পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনের আলোকে জড়িত ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ও ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক ও আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। সোমবার ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম, জিএস এস এম ফরহাদ ও এজিএস মুহা. মহিউদ্দিন খান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে ২০০৯ সালের ২৫–২৬ ফেব্রুয়ারির ঢাকার পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সম্পৃক্ততা, বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনা এবং সেনাবাহিনী ও বিজিবিকে দুর্বল করার উদ্দেশ্য প্রকাশ পেয়েছে। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর দেশের মুক্তিকামী ছাত্র-জনতা দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে গভীর উদ্বেগে নিমজ্জিত হয়েছে।
কমিশনের প্রতিবেদনে জানা যায়, ঘটনার সময় ৯২১ জন ব্যক্তি ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে, যাদের মধ্যে ৬৭ জনের কোনো নথিভুক্ত প্রস্থান বা অবস্থানসংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়নি। তারা কী উদ্দেশ্যে এসেছিল, কোথায় গিয়েছিল এবং কীভাবে বাংলাদেশ ত্যাগ করেছিল—এই প্রশ্নগুলোর উত্তর অনুপস্থিত। স্বাধীন দেশের ভূখণ্ডে বিদেশি নাগরিকদের এমন গোপন উপস্থিতি এবং তাদের ‘অদৃশ্য’ হয়ে যাওয়া রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের ওপর এক উচ্চমাত্রার হুমকি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ বিচার নিশ্চিত করতে স্বাধীন ট্রাইব্যুনাল গঠন করে বিচারকার্য পরিচালনা করতে হবে। কমিশনের প্রতিবেদনের আলোকে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রধান সমন্বয়কারী শেখ ফজলে নূর তাপস, হত্যাকাণ্ডে ‘গ্রিন সিগন্যাল’ প্রদানকারী খুনি হাসিনাসহ এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত যাদের নাম প্রতিবেদনে এসেছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সুষ্ঠু আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এই ঘটনায় সেই সময়ের ভারতীয় প্রশাসনের ভূমিকা, ৯২১ জনের প্রবেশ এবং ভারত থেকে আসা নথিহীন ৬৭ জনের বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক তদন্ত অবিলম্বে শুরু করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিজিবিকে দুর্বল করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত পরিকল্পিত এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ভারত থেকে আসা ব্যক্তিবর্গ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় কূটনৈতিক ও আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।