কাস্টমসের লকার লুটের রহস্য উন্মোচন
কাওসার আলম
রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসের লকার থেকে ৫৫ কেজি স্বর্ণ উধাও হয়েছিল। এ ঘটনায় ২০২৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বিমানবন্দর থানায় চুরির মামলা করেন ঢাকা কাস্টম হাউসের এয়ারপোর্ট প্রিভেন্টিভ টিমের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন। কিন্তু এ ঘটনার তদন্তে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
মামলাটি তদন্ত করছিল থানা পুলিশ। পাশাপাশি বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গত ১০ সেপ্টেম্বর পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এতে সংস্থার তৎকালীন সদস্য (বর্তমানে আপিল ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট) ফারজানা আফরোজকে প্রধান করা হয়।
এ ঘটনায় সংস্থাটির তৈরি করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চুরি নয়, বরং স্বর্ণগুলো আত্মসাৎ করা হয়। আর এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন ঢাকা কাস্টম হাউসের আটজন। তারা হলেন- চার গুদাম কর্মকর্তা ও চার সিপাহি। পরস্পর যোগসাজশে চুরির নাটক সাজিয়ে তারা স্বর্ণ আত্মসাৎ করেন। এছাড়া প্রাথমিকভাবে ৫৫ দশমিক ৫৩ কেজি স্বর্ণ খোয়া যাওয়ার কথা বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে এর পরিমাণ ৬১ দশমিক ৮১৫ কেজি।
স্বর্ণ আত্মসাতের ঘটনায় জড়িত গুদাম কর্মকর্তারা হলেন- সাইদুল ইসলাম সাহেদ, শহিদুল ইসলাম, আকরাম শেখ ও মাসুম রানা। আর সিপাহিরা হলেন- রেজাউল করিম, মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন ও নিয়ামত হাওলাদার। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে তদন্ত কমিটি সুপারিশ করেছে।
তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তাদের সবাইকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক করে এবং বর্তমানে তারা সবাই জেলে আছেন। এ কারণে তাদের কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি বলে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সেই প্রতিবেদন আমার দেশ-এর হাতে এসেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ সেপ্টেম্বর তদন্ত কমিটি তাদের সুপারিশ এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের কাছে পেশ করেছে।
এদিকে স্বর্ণ উধাও হওয়ার ঘটনায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তাদের তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। দুদক এসব তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে আত্মসাতের মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এনবিআরের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই ধরনের স্বর্ণ আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা এবং জব্দের পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও বিচারাদেশ করা হয়নি- এমন স্বর্ণের বার ও স্বর্ণালংকার আত্মসাৎ করা হয়েছে। নিয়মানুযায়ী, বাজেয়াপ্ত করা স্বর্ণ বাংলাদেশ ব্যাংকে স্থায়ীভাবে জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও ২০২০ থেকে ২০২৩ সালে জমা দেওয়া হয়নি। এসব স্বর্ণের কোনো বৈধ দাবিদার না থাকার সুযোগে তারা সেগুলো আত্মসাৎ করেন।
স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকার মিলিয়ে মোট ৩৪ দশমিক ৫১৯ কেজি বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা না দিয়ে ট্রানজিট গুদামে রাখা হয়েছিল। মূলত কম গুরুত্ব পণ্যই ট্রানজিট গুদামে রাখা হয়। অন্যদিকে বিচারাদেশ করা হয়নি এ ধরনের ২৭ দশমিক ২৪১ কেজি স্বর্ণ আত্মসাৎ করা হয়েছে। সাধারণত আমদানিযোগ্য কিন্তু ঘোষণা দিয়ে করা হয়নি- এ ধরনের স্বর্ণ বা স্বর্ণালংকার জব্দ করে কাস্টমস। পরে যাত্রীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর শুল্ক পরিশোধ করে স্বর্ণ বা স্বর্ণালংকার ছাড় দেওয়া হয়।
যাত্রীর কাছে থেকে আটক করা স্বর্ণের ক্ষেত্রে কোনো আবেদন করা না হলে সংশ্লিষ্ট যাত্রীর প্রতি কারণ দর্শানোর নোটিস জারি করে বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে বিচারাদেশ করা হয়। আত্মসাৎ করা স্বর্ণের মধ্যে যেগুলোর ক্ষেত্রে আটকের দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পর বিচারাদেশ করা হয়নি, তা যাচাই করতে গিয়ে তদন্ত কমিটি দেখতে পায় এসব স্বর্ণের ক্ষেত্রে কোনো যাত্রী আবেদন করেনি। অর্থাৎ বৈধ কোনো দাবিদার না থাকার সুযোগ নিয়েছে আত্মসাৎকারীরা।
তদন্ত কমিটির মতে, চুরির ঘটনা ঘটলে এই বৈশিষ্ট্যের স্বর্ণ বা স্বর্ণালংকারের ক্ষেত্রে ঘটত না। সুতরাং এটি স্পষ্টত আত্মসাতের ঘটনা।
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ছয়টি ডিএমের (ডিটেনশন মেমো) বিপরীতে ভিজিআর রেজিস্টারে স্বর্ণ বা স্বর্ণালংকার বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানোর সিলমোহর দেওয়া থাকলেও প্রকৃতপক্ষে সেটি করা হয়নি। ছয়টি ডিএমের মাধ্যমে মোট ২ দশমিক ৩১ কেজি স্বর্ণ বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে পাঠানো হয়েছে- এমন অসত্য তথ্য দেওয়া হয়েছে।
গুদাম কর্মকর্তা সাইদুল ও শহিদুল তাদের আগের গুদাম কর্মকর্তা জুয়েল চক্রবর্তীর কাছ থেকে ডিএমের মাধ্যমে স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকার বুঝিয়ে নিয়েছেন। পরে সাইদুল ও শহিদুল একইভাবে তাদের আগের গুদাম কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত আকরাম শেখ ও মাসুম রানাকে ৬টি ডিএমের স্বর্ণ বা স্বর্ণালংকার দালিলিকভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু তা পাওয়া যায়নি এবং রেজিস্ট্রারে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া সংক্রান্ত সিলমোহর দেওয়া আছে। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকের জাল সিল ব্যবহার করে উল্লেখিত ৪ গুদাম কর্মকর্তা স্বর্ণ আত্মসাৎ করেন। স্বর্ণ আত্মসাতে জালিয়াতির আশ্রয় নেন তারা।
তদন্ত প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ১ আগস্ট বিমানবন্দরে কর্মরত গুদাম কর্মকর্তা সাইদুল ও শহিদুলকে বদলি করে তাদের স্থলে আকরাম শেখ ও মাসুম রানাকে পদায়ন করা হয়। পদায়ন আদেশে পরবর্তী সাত কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রীয় গুদামের পণ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। বদলি করা দুই কর্মকর্তা ১৭ আগস্ট নবনিযুক্ত দুই কর্মকর্তাকে দায়িত্বভার বুঝিয়ে দেন। এতে স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকার বুঝিয়ে দেওয়ার তথ্য আছে।
গত ২২ আগস্ট নবযোগদান করা দুই কর্মকর্তা (আকরাম ও মাসুম) দায়িত্ব হস্তান্তর করা স্বর্ণগুলোর মধ্যে ছয়টি ডিএমের পণ্য খুঁজে পাচ্ছেন না মর্মে ঢাকা কাস্টম হাউসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। এরপর সাইদুল ও শহিদুল সাত কার্যদিবসের মধ্যে স্বর্ণ বুঝিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করেন। গুদামের স্বর্ণ বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ফের গুদাম কর্মকর্তা হিসেবে পদায়ন করা হয়। এরপর ঢাকা কাস্টমসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে ট্রানজিট গুদাম পরিদর্শন করেন। তখন চার গুদাম কর্মকর্তা স্বর্ণ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এরপর ছয়টি ডিএমভুক্ত পণ্য ২৭ আগস্ট প্রযোজ্য শুল্ক কর পরিশোধ করে সংশ্লিষ্ট যাত্রীকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এ ঘটনা থেকে এটি প্রতীয়মান হয় যে, প্রাথমিকভাবে ছয়টি ডিএম