আহত অধিকাংশের মাথা-পিঠে জখম
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) সংলগ্ন জোবরা গ্রামবাসী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুদিন ধরে চলা সংঘর্ষের ঘটনায় শত শত শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালসহ আশপাশের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। আহতের সংখ্যা দুই শতাধিক বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়েছে।
চমেক হাসপাতালে রোববার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দেখা যায়, চবির ৭৮ জন ভর্তি আছেন। এছাড়া বেসরকারি হাসপাতালে ১০০ জন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২২ জন চিকিৎসাধীন। চমেকে যাওয়া শিক্ষার্থীদের অধিকাংশের মাথায় জখম আছে। কেউ কেউ পিট, বুক ও হাতে আঘাত পেয়েছেন। আহতরা চমেক হাসপাতালের ২৫, ২৬, ২৭ ও ক্যাজুয়াল্টি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। বেসরকারি ন্যাশনাল হাসপাতালের আইসিইউতে থাকা শিক্ষার্থীর নাম নাইমুর রহমান। তিনি ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র। অপরজন পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনালের তসলিম উদ্দিন আমার দেশকে বলেন, চবির ৭৮ শিক্ষার্থী চমেকে ভর্তি আছেন। তাদের অধিকাংশই মাথায় আঘাত পেয়েছেন। সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
চবির স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী রাজন দাবি করেন, শনিবার রাত ও রোববার দুপুরে হাটহাজারী বাজার থেকে ট্রাকে করে অস্ত্র আনা হয়। আমাদের কাছে তখনই খবর আসে, ওই ট্রাকটি চাপাতি, দা, কিরিচ, বঁটি, রামদায় পূর্ণ ছিল। এসব অস্ত্র দিয়ে বিভিন্ন বয়সের সন্ত্রাসীরা হামলা করে। হামলায় যারা অংশ নেয় তাদের অধিকাংশই অপরিচিত।
তিনি আরো জানান, আমরা সাধারণত চবি এলাকার আশপাশের মানুষদের সঙ্গে পরিচিত। কিন্তু যারা হামলা করেছে তারা একেবারে বাইরের। সন্ত্রাসীরা শিক্ষার্থীদের মারতে মারতে ধানের জমিতে নামিয়েও কোপায়। অনেক শিক্ষার্থীকে তাদের বাসার ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়। বাসার মালিকরা কিছুই বলেননি। কাউকে কাউকে বাসার পড়ার টেবিল থেকে ধরে এনে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। শরীরে পাথর নিক্ষেপ করা হয়। তারা ভাবতেও পারেনি অধ্যয়নরত অবস্থায় রক্তাক্ত হতে হবে।
চবির আইইআর বিভাগের শিক্ষার্থী আরেফিন ইসলাম বলেন, দেশকে অস্থিতিশীল করতে এসব করা হচ্ছে। চাকসু নির্বাচন পেছাতেও এটি করা হতে পারে। নুরুল হক নুরের ওপর হামলার পর এটি আরেকটি পরিকল্পিত ঘটনা।
জেলা সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, চমেক হাসপাতালে ৭৮ জন, পার্কভিউ হাসপাতালে ২৪ জন এবং অন্যান্য হাসপাতালে বেশ কয়েকজনকে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে জেলা সিভিল সার্জন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে।