মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের নোয়াগাঁও ও ইছবপুর এলাকায় অজগরের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গত এক সপ্তাহে এ দুটি গ্রাম থেকে চারটি অজগর সাপ উদ্ধার হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।
শুক্রবার সকাল আটটার দিকে নোয়াগাঁও ফকিরবাড়ি এলাকার একটি ধানক্ষেতে ধান কাটার সময় শ্রমিকরা একটি বিশাল অজগর দেখতে পান। মুহূর্তেই সেখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল, পরিবেশকর্মী রাজদীপ দেব দীপ ও রিদন গৌড় ঘটনাস্থলে গিয়ে সাপটিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরে সাপটি শ্রীমঙ্গল বন বিভাগের রেঞ্জ কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়।
এক সপ্তাহে নোয়াগাঁও ও ইছবপুর এলাকা থেকে আরও তিনটি অজগর উদ্ধার হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। একের পর এক অজগর উদ্ধারের পর গ্রামজুড়ে প্রশ্ন উঠেছে— কেন ঘন ঘন লোকালয়ে ঢুকছে অজগর? বনাঞ্চলে কি খাদ্য সংকট তৈরি হয়েছে, নাকি বাসস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে?
বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল বলেন, “শীতের সময় সাপ তুলনামূলক উষ্ণ জায়গার খোঁজে লোকালয়ের দিকে চলে আসে। পাশাপাশি খাদ্যের চাপ ও বাসস্থান সংকুচিত হওয়ায় এ ধরনের বড় সাপ বনাঞ্চল ছেড়ে আশপাশের গ্রামে ঢুকে পড়ে। তবে এই অজগরগুলো মানুষের প্রতি আক্রমণাত্মক নয়; যথাযথভাবে হ্যান্ডেল করা হলে কোনো ঝুঁকি থাকে না।”
বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ও অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান বলেন, “গ্রামীণ এলাকায় জলাভূমি ভরাট, ঝোপঝাড় কমে যাওয়া ও বনবেষ্টিত এলাকার ক্ষয়—এসব কারণেই বন্যপ্রাণীর স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। অজগরসহ অনেক বন্যপ্রাণী এখন বাধ্য হয়ে মানুষের বসতির কাছাকাছি চলে আসছে। এটি বাসস্থান সংকটের একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত।"
নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মফিজ আলী বলেন, “দিনে দিনে অজগর দেখা যাচ্ছে। ভয় তো লাগেই, তবে এখন কাউকে দেখলেই দ্রুত উদ্ধারকারী দলকে জানাই।”
উদ্ধারকারী দল জানায়, সচেতনতা বাড়ায় সাপগুলো অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে এবং কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।

