জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার রায় আজ সোমবার ঘোষণা হচ্ছে। গোটা জাতিই রয়েছে রায়ের অপেক্ষায়। গণহত্যার দায়ে সরকারের সর্বোচ্চ পদধারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশের ইতিহাসে এটিই হবে প্রথম বিচারের রায়।
তবে এই মামলা ছাড়াও আরো বেশ কিছু মামলা আছে হাসিনার বিরুদ্ধে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত সারা দেশে আদালত ও থানায় ৫৮৬টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তদন্তাধীন আরো চারটি মামলা।
অপহরণ, হত্যাচেষ্টা ও সহিংসতার মামলায় শেখ হাসিনাকে নির্দেশদাতা, হুকুমদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে প্রধান আসামি করা হয়েছে। ৫৮৬টি মামলার মধ্যে ৩২৪টি হত্যা মামলা। এর মধ্যে দুদকের মামলা রয়েছে ছয়টি।
এছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় জমা পড়েছে আরো অর্ধশত অভিযোগ। এর মধ্যে পিরোজপুরের সুখরঞ্জন বালি, মাইকেল চাকমা, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদসহ বিএনপির করা একাধিক অভিযোগ রয়েছে, যা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এসব অভিযোগে তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সত্যতা মিললে মামলায় রূপান্তর হবে।
তবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় মামলা দায়ের এখনও অব্যাহত। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম মামলা করা হয় গত বছর ১৩ আগস্ট। আবু সাঈদ হত্যার অভিযোগে মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ মামলার তদন্ত করছে।
সম্প্রতি পুলিশ সদর দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর জুলাই-আগস্ট আন্দোলন-পরবর্তী সারা দেশে ১ হাজার ৬১২টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, হামলা, ভাঙচুর, মারধর, অগ্নিসংযোগ, ভয়ভীতি প্রদর্শন, লুটপাট, চাঁদাবাজি ও দখলবাজির অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে হত্যা মামলা হয়েছে ৫৯৯টি এবং অন্যান্য মামলা হয়েছে এক হাজার তিনটি।
এর মধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকাসহ সারা দেশের থানা ও আদালতে ৩২৪টি হত্যা মামলাসহ ৫৮০টি মামলা দায়ের হয়েছে। আদালত অবমাননার অভিযোগে একটি মামলায় গত ২ জুলাই শেখ হাসিনাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।