এর পণ্য সরিয়ে নিয়েছেন কিংবা নিজের কাছে রেখেছেন এবং বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় পুনরায় সেগুলো খুঁজে পেয়ে কিংবা নতুন করে সংগ্রহ করে হিসাব মিলিয়ে রাখার অপচেষ্টা করেছেন। ঢাকা কাস্টমস হাউস কর্তৃপক্ষ গুদাম ইনভেন্টরি করার জন্য ৪৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে। ইনভেন্টরির মাধ্যমে প্রায় ৬২ কেজি স্বর্ণের খোঁজ পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আকরাম ও মাসুম ছয়টি ডিএমের পণ্য খুঁজে না পাওয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন, কিন্তু অন্য ডিএমের ব্যাপারে কোনো আপত্তি করেননি।
এনবিআরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- বিমানবন্দরে ট্রানজিট ও মূল্যবান পণ্য গুদামে ৪ সিপাহি (রেজাউল, মোজাম্মেল, আফজাল ও নিয়ামত) তাদের ওপর অর্পিত তল্লাশির দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেননি। তারা তাদের ওপর দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করলে গুদাম থেকে স্বর্ণসহ যে কোনো পণ্য বের করা বা প্রবেশ করানো সম্ভব হতো না।
রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসের লকার থেকে ৫৫ কেজি স্বর্ণ উধাও হয়েছিল। এ ঘটনায় ২০২৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বিমানবন্দর থানায় চুরির মামলা করেন ঢাকা কাস্টম হাউসের এয়ারপোর্ট প্রিভেন্টিভ টিমের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন। কিন্তু এ ঘটনার তদন্তে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
মামলাটি তদন্ত করছিল থানা পুলিশ। পাশাপাশি বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গত ১০ সেপ্টেম্বর পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এতে সংস্থার তৎকালীন সদস্য (বর্তমানে আপিল ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট) ফারজানা আফরোজকে প্রধান করা হয়।
এ ঘটনায় সংস্থাটির তৈরি করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চুরি নয়, বরং স্বর্ণগুলো আত্মসাৎ করা হয়। আর এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন ঢাকা কাস্টম হাউসের আটজন। তারা হলেন- চার গুদাম কর্মকর্তা ও চার সিপাহি। পরস্পর যোগসাজশে চুরির নাটক সাজিয়ে তারা স্বর্ণ আত্মসাৎ করেন। এছাড়া প্রাথমিকভাবে ৫৫ দশমিক ৫৩ কেজি স্বর্ণ খোয়া যাওয়ার কথা বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে এর পরিমাণ ৬১ দশমিক ৮১৫ কেজি।
স্বর্ণ আত্মসাতের ঘটনায় জড়িত গুদাম কর্মকর্তারা হলেন- সাইদুল ইসলাম সাহেদ, শহিদুল ইসলাম, আকরাম শেখ ও মাসুম রানা। আর সিপাহিরা হলেন- রেজাউল করিম, মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন ও নিয়ামত হাওলাদার। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে তদন্ত কমিটি সুপারিশ করেছে।
তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তাদের সবাইকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক করে এবং বর্তমানে তারা সবাই জেলে আছেন। এ কারণে তাদের কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি বলে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সেই প্রতিবেদন আমার দেশ-এর হাতে এসেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ সেপ্টেম্বর তদন্ত কমিটি তাদের সুপারিশ এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের কাছে পেশ করেছে।
