হোম > রাজনীতি

কর্মক্ষেত্রে নারীদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে

শ্রমিক সমাবেশে ডা. শফিক

স্টাফ রিপোর্টার

জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে কর্মক্ষেত্রে নারীদের সম্মান-মর্যাদা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ঘোষণা দিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান।

বুধবার রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে ‘১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমাদের প্রতিপক্ষ আমাদের বিরুদ্ধে অপবাদ ছড়ায় যে, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে মহিলাদের আর কোন কাজ করতে দেবে না, ঘর হতে বের হতে দেবে না। আমরা এই বোনদের নিশ্চয়তা দিচ্ছি, তারা তাদের যোগ্যতা এবং পছন্দ অনুযায়ী কাজ করবে। এখন তাদের কোন সম্মান-মর্যাদা এবং নিরাপত্তা নাই। সেই রাষ্ট্রে তাদের মর্যাদা কায়েম করব এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, নারী-পুরুষ সবাই মিলেই স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রে দেশের উন্নয়নে, স্থিতিশীলতায় গতিশীলতায় আমরা অবদান রাখব। সেই সাম্যের সোনার বাংলাদেশ গড়ার লড়াই সেইদিনই থামবে, যেদিন মানুষের সুখ-শান্তি ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা আসলেই মানুষের মধ্যে কোন বৈষম্য দেখতে চাই না। এবং মানুষকে তার কর্ম, শ্রম, শিক্ষা বা পেশাগত জীবন দিয়ে আমরা বিবেচনা করতে চাই না। মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত। দল ধর্মের উর্ধ্বে উঠে আমরা সম্মান জানাতে চাই। এরকমই একটা বাংলাদেশ গড়তে চাই, সেটা আল্লাহর কোরআনের ভিত্তিতেই সম্ভব। রাসুলের (সা.) মাদানী জীবন ব্যবস্থার মাধ্যমেই সম্ভব। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এই সম্মান এবং শান্তির শাসনব্যবস্থা কায়েম করার জন্য লড়াই করে যাচ্ছে, এই লড়াইয়ে শ্রমিকরাও গর্বিত অংশীদার। আপামর শ্রমিক-জনতাকে এই লড়াইয়ে সম্পৃক্ত করার লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, শ্রমিক ও কর্মজীবী মানুষ তাদের কর্মক্ষেত্রে নির্যাতিত এবং ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। মিল, ফ্যাক্টরি, ইন্ডাস্ট্রি-বিভিন্ন জায়গার উদোক্তারা তাদের সহকর্মী এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের উপযুক্ত মূল্যায়ন করেন না, মর্যাদা দেন না, কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করেন না-এটাই বাস্তবতা। আবার আরেকটি বাস্তবতা হলো-তারা যেমন শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন করেন, তেমনি তারা নির্যাতিত হন চাঁদাবাজদের হাতে। চাঁদাবাজরা বিভিন্ন রূপে ও দিবস পালনের নামে হাজির হয়। এই দ্বন্দ্ব কতদিন চলবে। আমরা চাইনা এই দ্বন্দ্ব চলুক। আমরা চাই, শ্রমিক বাঁচলে আমার শিল্প বাঁচবে, ব্যবসা বাঁচবে। শ্রমিক না বাঁচলে আমরা ব্যবসা এবং শিল্প বাঁচবে না। আমার শ্রমিকরাও বুঝবেন, উদ্যোক্তা-মালিকরা বাঁচলে আমরাও বাঁচবো। আমার কর্মস্থলই ধ্বংস হয়ে গেলে দাবিটা করবো কার কাছে? এজন্য উভয়পক্ষেরই এখানে দায়-দায়িত্ব আছে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সত্যিকার অর্থে যদি আমরা একটা টেকসই বাংলাদেশ গড়তে চাই, একটি শান্তির বাংলাদেশ গড়তে চাই তাহলে হাতে হাত ধরে পরস্পরকে সম্মান এবং ভালবাসা দিয়ে সমাজকে গড়ে তুলতে হবে। যেদিন মালিকরা শ্রমিকদের মন ভরে আদর করবেন এবং সম্মান দিবেন, শ্রমিকরা তার সব উজাড় করে পাশে থাকবেন। আর শ্রমিকরা যদি মালিকদের প্রতি আস্থা না পান তাহলে সে তার শিল্প সংরক্ষণের দায়িত্ব বলে কিছু মনে করবে না। এতে উভয়পক্ষ আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো। এজন্য শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কাজ হলো-মালিক এবং শ্রমিকের সমন্বয়ে একটি দরদী এবং পারস্পারিক ভালোবাসা ও সম্মানের সমাজ গড়ে তোলা। আমরা সেই সমাজটাই দেখাতে চাই।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৭০ ভাগ মানুষই শ্রমজীবী, কর্মজীবী। ৭০ ভাগ মানুষকে উপেক্ষা করে কোন সমাজ সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে না। এই যে পারস্পারিক বোঝাপাড়ায় সম্মান এবং ভালবাসার ভিত্তিতে আমরা একটি টেকসই সমাজ গড়বো, সেটা আল্লাহার আইন ছাড়া কোন কিছু দিয়েই বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। এটা দুনিয়ার প্রমাণিত সত্য।

দেড়শ বছর আগের এই দিনটি আমরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করছি। কিন্তু দিন পালনতো আমাদের বন্ধ হচ্ছে না। শ্রমিকদের কোথাও কোথাও অথবা অধিকাংশ জায়গায় হয়ত ৮ ঘণ্টা কর্মঘণ্টা আছে, কিন্তু এ সময়ে তারা যে বেতন-ভাতা পান তাতে তার নুন আনতে পান্তাও ফুরায় না। বাধ্য তারা আরেক জায়গায় গিয়ে করেন ৮ ঘন্টা কাজ। তারাও মানুষ। তারও ক্লান্তি আসে, বিশ্রামের প্রয়োজন হয়, পরিবারকে সময় দিতে হয়। আমরা তার এই অমানবিক জীবনের অবসান ঘটাতে চাই। কিন্তু এই অবসান তখনই হবে, যখন আমরা মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য এবং সম্মান দিব। মিল কলকারখানায় এখন নারীদের জন্য নামাজের কোন ব্যবস্থা রাখা হয় না। নামাজে উপযুক্ত জায়গা করে দেয়ার আহবান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, রাসুলের হাদিস অনুযায়ী শ্রমিকদের অবশ্যই ভালোবাসতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের নায়েবে আমির ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, শ্রমিকদের সম্মান মর্যাদা দিতে মে দবিস নয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে চালু করতে হবে। আল্লাহর আইন চালু হলে শ্রমিকরা অধিকার বঞ্চিত হতো না।

আরেক বিশেষ অতিথি জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ও ফেডারেশনের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, নাস্তিক্য শ্রমনীতিতে মালিক-শ্রমিক দ্বন্দ্ব বাধায়। ইসলামের মহান শ্রমনীতির দাওয়াত দিয়েছে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন।

সভাপতির বক্তব্যে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাবেক এমপি আ ন ম শামুসল ইসলাম বলেন, রাসুলের (সা.) মত শ্রমনীতি সাজাতে পারলে শ্রমিকদের কোন সমস্যা থাকবে না। আল্লাহর আইন চালু করলে কোন সমস্যাই থাকবে না। আমরা আল্লাহর আইন চালুর মাধ্যমে শ্রমিকদের অধিকার ফিরিয়ে দেব।

ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল আতিকুর রহমানের পরিচালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও হামিদুর রহমান আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল সহ জামায়াত ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা।

এদিকে সমাবেশের আগে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী উত্তরের উদ্যোগে র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। কাকরাইল মোড় থেকে এই র‌্যালি শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এতে মহানগর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

হাদি ইস্যুতে সর্বদলীয় প্রতিরোধ সভায় বিএনপি ছিল না কেনো

তারেক রহমানের জন্য বাসভবন ও অফিস প্রস্তুত

মহান বিজয় দিবসে বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানালো ডিআরইউ

সব প্রার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে: গোলাম পরওয়ার

রাজধানীতে এনসিপির আগ্রাসনবিরোধী যাত্রা শুরু

তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে রিল মেকিং প্রতিযোগিতা

একাত্তর ও চব্বিশের দালালদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আছি: নাহিদ

৫০ এমপি প্রার্থীকে হত্যা করবে আওয়ামী লীগ: রাশেদ খান

গোলাম আযমকে সূর্যসন্তান বলে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করেছে জামায়াত

আজ লন্ডনে শেষ কর্মসূচি পালন করবেন তারেক রহমান