বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দাফন করা হয়েছে ঢাকার শেরে বাংলা নগরে তার শহীদ স্বামী জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেজন্য সংসদ ভবনের কাছে তাকে দাফনের চিন্তাটা করা হয়েছিলো।
বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার জিয়াউর রহমান ১৯৮১ সালের ৩০শে মে চট্টগ্রামে এক সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হওয়ার পর তাকে প্রথমে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার পাহাড় এলাকায় কবর দেওয়া হয়েছিল।
পরে ঢাকায় এনে তৎকালীন শেরে বাংলা পার্কে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে দাফন করা হয়েছিল তখনকার সরকারের উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনায়।
জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের সিদ্ধান্ত এসেছিল তখনকার অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারের নেতৃত্বাধীন সরকারের দিক থেকেই, বলছিলেন রাজনৈতিক ইতিহাসের গবেষক ও লেখক মহিউদ্দিন আহমদ।
আবদুস সাত্তারের মন্ত্রিসভায় উপমন্ত্রী ছিলেন এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। জিয়াউর রহমানের জানাজা ও দাফনেও উপস্থিত ছিলেন তিনি।
তিনি বলছেন, প্রস্তাবটা বিচারপতি আবদুস সাত্তারেরই ছিল। কেবিনেট তা সর্বসম্মতিক্রমে চূড়ান্ত করে। পরে সেনাপ্রধান এরশাদও তা সমর্থন করেন। এর কারণ হলো জিয়াউর রহমান যেহেতু বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেজন্য সংসদ ভবনের কাছে দাফনের চিন্তাটা করা হয়েছিলো।
এখন সেখানেই জিয়াউর রহমানের কবরের পাশেই খালেদা জিযাকে দাফনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার দল বিএনপি। অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, তাকে সেখানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে।
দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাধীন থাকার পর মঙ্গলবার সকালে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ।
গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেছেন, তখন জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনসহ অনেক সিদ্ধান্তই নিয়েছিলো বিচারপতি সাত্তারের অস্থায়ী সরকার। দাফনের জায়গা নির্ধারণও তারাই করেছে।
আর এ বিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলছেন, জিয়াউর রহমানকে সংসদ ভবন এলাকায় দাফনের সিদ্ধান্তে তখন সবাই একমত হয়েছিল। ওই জানাজাটিতে তখন দল মত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ অংশ নিয়েছিল, বলছিলেন তিনি।
এর প্রায় ৪৪ বছর পর আজ বুধবার সেই কবরের পাশেই দাফন করা হচ্ছে জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়াকে। মঙ্গলবার ভোরে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে দেশের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
সূত্র: বিবিসি বাংলা