যে কারণে শান্তিতে নোবেল পেলেন মারিয়া কোরিনা

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ৫২
আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ৫৬

ভেনেজুয়েলার বিশিষ্ট রাজনীতিক ও গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদো ২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার অর্জন করেছেন। নরওয়ের নোবেল কমিটি জানিয়েছে, ভেনেজুয়েলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তার অক্লান্ত পরিশ্রম এবং একনায়কতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে ন্যায়সঙ্গত ও শান্তিপূর্ণ উত্তরণ অর্জনের সংগ্রামের জন্য এই পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।

শুক্রবার নোবেল কমিটির বরাতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল-জাজিরাএক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনে বলা হয়, নোবেল কমিটি মাচাদোকে বেসামরিক সাহসের অসাধারণ উদাহরণ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তাদের মতে, তিনি এমন একজন সাহসী ও নিবেদিতপ্রাণ নারী, যিনি ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অন্ধকারের মধ্যেও গণতন্ত্রের শিখা জ্বালিয়ে রেখেছেন।

ভেনেজুয়েলায় বিরোধী জোটের অন্যতম ঐক্যবদ্ধ মুখ হিসেবে মাচাদো এমন সব রাজনৈতিক দলকে একত্রিত করেছেন, যারা একসময় গভীরভাবে বিভক্ত ছিলো। অবাধ নির্বাচন ও প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে তিনি দলগুলোকে সাধারণ লক্ষ্য ও কৌশলে ঐক্যবদ্ধ করেছেন।

দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে মাচাদো গণতান্ত্রিক উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন। সুমাতে নামে একটি নাগরিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তিনি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে কাজ শুরু করেন। তার লক্ষ্য ছিল একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলা, যেখানে সহিংসতা নয়, ভোটের মাধ্যমেই পরিবর্তন আসবে।

২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে মাচাদো বিরোধী জোটের রাষ্ট্রপতি প্রার্থী ছিলেন, তবে সরকার তার প্রার্থিতা বাতিল করে দেয়। এরপর তিনি বিরোধী দলের প্রতিনিধি এডমুন্ডো গনজালেজ উরুতিয়াকে সমর্থন করেন এবং নির্বাচনী স্বচ্ছতা রক্ষায় হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দিয়ে মাঠে নামান।

এছাড়াও নাগরিকদের হয়রানি, গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও তারা ভোট পর্যবেক্ষণ ও গণনার নথি সংরক্ষণে ভূমিকা রাখেন। এই প্রচেষ্টার ফলে বিরোধী জোট সরকারী বিকৃতি প্রতিরোধে সক্ষম হয়েছিল এবং প্রকৃত ফলাফল বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেছিল।

নোবেল কমিটির মতে, মাচাদো ও তার সহযোগীদের প্রচেষ্টা ছিল উদ্ভাবনী, শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক। তিনি প্রমাণ করেছেন যে গণতন্ত্র স্থায়ী শান্তির পূর্বশর্ত। কমিটি আরও উল্লেখ জানায় বর্তমান বিশ্বে গণতন্ত্র ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছে, আর কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা আইন ও নীতির শাসনকে চ্যালেঞ্জ করছে। এই প্রেক্ষাপটে মাচাদো লাতিন আমেরিকার বেসামরিক সাহসের অন্যতম উজ্জ্বল প্রতীক হিসেবে উঠে এসেছেন।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন মাচাদো ও এডমুন্ডো গনজালেজ উরুতিয়াকে শাখারভ মানবাধিকার পুরস্কার প্রদান করে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মতে, তারা স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য লড়াই করা ভেনেজুয়েলার জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত