রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শুক্রবার সকালে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া ঢাকা বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ভবনে ফাটল ধরেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে আছে।
বিশেষজ্ঞ সৈয়দ হুমায়ুন আখতার একটি গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সঙ্গে ২০০৩ সাল থেকে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। যেহেতু বাংলাদেশ তিনটি প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত এবং প্লেটগুলোর ত্রিমাত্রিক গতি নির্ণয় করার জন্য আমরা জিপিএস স্থাপন করি। এর মাধ্যমে আমরা ১৪ বছরের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে প্লেটের গতির পরিমাপ নির্ণয় করি।
তিনি বলেন, প্রতিটি প্লেট এক স্থান থেকে আরেক স্থানে প্রতি বছর সরে যাচ্ছে। প্লেটগুলো কোন দিকে যাচ্ছে, দুটি প্লেটের সংযোগ বা পরস্পরমুখী যে গতি এবং সাবডাকশন জোনে প্রতি বছর কী পরিমাণ শক্তি সঞ্চিত হচ্ছে, সেটিও আমরা পরিমাণ করি। এগুলো পরিমাপ করে আমরা ২০১৬ সালে প্রতিবেদন প্রকাশ করি।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সিলেট থেকে কক্সবাজার অঞ্চলে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার শক্তিসম্পন্ন ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার মতো শক্তি জমা হয়ে আছে। যে কোনো সময় এ শক্তি বের হয়ে আসতে পারে। এ শক্তি একবারে বের হতে পারে আবার ধীরে ধীরেও বের হতে পারে।
তবে, পৃথিবীর বিভিন্ন সাবডাকশন জোনে যেসব ভূমিকম্প হয়েছে, সেগুলো থেকে ৬৫ থেকে ৮০ ভাগ শক্তি একবারে বের হয়েছে। বাকিটা ধীরে ধীরে বের হতে থাকে। একই রকম অবস্থা আমাদের এখানে বিরাজ করছে।
এর আগে ৮০০ থেকে এক হাজার বছর আগে কুমিল্লার ময়নামতিতে ভূমিকম্পের মাধ্যমে প্লেটগুলো জমাট বাঁধা শক্তি বের করেছিল। এরপরই নতুন করে শক্তি সঞ্চয় করে এ অবস্থায় এসেছে। তার মানে, গত এক হাজার বছর ধরে শক্তি জমা হতে হতে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার মতো শক্তি জমা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এ শক্তিই যেকোনো সময় বের হয়ে আসতে পারে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত সিলেট, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জসহ দেশের বেশ কয়েকটি স্থানে ভূমিকম্প হয়েছে। ভূমিকম্পগুলো হয়েছে সাবডাকশন জোনের মধ্যে। এগুলোই বড় ভূমিকম্প হওয়ার আলামত। বড় ভূমিকম্প আজ হতে পার, কালও হতে পারে, আবার ৫০ বছর পরেও হতে পারে।