পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সকল জাতি-গোষ্ঠীর মধ্যে শান্তি, সম্প্রীতি ও সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে সিএইচটি সম্প্রীতি জোট।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটিও ঘোষণা করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দীন, সিএইচটি রিসার্চ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মেহেদী হাসান এবং স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’র আহ্বায়ক জিয়াউল হক।
বক্তারা পাহাড়ি-বাঙালি ভেদাভেদ দূর করা, ভারতীয় আধিপত্যবাদ মোকাবিলা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
কেন্দ্রীয় কমিটিতে ইঞ্জিনিয়ার থোয়াইচিং মং শাককে আহ্বায়ক, ইখতিয়ার ইমনকে সদস্য সচিব এবং পাইশিখই মার্মাকে মুখপাত্র করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়।
নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দীন বলেন, ‘ভারতীয় প্রভাবের কারণে পাহাড়ে বিভাজন সৃষ্টি হয়। এর ফলে বহু পাহাড়ি ও বাঙালি প্রাণ হারিয়েছেন। আজও পাহাড়ে সশস্ত্র বিদ্রোহ চলছে, যার অস্ত্র আসে সীমান্তের ওপার থেকে। ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।’
তিনি আরো বলেন, পাহাড়ে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হলে দেশি-বিদেশি পর্যটক আকৃষ্ট হবে, যা জাতীয় অর্থনীতিতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সহায়ক হবে এবং পাহাড়ের জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক উন্নয়নেও ভূমিকা রাখবে।
সিএইচটি রিসার্চ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মেহেদী হাসান বলেন, পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা, নৃগোষ্ঠীর হারিয়ে যেতে বসা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ করতে হবে। পাহাড়ে ধর্ষণের অভিযোগে দাঙ্গা সৃষ্টি হলেও মেডিক্যাল পরীক্ষায় দেখা যায় অভিযোগটি ছিল মিথ্যা। আবার বাঙালী ছেলের সাথে বন্ধুত্ব করায় দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় তরুণী।
আমাদের সম্প্রীতির বন্ধন প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে।
আলোচনায় ভারতীয় মদদে পাহাড় অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা, প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ এবং পর্যটন খাত উন্নয়নের ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়।
সিএইচটি সম্প্রীতি জোটের লক্ষ্য ও মূলনীতি:
পার্বত্য চট্টগ্রামকে শান্তিপূর্ণ, উন্নয়নমুখী, সাম্যভিত্তিক, সাংস্কৃতিকভাবে বৈচিত্র্যময় ও ঐক্যবদ্ধ অঞ্চলে পরিণত করা।
তিনটি মূলনীতি নির্ধারণ করা হয়েছে
১. প্রত্যেক জাতি, ধর্ম ও সম্প্রদায়ের সমান অধিকার, সুযোগ ও মর্যাদা নিশ্চিত করা।
২. সংঘাত, ভূমি বিরোধ ও বিভাজনের অবসান ঘটিয়ে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসের পরিবেশ তৈরি করা।
৩. প্রত্যেক জাতিসত্তার সাংস্কৃতিক পরিচয়, ভাষা ও ঐতিহ্যকে রাষ্ট্রীয়ভাবে মর্যাদার সঙ্গে স্বীকৃতি প্রদান।
ত্রিপুরা, মারমা, চাকমা ও বাঙালিসহ ১৪টি জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধি এ আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।