অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অঙ্গীকার অনুযায়ী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। কাঙ্ক্ষিত এই নির্বাচন নিয়ে এখন রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সরকার ও নির্বাচন কমিশন ব্যস্ত। তবে যথাসময়ে নির্বাচন যাতে অনুষ্ঠিত না হতে পারে, সেজন্য ফ্যাসিবাদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই।
সম্প্রতি রাজধানীতে বিভিন্ন মহলের আন্দোলনের নামে অরাজকতার পাশাপাশি গোপন তৎপরতা অব্যাহত আছে। সরকারের শেষ সময়ে এসেও এসব আন্দোলনের পেছনে ফ্যাসিবাদী ষড়যন্ত্র আছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করা হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও।
সূত্রমতে, নির্বাচন ব্যাহত করতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান সচিবালয়ে দাবি আদায়ের নামে ফ্যাসিবাদ আমলের সুবিধাভোগী কর্মচারীরা আন্দোলন করে। এর আগের দিন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা ঘটে। তারা সচিবালয়ের ভেতরে আন্দোলনের নাম করে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা করতে চেয়েছিলেন বলে গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছেন।
এর কয়েকদিন আগে বিভিন্ন দাবিতে বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ করে আন্দোলনে নামেন সরকারি মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। একপর্যায়ে সরকারের হুঁশিয়ারিতে মাধ্যমিক শিক্ষকরা আন্দোলন স্থগিত করলেও প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা তা কিছুদিন অব্যাহত রাখেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হিসেবে বেশ কিছু প্রাথমিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে।
এছাড়া নানা দাবিতে সাত কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও মোবাইল ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন মহলের আন্দোলনের পেছনেও নির্বাচন পূর্বপরিস্থিতি ঘোলাটে করার ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলে সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা।
এদিকে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করতে আওয়ামীপন্থি কিছু শিক্ষক গোপন মিটিংয়ে আসেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে তারা ক্যাম্পাস ছাড়েন। এ নিয়েও নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
এদিকে আলটিমেটামের মধ্যে সার্ভিস রুল (চাকরি বিধিমালা) প্রণয়ন ও প্রকাশ না হওয়ায় আজ শুক্রবার থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) নিয়মিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এদিন সকাল ৭টা থেকে সব যাত্রীসেবা বন্ধ রেখে পূর্ণ কর্মবিরতিতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে প্রতিদিন ডিএমটিসিএল প্রধান কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এই আন্দোলনের পেছনে ফ্যাসিবাদের কোনো ষড়যন্ত্র আছে কি না—সেই প্রশ্ন সংশ্লিষ্টদের মাঝে।
আন্দোলন দমনে কঠোর অবস্থানে সরকার
তফসিল ঘোষণার পর আন্দোলন দমনে কঠোর অবস্থানের কথা আগেই জানিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারাই ধারাবাহিকতায় গতকাল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, তফসিল ঘোষণার পর ‘বেআইনি’ সভা-সমাবেশের বিষয়ে সরকার কঠোর অবস্থান নেবে। গতকাল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে তার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সভা শেষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব।
তফসিল ঘোষণার প্রেক্ষাপটে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান শফিকুল আলম। তিনি বলেন, অনেকেই অপ্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে আন্দোলনের চেষ্টা করছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, যারা বেআইনি আন্দোলন করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে।
সচিবালয়ে আন্দোলনের সময় চার কর্মচারী আটক
কেপিআইভুক্ত প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে বিশৃঙ্খলা করায় চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটকদের বিরুদ্ধে ফ্যাসিবাদের দোসরের পক্ষে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে। তারা ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে সুবিধাভোগী কর্মচারী হিসেবে পরিচিত।
সরকারি আদেশ ও সচিবালয় নির্দেশিকার বিধিমালা ভঙ্গ করায় ‘সচিবালয় ভাতা’র দাবিতে আন্দোলন করার সময় গতকাল সচিবালয় থেকে তাদের আটক করা হয়। আটক কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছেন—জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ও কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি বাদিউল কবীর, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও সহসভাপতি শাহিন গোলাম রাব্বানী, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিজামুদ্দিন এবং অজ্ঞাত আরেকজন।
বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের নেতারা মূলত ফ্যাসিবাদ শেখ হাসিনার আমলের সুবিধাভোগী কর্মচারী। জুলাই বিপ্লবের পর সচিবালয়ে বেশ কয়েকটি আন্দোলনে তাদের সরব উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। গত বুধবারের আন্দোলনে তেমন কর্মচারীদের উপস্থিতি দেখা যায়নি। গতকালও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি টের পেয়ে সীমিতসংখ্যক কর্মচারী নিয়ে দাবি আদায়ে তারা বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা আমার দেশকে জানান, সভাপতি বাদিউল কবীরসহ বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে তথ্য আছে। তারা সচিবালয়ের ভেতরে আন্দোলনের নাম করে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা করতে চেয়েছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি ভিত্তিতে কেপিআইভুক্ত জোন সচিবালয়ের ভেতরে ও এর আশপাশে নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
আটকের বিষয়ে ডিএমপির ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি ডিভিশনের যুগ্ম কমিশনার সানা শামীনুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে যতগুলো কেপিআই রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম প্রধান কেপিআই হচ্ছে বাংলাদেশ সচিবালয়। এখানে মিছিল মিটিং করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আমরা গতকাল (বুধবার) থেকে তাদের পর্যবেক্ষণ করছি। তারা অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটিয়েছে। আজকেও (বৃহস্পতিবার) তাদের আমরা বারবার বারণ করেছি এবং তাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য কথা বলেছি। তবে তারা কথা না শুনে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিল।
তিনি বলেন, আমরা তাদের অনেক বুঝিয়েছি। কিন্তু তারা প্রশাসনের কোনো কথা শোনেনি। তারা হুমকি-ধমকি অব্যাহতভাবে দিয়ে চলেছে। এটি হচ্ছে বাংলাদেশের প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র। এখানে কোনো ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল, মিটিং করার অনুমতি নেই।
তিনি বলেন, নিয়মের ব্যত্যয় ঘটায় আমরা তাদের পুলিশ হেফাজতে নিয়েছি। আমাদের কাছে ভিডিও ফুটেজ, তথ্য আছে, যাচাই-বাছাই করে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।
এর আগে কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি বাদিউল কবীর সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের দাবি আজ (বৃহস্পতিবার) ৫টার মধ্যে না মানলে সচিবালয়ের সব গেট বন্ধ করে দেওয়া হবে। দাবি মেনে নিলে আমরা বাসায় ফিরে যাব। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। সরকার তাদের বাহিনী নিয়ে এসে আমাদের ভয় দেখাচ্ছেন। কীসের ভিত্তিতে সচিবালয় ভাতার দাবি এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, পুলিশ-র্যাব তারা ঝুঁকিভাতা পায়, দুদকে ভাতা পায় আমরা কেন পাব না।
উল্লেখ, সচিবালয়ে কর্মরত কর্মচারীদের জন্য ২০ শতাংশ ‘সচিবালয় ভাতা’র দাবিতে কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশ এ আন্দোলন করে। এর আগে গত বুধবার ভাতার দাবিতে সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন।
মোবাইল ব্যবসায়ীদের ম্যারাথন আন্দোলন
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে এনইআইআর ব্যবস্থা চালু হওয়ার কথা রয়েছে। এর ফলে দেশের মোবাইল নেটওয়ার্কে অনিবন্ধিত, চুরি হওয়া কিংবা অনুমোদনবিহীন আমদানি করা মোবাইল ফোনের ব্যবহার বন্ধ হয়ে যাবে। নতুন এ ব্যবস্থার বাস্তবায়নের আগেই জোরালো আন্দোলনে নামেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা। এনইআইআর ব্যবস্থার সংস্কারসহ কয়েকটি দাবি তুলে গত ৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ভবনের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা। মোবাইল বিজনেস কমিউনিটির ব্যানারে তারা রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনের সামনে অবস্থান নেন। একই সঙ্গে তারা সামনের সড়ক অবরোধ করেন।
সংগঠনটির নেতারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা নানা সমস্যার মুখে থাকলেও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। এ কারণে বাধ্য হয়ে তারা সড়ক অবরোধে নামতে হয়েছেন। ব্যবসায়ীদের প্রধান তিনটি দাবি হলো—এনইআইআর সংস্কার, মোবাইল ফোন বাজারে সিন্ডিকেট প্রথা বাতিল এবং বৈধভাবে মোবাইল আমদানির সুযোগ উন্মুক্ত করা। বাংলাদেশ মোবাইল বিজনেস কমিউনিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সেলিম মোল্লা জানান, আলোচনার টেবিলে বসলেও কোনো সমস্যার সমাধান হয়নি। এখন পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, সারা দেশের খুচরা ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি আরো জানান, সারা দেশের ২০ হাজার ব্যবসায়ী এই ব্যবসার সঙ্গে সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে অনেকেই পথে বসবে।
এছাড়া গত বুধবার আন্দোলনকারীরা ঢাকার কারওয়ান বাজার এলাকায় সার্ক ফোয়ারা ক্রসিং আটকে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা। ফলে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে পথচারীরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েন।
জানা গেছে, শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা মোবাইল হ্যান্ডসেট আগামী মার্চ পর্যন্ত বিক্রির সুযোগ রেখে ১৬ ডিসেম্বর থেকে এনইআইআর চালুর বিষয়ে অনড় সরকার। এর আগে ডাক ও টেলিযোগাযোগাযোগ সচিব আব্দুন নাসের খানের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে বিভিন্ন অংশীজনরা উপস্থিত ছিলেন। এই আন্দোলনের কারণে মোবাইল ব্যবসার খাতে অস্থিরতা চলছে।
ঢাবিতে ধাওয়া খেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়লেন আওয়ামীপন্থি শিক্ষক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ও আওয়ামীপন্থি নীল দলের সমালোচিত শিক্ষক আ ক ম জামাল উদ্দীন। গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদ ভবনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন একই বিভাগের নীল দলের আরেক শিক্ষক জিনাত হুদা।
সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদ সূত্রে জানা যায়, দুপুরে আ ক ম জামাল, জিনাত হুদাসহ কয়েকজন শিক্ষক সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদ ভবনে প্রবেশ করেন। তারা গোপন মিটিংয়ে আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনা করছিলেন। খবর পেয়ে সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা সেখানে উপস্থিত হয়ে তাদের ঘেরাও করেন। ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এবি জুবায়েরও উপস্থিত ছিলেন।
দুপুর ১টায় শিক্ষকরা ভবন থেকে বের হলে ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এবি জুবায়েরের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা তাদের ধাওয়া দেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে আ ক ম জামাল দৌড়ে ভবনের নিচতলায় রাস্তায় নেমে যান এবং দ্রুত একটি প্রাইভেট কারে উঠে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। তাদের সঙ্গে থাকা অন্য শিক্ষকও একই গাড়িতে চলে যান।
ঘটনার পর এবি জুবায়ের নিজের ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার করে লেখেন, ‘স্বঘোষিত রাজাকারের বাচ্চাগুলোরে ধইরা ধইরা ব্রাশ ফায়ার দিতে হবে’ এই বক্তব্য দেওয়া আ ক ম জামাল ও নীল দলের নেতা জিনাত হুদাসহ পাঁচজন ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ শিক্ষক ক্যাম্পাসে গোপন মিটিংয়ে যুক্ত ছিলেন।
তিনি আরো দাবি করেন, খবর পেয়ে তারা শিক্ষকদের আটক করে পুলিশে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, তবে আগে থেকে প্রস্তুত করে রাখা গাড়িতে তারা পালিয়ে যান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর রফিকুল ইসলাম জানান, ‘আমরা এমন একটি ঘটনার কথা শুনেছি। তবে এখনো বিস্তারিত জানতে পারিনি।’
প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষকদের যমুনামুখী কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা
দেশের সব প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তির দাবিতে টানা ৪৭ দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। গতকাল তারা লংমার্চ টু যমুনা কর্মসূচি পালন করতে গেলে পুলিশের বাধায় পড়ে প্রেস ক্লাবের সামনে রাস্তায় বসে পড়েন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালানোর ঘোষণা দেন।
ফার্মগেটে শিক্ষার্থীদের তিন ঘণ্টার অবরোধ
সহপাঠীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাজধানীর ফার্মগেটের সড়ক টানা তিন ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন তেজগাঁও কলেজের শিক্ষার্থীরা। গতকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টার পর্যন্ত সড়ক অবরোধ রাখেন তারা। শেরেবাংলা থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, তেজগাঁও কলেজের শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি ইস্যুতে উসকানির অভিযোগে শিক্ষকের বিরুদ্ধে জিডি
প্রস্তাবিত ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ ইস্যুতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে ফ্যাসিবাদের দোসরদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ আছে। তারই সত্যতা মিলেছে সাবেক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে জিডির মধ্যদিয়ে। সূত্রমতে, ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ ইস্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন ঢাকা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আইকে সেলিম উল্লাহ খন্দকার। এসব উসকানিমূলক পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ তুলে তার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ঢাকা কলেজের একদল শিক্ষার্থী। গত মঙ্গলবার নিউমার্কেট থানায় এ জিডি করা হয়।
জিডিতে অভিযোগ করা হয়, ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলমান থাকা অবস্থায় সাবেক অধ্যক্ষ সেলিম উল্লাহ খন্দকার তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে নিয়মিতভাবে ‘উসকানিমূলক ও বিভ্রান্তিকর’ পোস্ট শেয়ার করছেন। এসব পোস্ট ঢাকা কলেজসহ সাত কলেজের হাজারো শিক্ষার্থীর মধ্যে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে এবং পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।