মুন্সীগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে

হিসাবরক্ষণ দপ্তরে নিজের টাকা তুলতেও দিতে হয় ঘুষ

উপজেলা প্রতিনিধি, টংগিবাড়ী (মুন্সীগঞ্জ)
প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ১৩

ঘুষের প্রথা যেন এখানে স্বাভাবিক নিয়ম -এমন অভিযোগ উঠেছে মুন্সীগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ের বিরুদ্ধে। অভিযোগকারীদের ভাষায়, ‘টাকা ছাড়া এখানে কোনো ফাইল নড়াচড়া করে না।’

বিজ্ঞাপন

উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ আতিকুর রহমান সরাসরি এ অভিযোগ তুলেছেন।

তিনি বলেন, ‘সরকারি সেবার নামে চলছে প্রকাশ্য অর্থ বাণিজ্য। বেতন, পেনশন বা ভাতা—যা-ই নিতে যান, আগে ঘুষ দিতে হয়।’

অভিযোগে উঠে এসেছে নির্দিষ্ট নামও। ফায়ার সার্ভিসের সাব-অফিসার মকবুল হোসেন বলেন, ‘জিপিএফ থেকে টাকা তোলার সময় সহকারী নিরীক্ষক মো. মাসুদ পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন।’

একই অফিসের ফায়ার ফাইটার রুহুল আমিন জানান, ‘শ্রান্তি-বিনোদন ভাতা তোলার সময় আমার কাছ থেকেও এক হাজার টাকা চান মাসুদ।’

ঘটনার পর আতিকুর রহমান নিজেই সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানান।

তার দাবি, নিরীক্ষক মাসুদ হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা কাজী শহিদুল ইসলামের নাম ব্যবহার করে ঘুষ দাবি করেছেন।

অন্যদিকে এক শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা সামান্য বেতনের মানুষ। সেই টাকাটুকু তুলতেও ঘুষ দিতে হয়—এটা কষ্টকর ও অসম্মানজনক।’

অভিযুক্ত সহকারী নিরীক্ষক মো. মাসুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিল প্রক্রিয়া আপনারা বুঝবেন না। অফিসে আসেন, বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতে পারব।’

উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা কাজী শহিদুল ইসলাম জানান, ‘আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। মাসুদকে নিয়ে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। ইউএনও অফিসে দুই পক্ষের উপস্থিতিতে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আটকে থাকা ফাইলগুলো ইতোমধ্যে ছাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তদন্তে অনিয়মের প্রমাণ মিললে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত