ডসে নিজের অভিষেক ম্যাচে টেস্ট ক্যাপটা সে সময়ের অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমনের হাত থেকে পেয়েছিলেন মুশফিক। গতকাল ঠিক তেমন একটি ঘটনারই অবতারণা হয়েছিল। শততম টেস্টের ক্যাপটা পান হাবিবুল বাশারের হাত থেকেই। এছাড়া বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট ক্রিকেটার আকরাম খান মুশফিকের হাতে তুলে দেন বিশেষ ক্যাপ। সব মিলিয়ে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে মুশফিকের শততম টেস্ট খেলার মুহূর্তটা স্মরণীয় করে রাখতে কোনো কমতি রাখেনি বিসিবি। টেস্ট ক্যাপ, স্বাক্ষর সংবলিত জার্সির পাশাপাশি বিসিবির পক্ষ থেকে তুলে দেওয়া হয় বিশেষ ক্রেস্ট। দিনের শেষ বেলায় আরো একটি চমক ছিল মুশফিকের জন্য। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া মুশফিকের হাতে তুলে দেন বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট।
এমন স্মরণীয় দিনে পুরো গ্যালারিই মেতে ছিল মুশফিক বন্দনায়। গ্যালারি থেকে বারবারই শোনা যাচ্ছিল ‘মুশফিক, মুশফিক’ স্লোগান। দর্শকরা উন্মাতাল হয়েছিলেন মুশফিকের খেলা দেখার জন্য। সেখানে কোনো হতাশার জন্ম দেননি এই ডানহাতি ব্যাটার। প্রথম সেশনের শেষ মুহূর্তে নামা মুশফিক ৯৯ রানে অপরাজিত থেকে শেষ করেন প্রথম দিন। ফলে এখন ১১তম ক্রিকেটার হিসেবে অপেক্ষায় নিজের শততম টেস্টে সেঞ্চুরি হাঁকাতে। এমন দারুণ রেকর্ডের দিনে মুশফিক নিজের এই যাত্রাপথের পুরোটা সময় যারা পাশে ছিলেন, সবাইকে জানান ধন্যবাদ। তিনি বলেন, ‘যারা উপস্থিত আছেন, আপনাদের সবাইকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমার পরিবারের সব সদস্য, বাবা-মাকে কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। বিশেষত আমার স্ত্রীকে, যে অনেক নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে। আমার সতীর্থ, কোচ, বন্ধু ও সব ভক্তকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানাই।’ তিনি আরো জানান, ‘আমিও বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য শতভাগ দেব, যেমনটা সব সময় চেষ্টা করি। আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট দলকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই এখানে থাকার জন্য।’
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেন, ‘এটা আপনার ও পরিবারের জন্য গর্বের মুহূর্ত। আমরা আপনাকে ছোটবেলা থেকে অনুসরণ করছি, আপনার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছি। আমি আশা করি মাঠে ও বাইরে আপনি যে কঠোর পরিশ্রম করেন, সেটা চালিয়ে যাবেন।’

