জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুতে জুলাই ঐক্য
আগামী জাতীয় নির্বাচন হতে হবে জুলাই সনদের ভিত্তিতে। এর বাইলে কোনো প্রকার যদি, কিন্তু, অথবা এসব বিষয় ছাত্রজনতা গ্রহণ করবে না। অবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত না নিলে— শহিদ পরিবার, আহত এবং জুলাইয়ের ছাত্র জনতাকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথ থেকেই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে জুলাই ঐক্য।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমন হুঁশিয়ার দেন জুলাই ঐক্যের মুখ্য সংগঠক মোসাদ্দেক ইবনে মোহাম্মদ।
তিনি বলেন, ভারতের তৈরি ৭২-এর মুজিববাদী সংবিধান দিয়ে চব্বিশ পরবর্তী বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। ১৪০০-এর অধিক ছাত্রজনতা শহিদ ও ৩২ হাজার আহত ভাইবোনদের রক্ত মাড়িয়ে স্বৈরাচারী হাসিনার পতন ঘটিয়েছি। গণ-অভ্যুত্থান পরিবর্তী সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি ছিল তা গণহত্যাকারীদের বিচার। আগামী ১৩ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল খুনি হাসিনার রায়ের তারিখ ঘোষণা হয়েছে। এই দিনটিকে ঘিরে ইতোমধ্যে প্রশাসনের নিরবতা সুযোগ নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় বাসে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে গণহত্যাকারীরা।
আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের নৈরাজ্য নিয়ে জুলাই ঐক্যর এই সংগঠক বলেন, যেসব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জুলাইকে ধারণ করে না, তারাই আজ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল। সে সুযোগ নিয়ে সারাদেশে নৈরাজ্য করছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। আদালত গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের জামিন দিয়ে দিচ্ছে। অথচ এখনও গণকবরে ১১৪ জনের লাশ। যাদের পরিচয় এখনও শনাক্ত হয়নি। আমাদের মায়েরা তার সন্তানের জন্য, বোনেরা তার স্বামীর লাশের জন্য পথে পথে ঘুরছে।
জুলাই সনদ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ‘চরম অসন্তোষ’ উল্লেখ করে মোসাদ্দেক বলেন, জুলাই সনদ নিয়ে রাজনৈতিক দল এবং সরকার মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো শুধু একটি নির্বাচনের জন্য জুলাই বিপ্লব নিয়ে নানাভাবে কটূক্তি করছে। প্রথমে জুলাই সনদ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়, সে মতবিরোধ এখন রাজপথে আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চরম অসন্তুষ বিরাজ করছে। সরকার প্রাথমিকভাবে ব্যর্থ হয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্তের জন্য ৭ দিনের সময় বেধে দিলেও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত আসেনি।
সীমান্তের কাছে ভারতের সেনা ঘাঁটি ও স্টেশন নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ উল্লেখ করে তিনি বলেন, হাসিনা সরকারের পতনের মধ্যদিয়ে ভারতের আধিপত্য কিছুটা কমলেও, বিভিন্নভাবে বাংলাদেশে থাকা ভারতীয় এজেন্টদের মাধ্যমে দেশে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা লক্ষ্য করছি, পঞ্চগড় এবং কুড়িগ্রামসহ বেশ কয়েকটি সীমান্তের কাছে ভারত ৩টি সেনা ঘাঁটি ও স্টেশন তৈরি করেছে। এমনকি সীমান্তের এক কিলোমিটারের মধ্যে সেনা ঘাঁটি ও সেনা স্টেশন তৈরি করেছে ভারত। যা বাংলাদেশের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ বলে আমরা মনে করি। অবিলম্বে এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে।
এদিকে সংবাদ সম্মেলন থেকে খুনি হাসিনার ফাঁসি ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দাবিতে আগামী বুধবার ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেটে বিক্ষোভ মিছিল ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নৈরাজ্য ও প্রশাসনের বিতর্কিত ভূমিকার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে জুলাই ঐক্য।