নরসিংদী জেলা কারাগারে কয়েদির মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা

জেলা প্রতিনিধি, নরসিংদী
প্রকাশ : ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ২২: ২১

নরসিংদী জেলা কারাগারে জেল সুপার নির্যাতনে এক কয়েদির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন কয়েদির স্বজনরা। বুধবার ৩০ এপ্রিল বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত কয়েদি রোকন মিয়া (৩৫) সদর উপজেলার নজরপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদ আলীর ছেলে।

বিজ্ঞাপন

একদিকে জেল সুপার বলেন চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। আর অন্যদিকে ১০০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বলছেন, মৃত অবস্থায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে গ্রহণ করেন। এ নিয়ে রোকনের পরিবারের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে নানা সন্দেহ।

নিহতের ভাই রুবেল জানান, রোকন একেবারে সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিল, তার শুধুমাত্র ডায়াবেটিসের সমস্যা ছিল। এছাড়া শারীরিক কোনো সমস্যা ছিল না। জেলা কারাগারের পুলিশ তাকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। না হলে হঠাৎ করে সে কেনো মারা যাবে? রোকন মঙ্গলবার বিকেলে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ। কিন্তু এই বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের পরিবারের কাউকে কিছু জানানো হয়নি। তখনই আমার ভাই মারা যায়। বিষয়টি তারা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে।

বুধবার সকালে অন্য মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে হাসপাতালে এসে দেখি আমার ভাই মারা গেছে। আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে কারাগারে হত্যা করা হয়েছে।

জেল সুপারকে একাধিকবার অনুরোধ জানালেও তিনি বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন। এই ঘটনার পর পর নরসিংদী জেলা জুড়ে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কারাগারের মধ্যে একজন কয়দির মৃত্যু আর অন্যদিকে দু’জন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার বক্তব্য নিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে একের পর এক রহস্য ও ধুম্রজাল।

জেলসুপার মো. শামীম জানান, মাদক মামলায় আসামি হিসেবে রোকন মিয়া নরসিংদী কারাগারে বন্দী ছিল। মঙ্গলবার বিকেলে কয়েদি রোকন মিয়া হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ খবর অন্যান্য কয়েদিরা জানানোর সাথে সাথে তাকে নরসিংদী জেলা ১০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক রোকনকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি সে শারীরিক অসুস্থতার কারণে মারা গিয়েছে। জেলে তাকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি।

জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমান জানান, ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার পরে জেলা কারাগার হতে একজন বন্দিকে নিয়ে আসা হয়। আমাদের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত অবস্থায় রিসিভ করেন। চিকিৎসকের ভাষ্য অনুযায়ী তার গায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না এবং সে হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে পড়ে এবং তার ডায়বেটিস ছিল।

নিহতের লাশের সুরাতল রির্পোট তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এমএস

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত