বিপিএল ফাইনাল শেষেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে উড়াল দেবে বাংলাদেশ দল। আগামী ২৫ জানুয়ারি ভারতের ফ্লাইটে উঠবেন কারা? এ প্রশ্নের উত্তরই এখন খুঁজছেন নির্বাচকরা। দুই নির্বাচকের মধ্যে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু আছে ঢাকা-সিলেট যাতায়াতে। আরেক নির্বাচক হাসিবুল হোসেন শান্ত মাঠে বসে নিয়মিত দেখছেন বিপিএল ম্যাচগুলো। তাতে স্পষ্ট বিপিএলের পারফরম্যান্স বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ফেলবে বড় প্রভাব। আর উপমহাদেশের কন্ডিশন বলে খানিকটা নির্ভার নির্বাচকরা। কারণ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের গ্রুপ পর্বের চার ম্যাচের তিনটিই পড়েছে কলকাতায়। শেষটির ভেন্যু মুম্বাই। বাংলাদেশের কন্ডিশনের সঙ্গে মিল থাকায় খুব বেশি চিন্তা করতে হচ্ছে না নির্বাচকদের।
তবে প্রশ্ন জেগেছে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ডাক পাবেন কারা? টি-টোয়েন্টিতে ব্রাত্য হয়ে পড়া নাজমুল হোসেন শান্ত কী ফিরবেন টি-টোয়েন্টি দলে? এই দুই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই মূলত সিলেটে চলছে তোড়জোড়। আগামী ৫ জানুয়ারির মধ্যে আইসিসির কাছে স্কোয়াড জমা দেবে বিসিবি। টুর্নামেন্ট শুরুর আগ পর্যন্ত কোন কারণ ছাড়াই সেই স্কোয়াডে পরিবর্তন আনার সুযোগ থাকছে। সেই সুযোগটাই নিতে চায় নির্বাচক প্যানেল। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের নেতৃত্বে থাকবেন লিটন দাস। ইতোমধ্যে বিপিএলের শুরুটাও দারুণ করেছেন তিনি। এছাড়া তানজিদ হাসান তামিম, সাইফ হাসান ও পারভেজ ইমনের বিশ্বকাপে যাওয়া অনেকটাই নিশ্চিত।
এখানে আছে খানিকটা যদি কিন্তু। বিপিএলে সিলেট টাইটানসের হয়ে চার নম্বরে ব্যাট চালাচ্ছেন পারভেজ হোসেন ইমন। এখন পর্যন্ত দুই ম্যাচ খেলা এই বাঁ-হাতি ব্যাটার করেন দুটি ফিফটি। মিডল অর্ডারে ছন্দে থাকা এই ব্যাটারকে চার নম্বরের জন্যই বিবেচনা করছেন নির্বাচকরা। লিটন, সাইফ আর তানজিদ তামিম নিজ নিজ দলের হয়ে খেলছেন ওপেনিংয়ে। শেষ পর্যন্ত কারা ওপেনার হিসেবে বিশ্বকাপের বিমান ধরবেন সেটাই দেখার অপেক্ষা। তবে সম্ভাব্য ওপেনিং জুটি হতে পারে লিটন দাস ও সাইফ হাসান। তিন নম্বরের জন্য বিবেচিত হতে পারেন নাজমুল হোসেন শান্ত। রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের হয়ে তিন নম্বরে খেলা এই ব্যাটারও আছেন দারুণ ছন্দে।
সেঞ্চুরি দিয়ে বিপিএল শুরু করা নাজমুল হোসেন শান্ত তিন ম্যাচেই পেয়েছেন রানের দেখা। ফলে তাকেও ফেরানো হতে পারে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াডে। তাকে সুযোগ দিলে বদলে যাবে পুরো বিশ্বকাপ স্কোয়াডের সমীকরণ। সুযোগ পেলে তাকে তিন নম্বরের জন্য বিবেচনা করা হবে। তবে দলের প্রয়োজনে মিডল অর্ডারেও হতে পারে তার জায়গা।
টপ অর্ডার নিয়ে অনেকটাই নির্ভার থাকা বিসিবি নির্বাচকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলাচ্ছে মিডল অর্ডার। তাওহিদ হৃদয় বিপিএলে নিজের প্রথম ম্যাচে পাননি রানের দেখা। মিডল অর্ডারে খেলা আরেক ব্যাটার জাকের আলী অনিকও নেই ঠিকঠাক ছন্দে। লম্বা সময় ধরে এ দুই ব্যাটার ভোগাচ্ছেন মিডল অর্ডারকে। ফলে এ দুজনকে নিয়ে খানিকটা চিন্তা করতে হবে নির্বাচকদের। মিডল অর্ডারে খেলা আরেক ব্যাটার শামীম পাটোয়ারীও নেই রানের মধ্যে। ফলে এটা বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে নির্বাচকদের জন্য। এ কারণেই মিডল অর্ডারের জন্য বিবেচিত হচ্ছেন পারভেজ হোসেন ইমন। সঙ্গী হতে পারেন সাইফ হাসান অথবা নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে শামীম-হৃদয়রা শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের বিমান ধরার সুযোগ পেলেও হয়তো জাকেরের সে সৌভাগ্য না-ও হতে পারে।
নির্বাচকদের জন্য সবচেয়ে কম চিন্তা করতে হচ্ছে বোলিং ইউনিট নিয়ে। স্পিন বিভাগে রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ আর শেখ মাহেদির বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাওয়া অনেকটাই নিশ্চিত। পেস বোলিং ইউনিটে তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গী হবেন তানজিম হাসান সাকিব ও শরিফুল ইসলাম। চার পেসার ও তিন স্পিনারের সঙ্গে সাইফ হাসান-শামীম পাটোয়ারীরা থাকবেন ৬ষ্ঠ বোলারের অভাব পূরণের লক্ষ্যে।
শেষ মুহূর্তে নির্বাচকরা কোনো চমক উপহার দেয় কি না, সেটাই দেখার অপেক্ষা। তবে সেই চমকটা হতে পারে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের বিশ্বকাপ স্কোয়াডের সুযোগ পাওয়া। এছাড়া আর বড় কোনো চমকের দেখা পাওয়া যাবে না বলেই মনে হচ্ছে। বিশ্বকাপ দল নিয়ে নির্বাচকদের সঙ্গে অধিনায়ক লিটন দাসের বৈঠক ইতোমধ্যে সিলেটে হয়েছে। এ নিয়ে দুই নির্বাচকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিস্তারিত কিছু জানাতে রাজি হননি। তবে তাদের কথা বার্তায় স্পষ্ট বিশ্বকাপ দলটা একরকম চূড়ান্তই করে রেখেছে বিসিবি।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

