যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, পূর্বসূরি জো বাইডেনের সই করা সব নথি বাতিল করছেন তিনি। এর মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকাকালে নির্বাহী ক্ষমতাবলে বাইডেন যেসব ক্ষমার আদেশ দিয়েছিলেন সেগুলোও রয়েছে।
ট্রাম্পের দাবি, জো বাইডেন অটোপেন ব্যবহার করে এই নথিগুলোতে সই করেছেন। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
আইন বিশেষজ্ঞরা এটিকে সাবেক প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্ত উল্টে দেওয়ার একটি অজুহাত বলে মনে করছেন।
অটোপেন হলো এমন একটি যন্ত্র, যা দিয়ে কারও সই হুবহু নকল করা যায়। সাধারণত প্রচুর নথিপত্র বা আনুষ্ঠানিক কাগজে নির্ভুলভাবে সই করার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রধান দলের প্রেসিডেন্টরাই চিঠি বা ঘোষণাপত্রে সইয়ের জন্য এটি ব্যবহার করে এসেছেন। তাই ট্রাম্পের এ ধরনের পদক্ষেপ নজিরবিহীন।
মার্কিন ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান পলিটিফ্যাক্ট জানাচ্ছে, আইন বিশারদরা প্রায় সবাই একমত যে, সংবিধান অনুযায়ী অনেক নথিপত্র আইনত কার্যকর করতে প্রেসিডেন্টকে নিজ হাতে সই করতেই হবে, এমন কোনো নিয়ম নেই। এছাড়া ফেডারেল আইনেও এমন কোনো ব্যবস্থা নেই, যার মাধ্যমে একজন প্রেসিডেন্ট তার আগের প্রেসিডেন্টের ক্ষমার আদেশ বাতিল করতে পারেন।
ট্রাম্প ও তার সমর্থকরা নানা ভিত্তিহীন দাবি করেছেন। তারা বলেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেন এই যন্ত্রটি ব্যবহার করায় তার কাজগুলো বাতিল হয়ে গেছে অথবা তিনি পুরোপুরি সচেতন ছিলেন না। তবে বাইডেন ক্ষমার আদেশে অটোপেন ব্যবহার করেছিলেন কি না, তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।
নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘যারা এই ধরনের সই করা ক্ষমা, সাজা মওকুফ বা অন্য কোনো আইনি নথি পেয়েছেন, তাদের জানানো হচ্ছে যে এই নথিটি সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়েছে এবং এর কোনো আইনি বৈধতা নেই।’
জানুয়ারিতে ক্ষমতা ছাড়ার আগে বাইডেন বেশ কিছু ব্যক্তিকে ক্ষমা করেছিলেন। এর মধ্যে তার পরিবারের সদস্যরাও ছিলেন যেমন তার দুই ভাই ও বোন। বাইডেনের বক্তব্য ছিল, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তদন্ত থেকে তাদের রক্ষা করতে চান তিনি। অহিংস মাদক অপরাধীদের সাজাও মওকুফ করেছিলেন তিনি।
ফক্স নিউজের খবর অনুযায়ী, ট্রাম্পের এই বাতিল করার চেষ্টা বাইডেনের ছেলে হান্টারের ক্ষমার ওপর প্রভাব ফেলবে না। কারণ, ওই কাগজটিতে বাইডেন কলম দিয়েই সই করেছিলেন। তবে সংবাদমাধ্যমটি অনুমান করেছে যে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ ড. অ্যান্থনি ফাউচিকে প্রভাবিত করতে পারে।
বাইডেনের ক্ষমার তালিকায় থাকা অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা হলেন—অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল মার্ক মিলি, ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে হামলার তদন্তকারী হাউস কমিটির সদস্যরা এবং সাবেক রিপাবলিকান প্রতিনিধি লিজ চেনি ও অ্যাডাম কিনজিংগার।