এদিকে স্বর্ণ উধাও হওয়ার ঘটনায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তাদের তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। দুদক এসব তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে আত্মসাতের মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এনবিআরের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই ধরনের স্বর্ণ আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা এবং জব্দের পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও বিচারাদেশ করা হয়নি- এমন স্বর্ণের বার ও স্বর্ণালংকার আত্মসাৎ করা হয়েছে। নিয়মানুযায়ী, বাজেয়াপ্ত করা স্বর্ণ বাংলাদেশ ব্যাংকে স্থায়ীভাবে জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও ২০২০ থেকে ২০২৩ সালে জমা দেওয়া হয়নি। এসব স্বর্ণের কোনো বৈধ দাবিদার না থাকার সুযোগে তারা সেগুলো আত্মসাৎ করেন।
স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকার মিলিয়ে মোট ৩৪ দশমিক ৫১৯ কেজি বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা না দিয়ে ট্রানজিট গুদামে রাখা হয়েছিল। মূলত কম গুরুত্ব পণ্যই ট্রানজিট গুদামে রাখা হয়। অন্যদিকে বিচারাদেশ করা হয়নি এ ধরনের ২৭ দশমিক ২৪১ কেজি স্বর্ণ আত্মসাৎ করা হয়েছে। সাধারণত আমদানিযোগ্য কিন্তু ঘোষণা দিয়ে করা হয়নি- এ ধরনের স্বর্ণ বা স্বর্ণালংকার জব্দ করে কাস্টমস। পরে যাত্রীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর শুল্ক পরিশোধ করে স্বর্ণ বা স্বর্ণালংকার ছাড় দেওয়া হয়।
যাত্রীর কাছে থেকে আটক করা স্বর্ণের ক্ষেত্রে কোনো আবেদন করা না হলে সংশ্লিষ্ট যাত্রীর প্রতি কারণ দর্শানোর নোটিস জারি করে বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে বিচারাদেশ করা হয়। আত্মসাৎ করা স্বর্ণের মধ্যে যেগুলোর ক্ষেত্রে আটকের দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পর বিচারাদেশ করা হয়নি, তা যাচাই করতে গিয়ে তদন্ত কমিটি দেখতে পায় এসব স্বর্ণের ক্ষেত্রে কোনো যাত্রী আবেদন করেনি। অর্থাৎ বৈধ কোনো দাবিদার না থাকার সুযোগ নিয়েছে আত্মসাৎকারীরা।
তদন্ত কমিটির মতে, চুরির ঘটনা ঘটলে এই বৈশিষ্ট্যের স্বর্ণ বা স্বর্ণালংকারের ক্ষেত্রে ঘটত না। সুতরাং এটি স্পষ্টত আত্মসাতের ঘটনা।
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ছয়টি ডিএমের (ডিটেনশন মেমো) বিপরীতে ভিজিআর রেজিস্টারে স্বর্ণ বা স্বর্ণালংকার বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানোর সিলমোহর দেওয়া থাকলেও প্রকৃতপক্ষে সেটি করা হয়নি। ছয়টি ডিএমের মাধ্যমে মোট ২ দশমিক ৩১ কেজি স্বর্ণ বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে পাঠানো হয়েছে- এমন অসত্য তথ্য দেওয়া হয়েছে।
গুদাম কর্মকর্তা সাইদুল ও শহিদুল তাদের আগের গুদাম কর্মকর্তা জুয়েল চক্রবর্তীর কাছ থেকে ডিএমের মাধ্যমে স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকার বুঝিয়ে নিয়েছেন। পরে সাইদুল ও শহিদুল একইভাবে তাদের আগের গুদাম কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত আকরাম শেখ ও মাসুম রানাকে ৬টি ডিএমের স্বর্ণ বা স্বর্ণালংকার দালিলিকভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু তা পাওয়া যায়নি এবং রেজিস্ট্রারে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া সংক্রান্ত সিলমোহর দেওয়া আছে। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকের জাল সিল ব্যবহার করে উল্লেখিত ৪ গুদাম কর্মকর্তা স্বর্ণ আত্মসাৎ করেন। স্বর্ণ আত্মসাতে জালিয়াতির আশ্রয় নেন তারা।
তদন্ত প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ১ আগস্ট বিমানবন্দরে কর্মরত গুদাম কর্মকর্তা সাইদুল ও শহিদুলকে বদলি করে তাদের স্থলে আকরাম শেখ ও মাসুম রানাকে পদায়ন করা হয়। পদায়ন আদেশে পরবর্তী সাত কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রীয় গুদামের পণ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। বদলি করা দুই কর্মকর্তা ১৭ আগস্ট নবনিযুক্ত দুই কর্মকর্তাকে দায়িত্বভার বুঝিয়ে দেন। এতে স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকার বুঝিয়ে দেওয়ার তথ্য আছে।
