তানজানিয়ার ‘বিতর্কিত’ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ২৭
ছবি: সংগৃহীত

তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসানকে পুনরায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটির নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফলে দেখা গেছে, হাসান প্রায় ৯৭.৬৬ শতাংশ ভোট পেয়ে বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। তবে এই নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক এবং সহিংসতা দেখা দিয়েছে।

শনিবার কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আজ ঘোষিত ফলাফলের পর রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, হাসানের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান একই দিন পরে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের অধিকাংশকেই আগেই নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়। ফলে ভোটের দিন থেকেই রাজধানী দোদোমা ও অন্যান্য প্রধান শহরে সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা হাসানের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে এবং কিছু সরকারি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। নিরাপত্তা বাহিনী কাঁদানে গ্যাস ও গুলি চালিয়ে বিক্ষোভ দমন করার চেষ্টা করে।

প্রধান বিরোধী দল চাদেমাকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো। দলটি জানিয়েছে হাসপাতাল ও ক্লিনিকের তথ্য অনুযায়ী সহিংসতায় প্রায় ৭০০ জন নিহত হয়েছে। তবে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর বলেছে, বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদনে অন্তত তিনটি শহরে ১০ জন নিহতের তথ্য পাওয়া গেছে।

সরকার অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ থাবিত কম্বো আল জাজিরাকে বলেন, “নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে, কোনও অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করা হয়নি। সরকারের কাছে নিহতদের বিষয়ে কোনও সরকারি পরিসংখ্যান নেই।”

২০২১ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যুর পর ভাইস প্রেসিডেন্ট পদ থেকে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন সামিয়া সুলুহু হাসান। এবারের নির্বাচনে তিনি ছোট দলগুলোর ১৬ জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়েছেন।

নির্বাচনী সংস্কারের দাবি তোলার পর প্রধান বিরোধী নেতা টুন্ডু লিসুকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে ফলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। অন্য বিরোধী নেতা লুহাগা এমপিনাকেও প্রার্থী হতে দেওয়া হয়নি।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো অভিযোগ করেছে, ভোটের আগে সরকার দেশে “ভয় ও সন্ত্রাসের পরিবেশ” তৈরি করেছিল। নির্বাচনের আগের দিনগুলোতে বেশ কয়েকজন বিরোধী রাজনীতিক ও কর্মী অপহরণের শিকার হন।

এ ঘটনার পরও প্রেসিডেন্ট হাসান এখনও পর্যন্ত কোনো প্রকাশ্য প্রতিক্রিয়া জানাননি।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক বিবৃতিতে বলেন, “তানজানিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, বিশেষ করে বিক্ষোভের সময় প্রাণহানি ও আহত হওয়ার খবরগুলো অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”

আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো এখন নির্বাচন প্রক্রিয়া ও সহিংসতার তদন্ত দাবি করছে, তবে দেশটির সরকার বলছে— “সবকিছু আইনসম্মতভাবেই সম্পন্ন হয়েছে।”

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত