স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভলান্টিয়ার বা স্বেচ্ছাসেবকদের কিছু সুযোগ-সুবিধা প্রদান ও তাদের জন্য আয়োজিত প্রশিক্ষণের মান ও সংখ্যা বৃদ্ধির চিন্তাভাবনা করছে সরকার বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। এ লক্ষ্যে একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে বলেও জানান তিনি।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর পূর্বাচলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স-এর ট্রেনিং গ্রাউন্ডে ‘ইন্টারন্যাশনাল ভলান্টিয়ার্স ডে’ উদযাপন উপলক্ষ্যে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল, এনডিসি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রশিক্ষিত ভলান্টিয়ারগণ নিঃস্বার্থ সেবার মাধ্যমে জনগণের বন্ধু হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে সমর্থ হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্প ও অগ্নিদুর্ঘটনাসহ দেশের বড় বড় দুর্ঘটনায় ফায়ারফাইটারদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভলান্টিয়াররাও অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজে অংশগ্রহণ করেছেন। কোনো রকম সুবিধা না নিয়ে নিজের ইচ্ছায় নিঃস্বার্থভাবে স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য তিনি ভলান্টিয়ারদের আন্তরিক সাধুবাদ জানান। তারা এ কাজের প্রতিদান শুধু ইহকালে নয়, পরকালেও পাবেন বলে তিনি এ সময় মন্তব্য করেন।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সারা দেশে ৬২ হাজার ভলান্টিয়ার তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে। ইতোমধ্যে তারা ৫৫ হাজার-এর অধিক ভলান্টিয়ারকে প্রশিক্ষণ প্রদান সম্পন্ন করেছে। তিনি বলেন, প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবকরা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স পরিবারের গর্বিত স্বেচ্ছাসেবী সদস্য হিসেবে আর্তমানবতার সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। এবং এর মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের জনবল সংকট দূরীকরণ ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সরকারি বাহিনীর সদস্যদের পক্ষে এককভাবে ভূমিকম্প, বড় অগ্নিদুর্ঘটনা, বন্যা ইত্যাদি দুর্যোগ মোকাবিলা করা দুরূহ। এক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবকরা পেশাদার বাহিনীর সঙ্গে একসাথে কাজ করে দুর্যোগ প্রশমনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। তিনি বলেন, যেকোনো বিষয়ে দক্ষ ও উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। বিশেষ করে ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ মোকাবিলায় সকল স্তরে স্বেচ্ছাসেবক এবং তাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি এবং প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ রাজনীতিমুক্ত হবে কিনা- এ সংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আইন করা হয় জনগণকে সেবা দেয়ার জন্য। এই আইনটাও করা হয়েছে জনগণ যেন প্রকৃত সেবাটা পায়। তিনি বলেন, পুলিশ কমিশন জনগণ ও পুলিশের প্রকৃত কল্যাণে কিছু সুপারিশ করবে। আর সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করবে।
উপদেষ্টা এর আগে পূর্বাচল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স-এর ট্রেনিং গ্রাউন্ডে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রদর্শিত মহড়া দেখেন।