ভোরের কুয়াশা কাটতে না কাটতেই পদ্মা নদীর বুক থেকে উঠে এলো সাড়ে ১১ কেজি ওজনের একটি বিশাল আইড় মাছ। খবর ছড়িয়ে পড়তেই দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের মাছ বাজারে তৈরি হয় আলাদা উত্তেজনা। আর সেই উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন এক বিদেশি অতিথি অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ‘ডন’।
পদ্মার জলে আইড় মাছটি জেলে আতর আলী হালদারের জালে আটকা পড়ে। দীর্ঘ সময় মাছ শিকার সংগ্রামের পর মাছটি তীরে তোলা হয়। পরে তা বিক্রির জন্য আনা হয় দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের পরিচিত আড়তদার রেজাউল মন্ডলের আড়তে। মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে খবর বড় আইড় উঠেছে পদ্মায়।
সেখানেই উন্মুক্ত নিলাম শুরু হয়। নিলামে অংশ নেন দৌলতদিয়া ঘাটের মাছ ব্যবসায়ীরা। নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসাবে কেজি প্রতি ২ হাজার ৭০০ টাকা দরে মোট ৩১ হাজার ৫০ টাকায় মাছটি কিনে নেন দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের মাছ ব্যবসায়ী সম্রাট শাহজাহান শেখ।
ঠিক তখনই ঘটে ভিন্ন এক দৃশ্যপটের সূচনা। অস্ট্রেলিয়া থেকে সদ্য বাংলাদেশে আসা ডন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পদ্মার বড় মাছের খবর দেখে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ছুটে আসেন। আইড় মাছটি চোখে পড়তেই তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং দাম নিয়ে আলোচনা হয়।
পরবর্তীতে কেজি প্রতি ২ হাজার ৮০০ টাকা দরে মোট ৩২ হাজার ২০০ টাকায় মাছটি কিনেও নেন ডন। বিদেশি ক্রেতার এমন সরাসরি মাছ বাজারে উপস্থিতি ঘাট এলাকার মানুষ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে বাড়তি কৌতূহল তৈরি করে।
স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, আইড় মাছ পদ্মার অন্যতম সুস্বাদু ও দামী মাছ। বড় আকারের এমন আইড় সচারাচর ধরা পড়েনা। তাই এমন মাছ উঠলে নিলামে দাম অন্যান্য মাছের চেয়ে স্বাভাবিকভাবেই বেশি হয়।
ডন জানান, বাংলাদেশে এসে দেশীয় খাবার ও নদীর মাছের প্রতি তার আগ্রহ তৈরি হয়েছে। পদ্মার মাছের সুনাম শুনেই তিনি দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে এসেছেন। সরাসরি নদীপাড়ের বাজার থেকে মাছ কেনার অভিজ্ঞতা তার কাছে ভিন্ন ও আনন্দদায়ক বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় জেলে ও ব্যাবসায়ীরা বললেন পদ্মার স্রোত, জেলের জাল আর ফেরিঘাটের কোলাহলের মাঝেই যেন আবারও প্রমাণ হলো এই নদী শুধু জীবিকার নয়, গল্প আর সম্ভাবনারও অফুরন্ত উৎস।

