আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

ডিওএইচএস চত্বরে বাণিজ্যমেলায় রমরমা জুয়া বন্ধে আলটিমেটাম

কুমিল্লা প্রতিনিধি
ডিওএইচএস চত্বরে বাণিজ্যমেলায় রমরমা জুয়া বন্ধে আলটিমেটাম

কুমিল্লার বাণিজ্য মেলায় লটারির নামে শহরের কেন্দ্রে জমে উঠা জুয়ার রমরমা ব্যবসা বন্ধের দাবি জানিয়েছে কুমিল্লার সচেতন মহল। শিগগিরই মেলায় জুয়া বন্ধের আলটিমেটাম দিয়ে বিক্ষোভ করেছেন বিভিন্ন মসজিদের ইমামসহ মুসল্লিরা।

জানা যায়, ২৪ এপ্রিল কুমিল্লা নগরীর জাঙ্গালিয়া ডিওএইচএস চত্বরে শুরু হয় ‘কুমিল্লা বাণিজ্য মেলা’। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী মেলা শেষ হওয়ার কথা ছিল ১৪ জুন, কিন্তু ‘লটারির টান’ -এ মুগ্ধ হয়ে আয়োজকরা মেয়াদ বাড়িয়ে আরও ১৫ দিন চালিয়ে যান। যার প্রভাবে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর শহরে নেমে আসে যানজটের বিভীষিকা। টমছমব্রীজ , জাঙ্গালিয়া বাস স্ট্যান্ড, কুমিল্লা মেডিক্যাল রোডসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো কার্যত অচল হয়ে পড়ে।

বিজ্ঞাপন

মেলার মূল আকর্ষণ হয়ে উঠেছে ২০ টাকার লটারি টিকিট, যার মাধ্যমে সোনা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন পুরস্কারের প্রলোভন দেখানো হচ্ছে। এই লটারির প্রচার করছে কিছু ব্লগার, যারা শহরের বিভিন্ন জায়গায় ব্লগ করে প্রচারণা চালাচ্ছে।

প্রতিদিন মেলার গেটে হাজারো মানুষ ভিড় করছেন টিকিট কেনার আশায়। কেউ স্বর্ণ বিক্রি করে, কেউ ঋণ নিয়ে, আবার কেউ কিস্তি তুলে টিকিট কিনে ঘরে ফিরছেন নিঃস্ব হয়ে। বুড়িচং , আদর্শ সদর, সদর দক্ষিণ ও বরুড়ার আশপাশের উপজেলার একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, তারা প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকার টিকিট কিনে তাতে সিল মেরে দ্রুত ড্র’তে অংশগ্রহণ করছেন।

শুক্রবার এই জুয়ার বিরুদ্ধে কুমিল্লার তরুণরা মুখ খুলতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এবং জাঙ্গালিয়া যুব সংঘের কুমিল্লা মহানগর শাখার সদস্য সচিব রাশেদুল ইসলামসহ এলাকাবাসী মেলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।

টিকিট বিক্রির এই জুয়া যেন এখন নেশায় পরিণত হয়েছে শহরবাসীর জন্য। প্রতিদিন মেলায় বিক্রি হচ্ছে প্রায় ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকার টিকিট, অথচ পুরস্কার বাবদ দেয়া হচ্ছে মাত্র ১০-১৫ লাখ টাকার পণ্য। অর্থাৎ লাখ লাখ টাকা আয় করে নিচ্ছে আয়োজকরা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা মহানগরীর সদস্য সচিব রাশেদুল ইসলাম বলেন, জুমার নামাজের পর মেলায় জুয়া বন্ধের দাবিতে ছাত্র-জনতা ও বিভিন্ন মসজিদের ইমাম মুসল্লির অংশগ্রহণ করেছে। শীঘ্রই মেলা বন্ধ না করলে আমরা আরো বৃহৎ কর্মসূচি ঘোষণা করবো ।

কুমিল্লা মহানগর এবি পার্টির আহ্বায়ক গোলাম সামদানী বলেন, সেনাবাহিনীর দোহাই দিয়ে মেলা কর্তৃপক্ষ লটারির নামে জুয়ার জমজমাট ব্যবসা শুরু করেছে। কিন্তু সেনাবাহিনী বলেছে এটা মেলার জন্য ভাড়া দিয়েছে। লটারির নামে জুয়া খেলার জন্য নয়।

তিনি আরো বলেন, আমরা শুক্রবার জুমার নামাজের পর মেলা গেইটের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছি । অতি শীঘ্রই লটারির নামে জুয়া বন্ধ করার দাবি করেছি । মেলা চলুক কিন্তু কোনো জুয়া যেন না চলে।

কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাণিজ্য মেলায় লটারির নামে জুয়া খেলা বন্ধ ঘোষণা করা না হলে । বাণিজ্য মেলা অভিমুখে পদযাত্রা করবে কুমিল্লা নগরবাসী ।

মেলার আয়োজক কমিটির সদস্য বিল্লাল হোসেন বলেন, আমরা ২০ টাকায় টিকেট বিক্রি করছি। হাজার হাজার মানুষ ২০ টাকা টিকেট কিনে মেলায় প্রবেশ করছে। এর বাইরে কিছু নয়।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, মেলার অনুমোদন কুমিল্লা জেলা পুলিশ থেকে দেয়া হয়নি। যারা মেলার অনুমোদন দিয়েছে তারাই বলতে পারবে।

এই বিষয়ে জানতে কুমিল্লা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়াকে একাধিক বার ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন