হোম > রাজনীতি

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নিরাপত্তা সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে

নাগরিক কোয়ালিশনের আলোচনা সভায় বক্তারা

স্টাফ রিপোর্টার

নাগরিক কোয়ালিশনের আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ নির্বাচন করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। কিন্তু সেই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করতে সরকারকে আমরা দেখছি না। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নিরাপত্তা সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন নিয়ে জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনা কমিশন ও সরকারের দায়িত্ব।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) নাগরিক কোয়ালিশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘নির্বাচন ও নাগরিক নিরাপত্তা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

আলোচনা সভায় জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, জন্য অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। একই সময়ে জেল পলাতক সন্ত্রাসী যারা পালিয়েছে, তাদের গ্রেফতার করতে হবে। গত সরকারের সময়ে যাদের লাইসেন্স দিয়েছে তাদের বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করতে হবে। আমরা দেখেছি দিনের বেলায় আমার ভাই হাদিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সরকারের উচিত ছিল তাৎক্ষণিকভাবে ভূমিকা নেওয়া। ইসি, সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। রাজনৈতিক দলগুলোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে, নিজেরা সন্ত্রাস করব না এবং কাউকে করতেও দিব না। ৫ আগস্টের বাংলাদেশ আমাদের শিখিয়েছে মাথা উঁচু করে বাঁচতে। অনলাইন একটিভিস্টদেরও আরও ভূমিকা রাখতে হবে। আমরা আর কোন হাদি, আবু সাঈদ মুগ্ধদের হারাতে চাই না। সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জননিরাপত্তার জন্য যা করা উচিত সব করতে হবে। একটি সুন্দর স্বচ্ছ এবং সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন হয়। আমাদের সবাইকে এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য মাহমুদা হাবিবা বলেন, হাদির মতাদর্শ যাইহোক না কেন, তিনি বাংলাদেশের সম্পদ। আজকে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি দুঃখজনকভাবে বলছি, কেন সরকারের প্রেস সচিব বলছেন তিনি দুঃখিত। তার সাংবাদিকদের কাছে তিনি লজ্জিত। কে তাকে বাঁধা দিয়েছে?  বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে কথা বললেও, সবাই এক জায়গায় একমত যে দেশের কল্যাণে আমরা এক। নির্বাচনের বর্তমান নাগরিক নিরাপত্তা নেই। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নিরাপত্তা দেওয়া। সিসিটিভি ফুটেজ থাকলেই নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে না। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কিন্তু সংস্কার হয় নাই। শুধু এই মন্ত্রণালয় থেকে ওই মন্ত্রণালয়ে গিয়েছে। হাদির মতো একজনের হত্যার আসামীদের গ্রেফতার করতে পারে নেই। বিএনপি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার পত্রিকার কাছে থেকে। কিন্তু এরপরও বিএনপি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চায়। শ্রেষ্ট নির্বাচন করতে চাইলে, সেরা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের দলভিত্তিক বিভাজন আছে। কিন্তু সব দলই জুলাইয়ের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকবে। সবাই দেশকে স্থিতিশীল দেখতে চায়।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী বলেন, উসমান হাদিকে পতিত ফ্যাসিস্টরা ঘোষণা দিয়ে হত্যা করেছে। তাদের আশ্রয়দাতা ভারতও জড়িত ছিল। পতিত ফ্যাসিস্টদের আশ্রয়দাতারা বাংলাদেশে বসে তারা অস্থিতিশীল করতে চায়। ফ্যাসিস্ট আওয়ামিলীগ বুঝাতে চায়, তারা ছাড়া বাংলাদেশ স্থিতিশীল থাকবে না। জুলাই বিপ্লবের ট্রমার ক্ষোভকে কাজে লাগািয়ে তারা নির্বাচনকে বানচাল করতে চায়। বরিশালে এক বিএনপি নেতার বাড়িতে আগুন লাগিয়ে তার বাচ্চা মেয়েকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মানুষকে তারা কনফিউজড করতে চায় যে নির্বাচন হচ্ছে না। ময়মনসিংহে একজন ভিন্ন ধর্মাবলম্বীকে  পুড়িয়ে মেরেছে। সংস্কার করতে হলে ইলেকশন করতে হবে। যারা ইলেকশন বানচাল করতে চাওয়া ফ্যাসিবাদীদের ও দেশকে অস্থিতিশীলকারীদের উদ্দেশ্য এক। সরকার বলছে নির্বাচনে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের টাকা নেই। এটা একটা চরম ফাঁকিবাজ কথা। হত্যা করে ১২ ঘণ্টার মধ্যে চলে যায় কিন্তু সরকার গ্রেফতার করতে পারে না। এখন রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হলে ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র সফল হতে পারবে না। পুলিশকে অ্যাকটিভ করতে না পারলে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়। পুলিশকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।  সবাই মনে করছে, যাই কিছু করি না কেন!  পার পেয়ে যাব। রাজনৈতিক দলগুলো যদি এই পরিবর্তনের সময়ে ঐক্যবদ্ধ না হলে বিপর্যয় থেকে কেউ রক্ষা পাব না। পুরানো বন্দোবস্ত থেকে আমাদের সরে আসতে হবে।  আমরা যদি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তন করতে পারি, তাহলেই কেবল হাদীসহ সকল শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব হবে।

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, আমার মনে হয় সরকার আমাদের সাথে প্রতারণা করছে। তারা বলছে ইতিহাসের সেরা নির্বাচন করবে, কিন্তু তারা সেই বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না।  এই সরকার পদত্যাগ করলে নির্বাচন, বিচার ও সংস্কারের কি হবে? এই আশঙ্কা থেকে কেউ কিছু বলছে না। যদি এই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে এই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে কেন রাখছেন? ইউনূসের দায়িত্ব ছিল সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু তিনি তা করতে পারছেন না। হাসিনার পুলিশ দিয়ে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। পুলিশ বা সচিবালয়ের কোন আমলা-কামলাদের কাউকে চাকরিচ্যুত করা হয় নাই। হাসিনা শুধুমাত্র দিল্লিতে পালিয়েছে। কিন্তু তার ফ্যাসিস্টদের কাউকে সরানো হয় নাই। সকল উপদেষ্টা খারাপ খালি ইউনুস ভালো! ফ্যাসিস্ট আমলে সবাই খারাপ খালি হাসিনা ভালো। এই বয়ান উৎপাদন করেছিল। ঠিক একইভাবে বর্তমানে সকল উপদেষ্টা খারাপ শুধু ইউনুস ভালো।

এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানি বলেন, সকল সমস্যার মূল কারণ হচ্ছে নির্বাচন না হওয়া। বাংলাদেশের নির্বাচন বা পলিটিক্সে শারীরিক শক্তি লাগে।  রাজনৈতিক অবলম্বনটাই হয় অন্যদের বিরোধিতা করা, তখন মাসল পাওয়ার লাগবে। আমাদের পলিসি ভিত্তিক রাজনৈতিক অবস্থান তৈরি করতে হবে।  ভোটার তৈরি করতে হবে। কিন্তু আমারা পলিসি ভিত্তিক রাজনীতি করতে পারছি না। ভোটারদের নিজেদের ভোটার হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। সকল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নিরাপত্তার আশঙ্কা আছে। এই সরকারের মধ্যে দরদ দেখালেও,  দায় নিতে দেখা যাচ্ছে না।  

নাগরিক কোয়ালিশনের আলোচনা সভায় সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম, মানবাধিকারকর্মী আইরিন খান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সৈয়দ হাসিবউদ্দীন হোসেনসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।

দিপু চন্দ্র ও শিশু আয়েশাকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় হেফাজতের নিন্দা

গণমাধ্যমে হামলার সঙ্গে ছাত্রশিবিরের দূরতম কোনো সম্পর্ক নেই

পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দৃশ্যমান বিচার চায় জনগণ: রিজভী

ওসমান হাদিকে হত্যা করে জুলাইকে পরিবর্তন করে দেওয়া যাবে না: শিবির সভাপতি

খুনিদের ভারতে আশ্রয় বন্ধে জাতিসংঘকে দায়িত্ব নিতে হবে: চরমোনাই পীর

হাদির হত্যাকারীদের বিচারে সরকারের স্পষ্ট বক্তব্যের দাবি

ফ্যাসিবাদের অন্ধকার পেরিয়েছি, শঙ্কা কাটেনি: রিজভী

বগুড়ায় খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

ধর্মকে পুঁজি করে মবসন্ত্রাস করলে প্রতিহত করবে ছাত্রদল

হিন্দুস্তান বাংলাদেশের ফুলকেও ভয় পায়: রাশেদ প্রধান