দুর্দান্ত খেলে যাচ্ছিল বার্সেলোনা। দারুণ ছন্দ ধরে রেখেছিল চেলসিও। তাতে দুই জায়ান্টের লড়াই হবে জমজমাট। দল দুটির সাম্প্রতিক মাঠের পারফরম্যান্স তো তেমন আভাসই দিয়ে যাচ্ছিল। ফুটবলপ্রেমীরাও আশায় বুক বেঁধেছিলেন চ্যাম্পিয়নস লিগে রুদ্ধশ্বাস এই লড়াই উপভোগ করার। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি। সম্ভাব্য হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়ে গেল একপেশে। মঙ্গলবার রাতে চেলসির ঘরের মাঠ স্টামফোর্ড ব্রিজে বার্সা তো নিজেদের মেলেই ধরতে পারেনি সেভাবে। মাঠে নিষ্ক্রিয় ছিলেন বার্সার তরুণ তুর্কি লামিনে ইয়ামাল। বিপরীতে দ্যুতি ছড়িয়েছেন চেলসির জয়ের নায়ক এস্তেভাও। ম্যাচের ফলে তারও প্রভাব পড়ে। তাই তো মাঠের ‘অচেনা’ কাতালানদের ৩-০ গোলে ধসিয়ে দেন কোচ এনজো মারেস্কার শিষ্যরা।
এস্তেভাওয়ের তুলনা হয় লিওনেল মেসির সঙ্গে। অনেকে ব্রাজিলিয়ান এই তরুণকে ভালোবেসে ডাকেন ‘মেসিনিও’। ওই ম্যাচে ১৮ বছরের এ উইঙ্গার চোখ ধাঁধানো এক গোলে দেখিয়ে দেন, আর্জেন্টাইন জাদুকরের সঙ্গে তার তুলনার কার্যকারণ তো অবশ্যই আছে। পুরো ম্যাচে বার্সাকে যে শাসন করে গেছে চেলসি। এস্তেভাওয়ের ৫৫ মিনিটের চমৎকার গোলেই ফুটে ওঠে মাঠে দ্য ব্লুজ শিবিরের আধিপত্য বিস্তারের চিত্রনাট্য। তার আগে ম্যাচের ২৭ মিনিটে নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মারে অতিথি দলটি। বার্সার রক্ষণভাগের ফুটবলার জুলস কুন্দে বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে ভুলে নিজেদের জালেই জড়িয়ে দেন। আর ৭৩ মিনিটে বার্সার কফিনে তৃতীয় ও শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন ফরোয়ার্ড লিয়াম দালেপ।
মৌসুমটা দুর্দান্ত কাটছে এস্তেভাওয়ের। ক্লাব ও জাতীয় দলের জার্সিতে পেয়েছেন ১০ গোলের দেখা। এই ম্যাচের গোলটি এখন পর্যন্ত ক্যারিয়ারের সেরা গোল। তাতে এস্তেভাও এতটাই খুশি যে, নিজের মনের অনুভূতি প্রকাশ করার ভাষাটাই যেন হারিয়ে ফেলেছেন, ‘আমি কেমন অনুভব করছি, সেটা বলার ভাষা আমার নেই। এটা নিখুঁত একটি রাত ছিল। আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ সবকিছুর জন্য।’
অনিন্দ্যসুন্দর গোলটা কীভাবে হলো, সেটা যেন বুঝতেই পারেননি এস্তেভাও। পুরো প্রক্রিয়াটা ব্রাজিলের এ উদীয়মান তারকার কাছে যেন অবিশ্বাস্যই মনে হচ্ছে। যেন এখনো ঘোরের মধ্যেই আছেন, ‘সবকিছু আমার জন্য খুব দ্রুতই ঘটেছে। আমি বুঝে ওঠার আগেই যেন সব হয়ে গেল। শুধু একটু জায়গা খুঁজে পেলাম, কোনোমতে সেখান দিয়ে বেরিয়ে গেলাম এবং তারপর গোলটা করলাম। এটা ছিল আমার ক্যারিয়ারের জন্য খুবই বিশেষ একটি মুহূর্ত। আশা করি আরো অনেক গোল করব।’