রাশিয়ার আগ্রাসন
তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাচ্ছে রাশিয়া। এই যুদ্ধ বন্ধ করতে চলতি বছর থেকে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ নিয়ে দফায় দফায় বৈঠকও করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে। তারপরও যুদ্ধবিরতির কোনো সুরাহাই হয়নি। এবার এই যুদ্ধ শেষ করতে ১২ দফা প্রস্তাব তৈরিতে ইউক্রেনের সঙ্গে কাজ করছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। চার ইউরোপীয় কূটনীতিক এমন তথ্য জানিয়েছেন।
একজন সিনিয়র ইউরোপীয় কূটনীতিক বলেছেন, গাজায় আমেরিকার ২০ দফা পরিকল্পনার আদলে এই প্রস্তাবেও একটি শান্তি বোর্ড গঠন করা হবে। ট্রাম্পের সভাপতিত্বে সেই বোর্ড প্রস্তাবিত এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করবে। তিনি আরো বলেছেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের দ্বারা আমেরিকাকে বোর্ডে রাখার জন্য এটি একটি প্রচেষ্টা।
ব্লুমবার্গ মঙ্গলবার একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে।
প্রস্তাবটিতে রাশিয়া যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলে নির্বাসিত সব শিশুকে ইউক্রেনে ফিরিয়ে আনা এবং বন্দিবিনিময়ের কথাও বলা হয়েছে। এছাড়া ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের নিশ্চয়তা। এর বিপরীতে রাশিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা ধীরে ধীরে তুলে নেওয়া হবে। তবে ইউক্রেনের ক্ষতিপূরণ বাবদ জব্দ করা রাশিয়ার সম্পদ থেকে তহবিল সংগ্রহ করা হবে।
প্রস্তাব প্রস্তুতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আরো তিন কূটনীতিক। মঙ্গলবার ইউক্রেনে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবিতে ওয়াশিংটনকে দৃঢ় থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ইউরোপীয় নেতারা। যেখানে বর্তমান যুদ্ধক্ষেত্র ভবিষ্যতের যেকোনো আলোচনার ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।
তবে মস্কোর দাবি, যুদ্ধবিরতি চুক্তির আগে রাশিয়াকে ইউক্রেনের কাছে আরো ভূখণ্ড ছেড়ে যেতে সম্মত হতে হবে।
একজন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক বলেছেন, উভয় পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলে এরপর তারা ভূখণ্ড নিয়ে আলোচনায় বসবে। তবে রাশিয়ার দখলকৃত ভূমিকে মস্কোর নিজেদের বলে দাবির বিষয়টিকে মেনে নেওয়া হবে না।
আরেকজন ইউরোপীয় কূটনীতিক বলেছেন, এটি এমন একটি প্রচেষ্টাÑযা মে এবং আগস্ট মাসে করেছিলাম। রাশিয়ার অবস্থান পরিবর্তনের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তবে প্রস্তাবনার বিস্তারিত আর কিছু প্রকাশ করেননি তারা।
এদিকে পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের মুখোমুখি বৈঠকের পরিকল্পনা স্থগিত করেছে হোয়াইট হাউস। পরে ট্রাম্প বলেছেন, কোনো ‘অর্থহীন বৈঠকে’ বসে সময় নষ্ট করতে চান না তিনি । এর আগে হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা বলেছিলেন, ‘অদূর ভবিষ্যতে’ ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠকের কোনো পরিকল্পনা নেই। যদিও গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প বলেছিলেন, দুই সপ্তাহের মধ্যে বুদাপেস্টে আলোচনায় বসবেন তারা।