ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হল শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের এক কর্মী মোহাম্মদ আবু সায়ীদ সংগঠনটি থেকে পদত্যাগ করেছেন।
ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনের অনুসারী ছিলেন। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও সূর্যসেন হল ছাত্রদলের কর্মী ছিলেন। ছাত্রদলের বিভিন্ন প্রোগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণসহ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি নিয়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনও করেছিলেন তিনি।
শনিবার সকালে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। একইসঙ্গে দল ও নেতৃত্বের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
পদত্যাগের ঘোষণায় আবু সায়ীদ লেখেন—‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) একটি পরিবারতান্ত্রিক দল। এখানে কখনো কাউন্সিলের মাধ্যমে দলের চেয়ারম্যান নির্বাচন হয় না। তারেক রহমানের পর তার মেয়ে নেতৃত্বে আসবেন- এমন ধারণা প্রতিষ্ঠিত। গণতন্ত্রহীন একটি দল কীভাবে দেশের মানুষকে গণতন্ত্র দেবে?’
তিনি আরও লেখেন—দলের সংস্কার উদ্যোগে বাধা দেওয়া হচ্ছে এবং ছাত্রদের বহুল প্রত্যাশিত ডাকসু নির্বাচনেও বিএনপি সক্রিয়ভাবে বাধা দিচ্ছে।
তার ভাষ্য অনুযায়ী, ‘বিএনপি দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়ার নীতিও মেনে নিতে রাজি নয়।’
আবু সায়ীদের অভিযোগ—আমরা যখন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে অনশনে বসেছিলাম, তখন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতারা আমাদের হুমকি দিয়েছেন। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি আমাকে বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ তো চায় জামাত-শিবিরের পোলাপান। তাহলে বিএনপি কি সত্যিই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চায় না?’
ভোলা জেলার এক সাবেক নেত্রী ঈপ্সিতা ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হলেও ছাত্রদল তার পাশে দাঁড়ায়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি। সে শুধু দল থেকে পদত্যাগ করেছিল বলেই কি তার প্রতি সহানুভূতি দেখানো হবে না? সাধারণ নাগরিক হিসেবে কি সে বিচার পাওয়ার যোগ্য নয়?—প্রশ্ন তোলেন তিনি।
আবু সায়ীদ অভিযোগ করেন, যুবদল নেতা সোহাগ হত্যার ঘটনায় ছাত্রদল বলেছে, হত্যাকারীরা বহিষ্কৃত। তাহলে অপরাধীকে শনাক্ত করতে এত সময় লাগে কেন? তারেক রহমানের সমালোচনা করলে হুমকি আসে, পুলিশ ভেরিফিকেশনের ভয় দেখানো হয়। তারেক রহমান কি সমালোচনার ঊর্ধ্বে?
সায়ীদের বক্তব্য অনুযায়ী, ছাত্রদলের রাজনীতি এখন ‘শুধু প্রোগ্রাম নির্ভর’ হয়ে পড়েছে এবং অছাত্র ও প্রবীণদের দ্বারা চালিত হচ্ছে। ‘বিএনপি ও ছাত্রদল নিয়ে অনেক আশা ছিল, যা এখন গুঁড়ে গেছে। আমি বিশ্বাস করেছিলাম, তারেক রহমান ব্রিটিশ গণতন্ত্র দেখে দেশের জন্য কিছু ভালো কিছু আনবেন। এখন প্রশ্ন করি-এই দেশের তরুণ প্রজন্ম তার কাছ থেকে কি কোনো পরিবর্তনের আশা করতে পারে?