‘বাংলাদেশি’ হিসেবে আটকের ভয়ে গুরুগ্রাম ছাড়ছেন পশ্চিমবঙ্গের অনেক মুসলমান

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৫, ১২: ৫৯
আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৪: ২৩
ছবি: টেলিগ্রাফ

কেউ সাতদিন আটক থাকার পর ছাড়া পেয়েও ভয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছে না অনেকে; যদি পুলিশ আবারো ধরে নিয়ে যায়। কেউ কেউ আবার ট্রেনের রিজার্ভেশন কবে পাবেন, সেই আশায় রয়েছেন। যেদিন টিকিট পাবেন, সেদিনই চলে যাবেন।

অনেকে আবার ট্রেনের টিকিটের অপেক্ষা না করে নিজেরাই বাস ভাড়া করে চলে গেছে পশ্চিমবঙ্গে। জনপ্রতি প্রায় আড়াই হাজার টাকা ভাড়া গুনতে হচ্ছে তাদের।

বিজ্ঞাপন

তাদের চিন্তা গ্রামের বাড়িতে ফিরে গেলে পরিবারের সদস্যদের ভরণপোষণ করবেন কীভাবে।

এরা সবাই কর্মসূত্রে দিল্লি লাগোয়া গুরুগ্রামে থাকেন। পশ্চিমবঙ্গের এই বাসিন্দারা সম্প্রতি সেখানকার পুলিশের হাতে আটক হচ্ছেন ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে।

স্থানীয় শ্রমিক সংগঠন মুকুল শেখ জানান, ‘পশ্চিমবঙ্গের বহু মানুষ এখান থেকে চলে গেছে। সবাই ভয় পাচ্ছে যে পুলিশ যদি আবার আটক করে বাংলাদেশি সন্দেহ করে, তাহলে কী হবে।’

গত কয়েক মাস ধরে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে অবৈধ ‘বাংলাদেশি’ আটকের যে অভিযান চলছে, সেই প্রক্রিয়াতেই আটক করা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষীদেরও। ওইসব রাজ্য থেকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কাছে আটক হওয়া ব্যক্তিদের পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে।

আবার এমন ঘটনাও সামনে এসেছে, যেখানে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও তাদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

অনেকে ভয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছে না। মালদা জেলার চাঁচোলের বাসিন্দা আনিসুর রহমান স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে গুরুগ্রামে থাকেন প্রায় আট বছর ধরে। কয়েক সপ্তাহ আগে গুরুগ্রামের আরো অনেক বাংলাভাষীর মতোই তাকেও পুলিশ আটক করেছিল পরিচয় যাচাইয়ের জন্য।

তিনি জানান, ‘চাঁচোল থানা থেকে পরিচয় যাচাই করার পরে আমাকে ছেড়েছে। সাত দিন আটকে রেখেছিল সেক্টর ১০এ-তে একটা কমিউনিটি সেন্টারে।’

তিনি বলছেন, ‘আধার কার্ডসহ সব পরিচয়পত্র দেখিয়েছিলাম, কিন্তু কিছুই মানেনি পুলিশ। সাত দিন পরে আমাকে ছেড়েছে। কিন্তু কোনো কাগজপত্র কিছু দেয়নি। কোনো প্রমাণ নেই যে আমার পরিচয় ভেরিফাই করে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ।’

আনিসুর রহমান জানান, ‘এই অবস্থায় কোনো কাগজ ছাড়া আমি বাইরে বের হতেও ভয় পাচ্ছি; যদি আবার ধরে নিয়ে যায়।’

লিখিত কোন কিছু না দিলে পশ্চিমবঙ্গে গ্রামের বাড়ি চলে যাবেন বলে জানান তিনি।

তার সঙ্গে আটক হয়েছিলেন, এরকম চার জন ইতোমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে ফিরে এসেছেন।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত