নারী কাবাডি বিশ্বকাপ
নাচে-গানে, বর্ণিল আয়োজনে গতকাল ঢাকায় দ্বিতীয় নারী কাবাডি বিশ্বকাপের জমকালো উদ্বোধন হয়েছে। উদ্বোধনী দিন উগান্ডাকে হারিয়ে দারুণ সূচনা করেছে বাংলাদেশ নারী কাবাডি দল। মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে ১১ দেশের অংশ নেওয়া আসরের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ দুই লোনাসহ ৪২-২২ পয়েন্টে হারায় আফ্রিকান চ্যাম্পিয়ন উগান্ডাকে।
প্রথমার্ধে বাংলাদেশ এগিয়ে ছিল ১৪-১২ পয়েন্টে। যদিও প্রথমার্ধে ভালোই লড়াই করেছে উগান্ডা। শুরুতে বাংলাদেশের মেয়েদের একটু রক্ষণাত্মক মনে হয়েছে। তবে পুরো ম্যাচেই স্মৃতি আক্তার ছিলেন ব্যতিক্রম। মূলত ডিফেন্ডার হলেও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রেইডে গিয়ে পয়েন্ট তুলে নিয়ে দলের জয়ে বড় অবদান রাখেন তিনি। উগান্ডা প্রথমবারের মতো এসেছে বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে। শারীরিক দিক দিয়ে তারা এগিয়েছিল স্বাগতিকদের চেয়ে। অভিজ্ঞতা ও ট্যাকটিকসে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। তারপরও প্রথমার্ধে উগান্ডাকে খুব বেশি পিছিয়ে রাখা যায়নি।
প্রথমার্ধে বাংলাদেশ মাত্র দুই পয়েন্টে (১৪-১২ পয়েন্টে) এগিয়ে ছিল। বিরতির পরও উগান্ডা বেশ কিছুক্ষণ ছিল খেলায়। একটা সময় তো বাংলাদেশের অর্ধে ছিলেন শুধু স্মৃতি আক্তার। পয়েন্টেও ছিল সমতা। পরে আফ্রিকান প্রতিনিধি উগান্ডা এগিয়েও গিয়েছিল। তবে ডু অর ডাই রেইডে দুজনকে ঘায়েল করে স্মৃতি দারুণভাবে দলকে ম্যাচে ফেরান। এরপর আর থামানো যায়নি স্বাগতিকদের।
দ্বিতীয়ার্ধে দুবার উগান্ডাকে অলআউট করে ব্যবধান অনেক বাড়িয়ে নেয় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা জিতে নেয় ৪২-২২ পয়েন্টে। অর্থাৎ দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ যেখানে ২৮ পয়েন্ট তুলেছে, সেখানে উগান্ডা তুলতে পারে মাত্র ১০ পয়েন্ট। রুপালি-স্মৃতিদের পরবর্তী ম্যাচ আজ জার্মানির বিপক্ষে।
১১ দলের খেলোয়াড়, কোচ, প্রতিনিধিদের বর্ণিল উপস্থিতি, ছাত্রছাত্রীর কলরবে মুখরিত গ্যালারি, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, আন্তর্জাতিক কাবাডি ফেডারেশনের (আইকেএফ) সভাপতি বিনোদ কুমার তিওয়ারি, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি বাহারুল আলম বিপিএম, সাধারণ সম্পাদক এসএম নেওয়াজ সোহাগ ও বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে শুরু হয় নারী কাবাডি বিশ্বকাপ।
২০১২ সালের ১৩ বছর পর বিশ্বকাপের আরেকটি আয়োজন নিয়ে উচ্ছ্বসিত সবাই। বৈশ্বিক নারী কাবাডি বিশ্বকাপ প্রথমবারের মতো আয়োজন করেছে বাংলাদেশ। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘কাবাডি আমাদের কাছে একটি খেলার চেয়েও বেশি কিছু। এটি আমাদের সাহস, আমাদের ঐতিহ্য এবং আমাদের জাতীয় চেতনার প্রতীক। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বাংলাদেশিরা এই খেলার সঙ্গে বেড়ে উঠেছে এবং এখন বিশ্ব মঞ্চে। বাংলাদেশে এটি আয়োজন করা একটি স্বপ্ন পূরণের মতো।’