লেনদেনে স্বচ্ছতা, দ্রুততা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ‘লেনদেন হচ্ছে ক্যাশলেস, এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ ইনিশিয়েটিভ’ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা সারাদেশে সম্প্রসারণ ও নগদ অর্থের ব্যবহার কমানোর লক্ষ্যে এ সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে সার্বিক সহযোগিতা করে ডাচ-বাংলা ব্যাংক পিএলসি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগের পরিচালক রাফেজা আক্তার কান্তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক জি. এম. মুজিবর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক ময়মনসিংহ কার্যালয়ের পরিচালক জয়দেব চন্দ্র বণিক এবং ডাচ-বাংলা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিফ অপারেটিং অফিসার আবেদুর রহমান সিকদার। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী সেমিনারে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের ভিডিও বার্তা প্রদর্শন করা হয়। তিনি বলেন, ‘অনলাইন বা মোবাইল লেনদেন এখনো দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছায়নি। ফলে আমরা এখনও পুরোপুরি ক্যাশলেস বাংলাদেশে পৌঁছাতে পারিনি। একজন বিকাশ ব্যবহার করলেও তিনি দোকান থেকে ক্যাশ টাকা তোলেন, আবার সেই ক্যাশ টাকাই বিকাশে জমা দেন। আমরা চাই, নগদ টাকা না তুলে ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যমে রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ে লেনদেন করা হোক।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক জুয়েল মজুমদার জাতীয় পর্যায়ে ক্যাশ টাকা ব্যবহারের অসুবিধা, ক্যাশলেস বাংলাদেশের প্রয়োজনীয়তা, সুযোগ-সুবিধা, ডিজিটাল ব্যাংকিং ইকোসিস্টেম অর্থাৎ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহন ও বাসাবাড়ির ইউটিলিটি বিলসহ প্রয়োজনীয় সকল ক্ষেত্রে ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করেন। এসময় মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম ব্যাবহারের কৌশল এবং এর মূল সীমাবদ্ধতা, মোবাইল ব্যাংকিংয়ে প্রতারণা এবং এটি থেকে উত্তরণের জন্যে নীতিগত উদ্যোগগুলো নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাকৃবির কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক জি এম মুজিবর রহমান বলেন, 'বাংলাদেশের কাগজের মুদ্রাটি অত্যন্ত নোংরা যেখানে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মুদ্রাগুলো নতুনের মতো। এর মাধ্যমে অনেক রোগ-জীবানুও ছড়াচ্ছে। মুদ্রা তৈরির খরচ বেশি হওয়ার কারণেই এই সমস্যাটি হয়েছে। বাকৃবি ক্যাম্পাসকে ক্যাশলেস ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ক্যাম্পাসের সকলকে আমি আহ্বান করছি। তবে অনলাইন লেনদেনে প্রতারণার যে বিষয়টা সেটিতে সুরক্ষা প্রদানের বিষয়ে ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও সতর্ক হতে হবে।'
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে ব্যাংকের কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা ক্যাশলেস সিস্টেম নিয়ে তাদের প্রশ্নগুলো তুলে ধরেন এবং ব্যাংকের কর্মকর্তাবৃন্দ তাদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগের পরিচালক রাফেজা আক্তার কান্তা বলেন, আমরা সারাদেশে বাংলা কিউআর কোড ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি যাতে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ ডিজিটাল লেনদেন করতে পারেন। আমরা মনে করি 'কাস্টমার ইজ দ্যা কি'। তাই সকলের কথা চিন্তা করে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক কম মূল্যে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছে।