হোম > বিশ্ব

গাজায় নিহত কে এই ইসরাইলি ‘দোসর’ আবু শাবাব?

আমার দেশ অনলাইন

ছবিতে ইয়াসের আবু শাবাব

গাজা উপত্যকার রাফা এলাকায় ইসরাইল সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী পপুলার ফ্রন্টের প্রধান ইয়াসের আবু শাবাব নিহত হয়েছেন। ইসরাইলি গণমাধ্যম বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) তার মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে। হামাসবিরোধী অবস্থানের কারণে তাকে দীর্ঘদিন ধরেই ইসরাইলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে বিবেচনা করা হতো। তবে ফিলিস্তিনিদের চোখে তিনি ছিলেন একজন ‘দোসর’ ও অপরাধী।

২০২৩ সালে হামাস–ইসরাইল যুদ্ধ শুরু হলে মাদক–সংক্রান্ত অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত ইয়াসের আবু শাবাব কারাগার থেকে পালিয়ে গিয়ে রাফায় ইসরাইলের হয়ে কাজ শুরু করেন। তার বিরুদ্ধে ত্রাণ চুরিসহ নানা অভিযোগও ছিল। ৩০ বছর বয়সী আবু শাবাব দক্ষিণ গাজার বেদুইন গোত্র তারাবিনের সদস্য। গত বছর পর্যন্ত গাজায় তিনি তেমন পরিচিত ছিলেন না। পরে “অ্যান্টি-টেরর সার্ভিস” নামে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিয়ে আবির্ভূত হন। পরে যার নাম হয় “পপুলার ফোর্সেস”। ইসরাইল-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সক্রিয় অন্তত শতাধিক সদস্যের এই গ্রুপটি নিজেদের হামাসবিরোধী জাতীয়তাবাদী বাহিনী হিসেবে পরিচয় দিত।

তবে গাজার অনেকেই তাদের দেখতেন অপরাধী চক্র ও ইসরাইলি প্রক্সির মাঝামাঝি একটি দল হিসেবে। কারণ, আবু শাবাবের অতীত ছিল অপরাধে পরিপূর্ণ—ড্রাগ-সংক্রান্ত অভিযোগে তিনি গাজায় বহু বছর কারাবন্দী ছিলেন। যুদ্ধের শুরুতে তিনি কারাগার থেকে পালিয়ে যান এবং পরে ইসরাইলের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন—যা অধিকাংশ ফিলিস্তিনির কাছে অগ্রহণযোগ্য। এমনকি তার নিজ গোত্রও এক বিবৃতিতে তার মৃত্যুতে বলেছে, এটি “গোত্রের ইতিহাসে এক অন্ধকার অধ্যায়ের সমাপ্তি”।

অস্পষ্ট মতাদর্শ

আবু শাবাবের রাজনৈতিক অবস্থান কখনও স্পষ্ট ছিল না। অনেক পর্যবেক্ষকের মতে, তিনি আদর্শের চেয়ে ক্ষমতা ও প্রভাবের প্রতি বেশি আগ্রহী ছিলেন। সিনাই অঞ্চল থেকে গাজায় পণ্য ও অস্ত্র পাচারের সঙ্গে তার নাম জড়ালেও তা আদর্শিক নয়, বরং স্বার্থসংশ্লিষ্ট সহযোগিতা হিসেবে বিবেচিত হয়।

তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে উপস্থিতিও ছিল অনেকটা অস্বাভাবিক। এমনকি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে একটি মতামত লেখায় তিনি দাবি করেছিলেন যে তার বাহিনী রাফাহর পূর্বাঞ্চলের বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে এবং “নতুন ভবিষ্যৎ গড়তে প্রস্তুত”। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু পরে স্বীকার করেন যে তারা হামাসবিরোধী লড়াইয়ে স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো—মূলত আবু শাবাবের বাহিনী—কে ব্যবহার করছে।

সহায়তার নামে লুটপাট

পপুলার ফোর্সেস নিজেদের মানবিক সহায়তা বিতরণে নিয়োজিত হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করলেও তাদের বিরুদ্ধে লুটপাটের অভিযোগ বাড়তে থাকে। একটি জাতিসংঘের অভ্যন্তরীণ নথিতে আবু শাবাবকে “ব্যাপক ও সংগঠিত লুটপাটের প্রধান ব্যক্তি” হিসেবে উল্লেখ করা হয়। গাজার নিরাপত্তা সূত্রও জানায়, ইসরাইল-সমর্থিত এই বাহিনী বহু সহায়তা কনভয় থেকে মালপত্র লুট করেছে।

ইসরাইলি অবরোধ ও অবকাঠামো ধ্বংসে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষের সময় এসব অভিযোগ তাকে গাজার মানুষের কাছে আরও অজনপ্রিয় করে তোলে।

বিতর্কিত অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি

আবু শাবাবের মৃত্যুর ঘটনা এখনো রহস্যে ঘেরা। তবে হামাসের বিকল্প নেতৃত্ব গড়ে তোলার মতো জনপ্রিয়তা বা প্রভাব তিনি কখনোই অর্জন করতে পারেননি। ফলে অনেকের মতে, তার পরিণতি সময়ের অপেক্ষা ছিল মাত্র। গাজার বেশিরভাগ মানুষ—এমনকি হামাসবিরোধীরাও—তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছেন না। তার জীবন ও মৃত্যু ফিলিস্তিনি রাজনীতির অন্ধকার, জটিল এবং বহিরাগত প্রভাবিত বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

তথ্যসূত্র: আল জাজিরা

এসআর

বাংলাদেশি-পাকিস্তানি ভর্তি বন্ধ হচ্ছে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে

সরকারের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও প্রাথমিকে আন্দোলন

চাকরি প্রত্যাশীদের অর্থ লেনদেন বিষয়ে সতর্ক করল ইউজিসি

সীমান্তে হত্যা বন্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান চাকসুর

বিজয়ের মাস উদযাপনে ঢাবি প্রশাসনের উদাসীনতার অভিযোগ ছাত্রশক্তির

স্কুলে ভর্তিতে শিক্ষার্থীদের বয়স নিয়ে মাউশির জরুরি নির্দেশনা

ডিআইএ‘র তদন্তে ১১৭২ শিক্ষকের সনদ জাল সনাক্ত

গাকৃবিতে আন্তঃঅনুষদীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার ফাইনাল অনুষ্ঠিত

জালিয়াতি করে নিয়োগ, আওয়ামীপন্থি শিক্ষককে চাকরিচ্যুতির সুপারিশ

চবিতে আবারো ভুয়া শিক্ষার্থী আটক