মেডিকেল ভর্তি নীতিমালা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি)। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, এবার ১০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পাশাপাশি এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএ মোট ১০০ নম্বরের হিসাবে নির্ধারণ করা হবে। একই দিনে অভিন্ন প্রশ্নে এবার এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষা হতে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিএমডিসির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ডা. মো. লিয়াকত হোসেনের সই করা নীতিমালায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ওয়েবসাইটে এ প্রকাশ করা হয়।
নীতিমালা অনুযায়ী, এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ এবং জাতীয় ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধা তালিকা তৈরি করে শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ মোট ১০০ নম্বর হিসাবে নির্ধারণ করা হবে।
এ ক্ষেত্রে এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএর ৮ গুণ এবং এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএর ১২ গুণ এবং ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের যোগফলের ভিত্তিতে মেধা তালিকা তৈরি করা হবে।
তবে সেকেন্ড টাইমার (দ্বিতীয়বার) প্রার্থীদের ক্ষেত্রে সর্বমোট প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৩ নম্বর এবং পূর্ববর্তী বছরে সরকারি মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ বা ডেন্টাল ইউনিটে ভর্তিকৃত প্রার্থীর ক্ষেত্রে সর্বমোট প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৫ নম্বর কেটে মেধা তালিকায় অবস্থান নির্ধারণ করা হবে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তির জন্য একইসঙ্গে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সে জাতীয় ভর্তি পরীক্ষা হবে। ইংরেজি মাধ্যমে উত্তীর্ণ এবং ইংরেজি মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আগ্রহী প্রার্থীদের জন্য ইংরেজিতে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করতে হবে।
এইচএসসি বা সমমান সিলেবাস অনুযায়ী ১০০টি প্রশ্নে লিখিত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলেও উল্লেখ রয়েছে নীতিমালায়।
এতে বলা হয়েছে, প্রতিটি প্রশ্নের মান থাকবে ১। বিষয়ভিত্তিক বিভাজন যথাক্রমে- জীববিজ্ঞান ৩০, রসায়ন ২৫, পদার্থবিজ্ঞান ১৫, ইংরেজি ১৫ এবং সাধারণ জ্ঞান, প্রবণতা ও মানবিক গুণাবলী মূল্যায়ন ১৫ নম্বর।
সব মিলিয়ে ৪০ নম্বরে পাস মার্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি ভুল উত্তর দেওয়ার জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা যাবে। পরীক্ষার সময় ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট।
এছাড়াও নীতিমালা অনুযায়ী, বাংলাদেশি আবেদনকারীকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমান দুটি পরীক্ষায় মোট জিপিএ কমপক্ষে ৮.৫০ নিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে। এককভাবে কোনো পরীক্ষায় জিপিএ-৪.০০-এর কম থাকলে আবেদনের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার পাশাপাশি এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগসহ পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান পাঠ্য থাকতে হবে। একই সাথে জীববিজ্ঞানে কমপক্ষে ৩.৫০ জিপিএ থাকতে হবে।
সরকারি মেডিকেলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের আবেদনের ক্ষেত্রে এসএসসি (যে দেশে এসএসসি পর্যায়ে পাবলিক পরীক্ষা নেই, সে দেশের ক্ষেত্রে দশম শ্রেণি) এবং এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ ৫.০০ স্কেলে সর্বনিম্ন মোট জিপিএ ৮.৫০ পয়েন্ট এবং জীববিজ্ঞানে জিপিএ ৩.৫০ পয়েন্ট থাকতে হবে। এককভাবে কোনো পরীক্ষায় জিপিএ ৪.০০ পয়েন্টের কম থাকলে আবেদনের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির জন্য বিদেশি শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে এসএসসি (যে দেশে এসএসসি পর্যায়ে পাবলিক পরীক্ষা নেই সে দেশের ক্ষেত্রে দশম শ্রেণি) এবং এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় সর্বনিম্ন মোট জিপিএ ৭.০০ পয়েন্ট এবং জীববিজ্ঞানে জিপিএ ৩.৫০ পয়েন্ট থাকতে হইবে। তবে এককভাবে কোনো পরীক্ষায় জিপিএ ৩.৫০ পয়েন্টের কম থাকলে আবেদনের অযোগ্য বলে বিবেচিত হইবে।
তবে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী অর্থাৎ সকল উপজাতীয় ও পার্বত্য জেলার অ-উপজাতীয় প্রার্থীদের ক্ষেত্রে এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় প্রার্থীর জন্য জিপিএ ৮.০০ নির্ধারণ করা হয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, ২০২৪ ও ২০২৫ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। তবে ২০২২ সালের পূর্বে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা অংশ নিতে পারবেন না।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, ‘ও’ লেভেল বা ‘এ’ লেভেল অথবা বিদেশি শিক্ষাব্যবস্থায় সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদেরকে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে তাদের নম্বরপত্র সমতাকরণ করতে হবে।