সুনামগঞ্জের মধ্যনগর-মহিষখলা সড়কের মধ্যবর্তী সুমেশ্বরী নদীতে অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন সেতুটির কাজ দীর্ঘ সাত বছরেও শেষ হয়নি। ফলে নদী পারাপারে প্রতিনিয়তই দুর্ভোগে পড়ছেন মানুষ। জেলার গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্পটে যাতায়াতসহ দৈনন্দিন কাজে হাজারো মানুষের চলাচলের পথ মধ্যনগর-মহিষখলা সড়ক।
উপজেলার লক্ষাধিক মানুষসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত পর্যটকরাও এ পথ দিয়ে নিলাদ্রী লেক, বারেকের টিলা, শিমুল বাগানসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় ভ্রমণে যান। বেহাল সড়কে মোটরসাইকেল দিয়ে কোনোরকম যাতায়াত করলেও চরম দুর্ভোগে পড়েন ওই নদী পারাপারের সময়।
এলজিডি অফিস ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে, এখানকার মানুষের যাতায়াত সুবিধা সহজসাধ্য করতে মধ্যনগর-মহিষখলা সড়কের মধ্যবর্তী সুমেশ্বরী নদীএবং মধ্যনগর-ধর্মপাশা সড়কের উবদাখালী নদীর ওপর দুটি সেতু নির্মাণের জন্য ২০১৬ সালের ১০ জানুয়ারি সেতু নির্মাণ প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্প দুটি অনুমোদিত হয়।
২০১৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর এলজিইডির অধীনে পল্লি সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের (সিআইবিআরআর) আওতায় উবদাখালী নদীর ওপর ৪৭ কোটি ৮২ লাখ ১৪ হাজার ৮০০ টাকা ব্যয়ে ৩২০ মিটার এবং সোমেশ্বরী নদীর ওপর ৪১ কোটি ৭৫ লাখ ৯০ হাজার ২২১ টাকা ব্যয়ে ৩১০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ শুরু করে তমা কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
চুক্তি অনুযায়ী ২০২১ সালের ৮ জুন সেতু দুটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে ধর্মপাশা-মধ্যনগর সড়কের সংযোগ নদীতে নির্মিত সেতুটি চালু হলেও এখনো ঝুলে রয়েছে মধ্যনগর-মহিষখলা সড়কের সংযোগ সোমেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি। একাধিকবার কাজের মেয়াদ বাড়ানোর পরেও সেতুটির কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ফলে গত মাসে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে এলজিইডি।
তাই অর্ধসমাপ্ত এ সেতুটির কাজ এখন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। সেতুটির কাজ শেষ করতে আবার নতুন করে টেন্ডার হবে বলে জানিয়েছেন এলজিইডি অফিস।
তমা কনস্ট্রাকশনের ওই কাজের প্রজেক্ট ম্যানেজার মিয়া মোহাম্মদ নাছির জানান, কাজের মেয়াদ বাড়ানোর পরও আর্থিকসহ নানান জটিলতায় কাজটি নির্ধারিত সময়ে শেষ করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তী সময়ে সরকার পরিবর্তনের ফলে জটিলতা আরো বৃদ্ধি পায়। কিছুদিন আগে কাজটি একেবারেই আমাদের হাতছাড়া হয়ে পড়ে।
ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, এ সেতুটি নির্মাণের জন্য একাধিকবার কাজের মেয়াদ বাড়ানোর পরেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘তমা কনস্ট্রাকশন’ কাজ শেষ করতে পারেনি। তাই ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি বাতিল হয়েছে। নতুন করে ওই সেতুটির কাজ শেষ করতে টেন্ডার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

