অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনার ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে প্রস্তাবের ওপর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটির কথা ছিল সোমবার। তবে ভোটাভুটির আগে ফিলিস্তিনিদের পক্ষ থেকে এ প্রস্তাবকে ‘ঔপনিবেশিক পরিকল্পনা’ বলে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
রোববার ন্যাশনাল কমিশন ফর প্যালেস্টিনিয়ান পপুলার অ্যাকশন এক বিবৃতিতে জানায়, আমেরিকা গাজা শাসনের জন্য উপত্যকার বাইরে থেকে যে অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে, তা প্রকারান্তরে এক ধরনের ‘নতুন উপনিবেশবাদ’। গাজাবাসীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে এ ধরনের প্রশাসন চালু করার যদি চেষ্টা হয়, তবে তা স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের লঙ্ঘন হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, গাজার ভবিষ্যৎ স্থানীয় ফিলিস্তিনিরাই নির্ধারণ করবেন এবং এ ভূখণ্ডের ঐক্য ও ইসরাইলি আগ্রাসন প্রতিরোধের লড়াইয়ে তারাই নিরাপত্তা দেবেন। আন্তর্জাতিক আইনের অধীনেই ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা, প্রতিরোধ লড়াই ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার রয়েছে।
এদিকে রোববার ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনগুলোর এক যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েনে আমেরিকার খসড়া প্রস্তাবের মাধ্যমে এ ভূখণ্ডের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ফিলিস্তিনিদের পাশ কাটিয়ে বিদেশি অভিভাবকত্ব চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
বিবৃতিতে স্বাধীনতাকামী সংগঠনগুলো জানায়, গাজায় যেকোনো ধরনের মানবিক কার্যক্রম জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে যথাযথ ফিলিস্তিনি সংস্থার মাধ্যমে পরিচালনা করতে হবে। বিদেশিদের হাতে যদি মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালিত হয়, তবে এটিকে চাপ প্রয়োগকারী অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে। একইসঙ্গে তা ফিলিস্তিনি সংস্থা ও জাতিসংঘের ভূমিকাকে খাটো করবে।
বিবৃতিতে স্বাধীনতাকামী সংগঠনগুলো যে কোনো ধরনের অস্ত্র সমর্পণের প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অনুসারেই ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে গাজা বা অন্য যেকোনো স্থানের ফিলিস্তিনি জনগণের লড়াই করার অধিকার রয়েছে। শুধু ইসরাইলি দখলদারিত্বের অবসান ও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমেরিকার প্রস্তাবিত আন্তর্জাতিক বাহিনী তেল আবিবের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে ‘বাস্তবিকভাবে দখলদারদের স্বার্থ রক্ষা’ করতে পারে। যদি আন্তর্জাতিক কোনো মিশন প্রতিষ্ঠা করা হয়, তবে তাদের অবশ্যই আনুষ্ঠানিক ফিলিস্তিনি সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে বেসামরিক লোকদের সুরক্ষা, ত্রাণ সহায়তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব পালন করতে হবে।
গাজায় শান্তি রক্ষায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত আমেরিকার খসড়া প্রস্তাবের মধ্যে উপত্যকাটিতে বেসামরিক প্রশাসন প্রতিষ্ঠা, ত্রাণ সহায়তা প্রদান, পুনর্নির্মাণ কাজ শুরু ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বিষয় যুক্ত রয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, গাজায় গণহত্যাকে স্বাভাবিকীকরণ ও বিদেশি শাসন চাপিয়ে দিতেই এ পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এর মধ্যে যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। সোমবার উত্তর গাজার বাইত লাহিয়ায় ড্রোন হামলায় একজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া গাজা শহরের সুজাইইয়া মহল্লায় ড্রোন হামলায় আরেক শিশু নিহত হয়েছে। আগের দিন রোববার গাজায় ইসরাইলি হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন।


খুলনায় শেখবাড়িতে ফের আগুন ছাত্র-জনতার
মহানবী (সা.) কে নিয়ে কটূক্তির পর ক্ষমা চাইলেন জবি ছাত্রদল নেতা