গত ২২ আগস্ট নবযোগদান করা দুই কর্মকর্তা (আকরাম ও মাসুম) দায়িত্ব হস্তান্তর করা স্বর্ণগুলোর মধ্যে ছয়টি ডিএমের পণ্য খুঁজে পাচ্ছেন না মর্মে ঢাকা কাস্টম হাউসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। এরপর সাইদুল ও শহিদুল সাত কার্যদিবসের মধ্যে স্বর্ণ বুঝিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করেন। গুদামের স্বর্ণ বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ফের গুদাম কর্মকর্তা হিসেবে পদায়ন করা হয়। এরপর ঢাকা কাস্টমসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে ট্রানজিট গুদাম পরিদর্শন করেন। তখন চার গুদাম কর্মকর্তা স্বর্ণ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এরপর ছয়টি ডিএমভুক্ত পণ্য ২৭ আগস্ট প্রযোজ্য শুল্ক কর পরিশোধ করে সংশ্লিষ্ট যাত্রীকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এ ঘটনা থেকে এটি প্রতীয়মান হয় যে, প্রাথমিকভাবে ছয়টি ডিএম এর পণ্য সরিয়ে নিয়েছেন কিংবা নিজের কাছে রেখেছেন এবং বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় পুনরায় সেগুলো খুঁজে পেয়ে কিংবা নতুন করে সংগ্রহ করে হিসাব মিলিয়ে রাখার অপচেষ্টা করেছেন। ঢাকা কাস্টমস হাউস কর্তৃপক্ষ গুদাম ইনভেন্টরি করার জন্য ৪৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে। ইনভেন্টরির মাধ্যমে প্রায় ৬২ কেজি স্বর্ণের খোঁজ পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আকরাম ও মাসুম ছয়টি ডিএমের পণ্য খুঁজে না পাওয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন, কিন্তু অন্য ডিএমের ব্যাপারে কোনো আপত্তি করেননি।
এনবিআরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- বিমানবন্দরে ট্রানজিট ও মূল্যবান পণ্য গুদামে ৪ সিপাহি (রেজাউল, মোজাম্মেল, আফজাল ও নিয়ামত) তাদের ওপর অর্পিত তল্লাশির দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেননি। তারা তাদের ওপর দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করলে গুদাম থেকে স্বর্ণসহ যে কোনো পণ্য বের করা বা প্রবেশ করানো সম্ভব হতো না।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে বিভিন্ন মেরূকরণ। এ নির্বাচনে কোন দল ক্ষমতায় আসবে, কোন দল কার সঙ্গে সমঝোতা বা জোট করে ভোট করবেÑএসব বিষয় নিয়ে আলোচনা ও তৎপরতাও জোরদার হচ্ছে। বিশেষ করে ইসলামি দলগুলোকে নিয়ে সাধারণ ভোটারদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মহলে বিশেষ আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
১৫ ঘণ্টা আগেনীলের দেশখ্যাত নীলফামারী দীর্ঘদিন শোষণ করেছিল ইংরেজরা। তাদের স্থানীয় নিপীড়ক নীলকরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিলেন উত্তরের এই জেলার চাষিরা। ২০০ বছর পর সেই নিষ্ঠুর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করেন আওয়ামী ‘কসাই’খ্যাত আসাদুজ্জামান নূর।
২০ ঘণ্টা আগেআগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনায় জেলা প্রশাসকদেরই (ডিসি) রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ হিসেবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার দুজন বিভাগীয় কমিশনার এবং ৬৪ জন ডিসিসহ ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে।
২ দিন আগেবছরের প্রায় ১০ মাস পার হলেও মাধ্যমিক স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ শুরু হয়নি। এমনকি পাঠ্যবইয়ের কনটেন্টও পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি; এখনো চলছে পরিবর্তন-পরিমার্জনের কাজ। এছাড়া ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনও মেলেনি এখনো।
২ দিন আগে