পাকিস্তানের আদিয়ালা কারাগারে সাক্ষাতের অনুমতি পাওয়ার পর পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বোন উজমা খানম জানিয়েছেন, ইমরান খান “সম্পূর্ণ সুস্থ” আছেন।
পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, মঙ্গলবার কারাগারে ৩০ মিনিটের সাক্ষাতের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গুজবের বিপরীতে তার ভাইয়ের শারীরিক অবস্থা ভালো থাকলেও তিনি “মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন”।
উজমা দাবি করেন, ইমরান খানকে সারাদিন কক্ষে আটকে রাখা হয় এবং খুব অল্প সময়ের জন্য বাইরে যেতে দেওয়া হয়। সাক্ষাতের সময় তিনি কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। কারাগারের ভেতরে যাওয়ার সময় উজমার সঙ্গে ছিলেন বিপুল সংখ্যক পিটিআই কর্মী–সমর্থক।
ইমরানের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি না দেওয়ায় কয়েক সপ্তাহ ধরে পিটিআই পরিবার ও নেতারা অভিযোগ করে আসছিল। ফলে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট ও আদিয়ালা কারাগারের বাইরে এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে পিটিআইয়ের বিক্ষোভও অনুষ্ঠিত হয়। খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী সোহেল আফ্রিদি দাবি করেছেন, ২৭ অক্টোবরের পর থেকে কাউকে ইমরান বা তার স্ত্রী বুশরা বিবির সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। এই ঘটনায় উদ্বেগ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে দেশটিতে। ফলে তিনি মারা গেছেন—বলেও গুঞ্জন উঠে।
এদিকে, বিক্ষোভ ঠেকাতে ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তাল্লাল চৌধুরী সতর্ক করে বলেন, “আইএইচসি হোক বা আদিয়ালা কারাগার—১৪৪ ধারার লঙ্ঘন করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি দাবি করেন, গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সন্ত্রাসী হুমকি মোকাবিলায় এই বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, সন্ত্রাসীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ভিপিএন ব্যবহার করে গোপনে যোগাযোগ চালায়; তাই পিটিএ-এর সঙ্গে মিলে ভিপিএন ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা হবে। তিনি একইসঙ্গে সতর্ক করেন যে প্রাদেশিক সরকারি পদাধিকারীরা রাজনৈতিক কাজে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যবহার করলে পেশোয়ার হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে রাওয়ালপিন্ডি পুলিশ জানিয়েছে, তিন দিনের জন্য জারি করা ১৪৪ ধারা বাস্তবায়নে শহরে অন্তত ৩,০০০ নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোতায়েন রয়েছে। আদিয়ালা কারাগারমুখী সড়কে পিকেট বসানো হয়েছে এবং রেড জোনের আশপাশের কয়েকটি রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ইমরানের সঙ্গে সাক্ষাতের দাবিতে পিটিআই নেতারা গত কয়েক সপ্তাহে একাধিক বিক্ষোভ করেছে। দলটি অভিযোগ করেছে, ১৯ নভেম্বর কারাগারের বাইরে বিক্ষোভের পর ইমরানের বোনসহ নেতাদের “সহিংসভাবে আটক” করা হয়। ইমরানের স্বাস্থ্যের বিষয়ে নানা জল্পনা ছড়ালেও পিটিআই ও সরকারি পক্ষ দু’দলই জানিয়েছেন যে তিনি শারীরিকভাবে সুস্থ।
উল্লেখ্য, ৭২ বছর বয়সি ইমরান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন। ২০২২ সালে তিনি ক্ষমতা হারানোর পর একাধিক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং দীর্ঘ কারাদণ্ড ভোগ করছেন। এদিকে, ইমরান দাবি করেন, এসব মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

