দুই মামলায় সাভারে মুক্তিযোদ্ধাসহ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ২২
আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ২৮

সাভারে খ্রিষ্টান পল্লীর বাসিন্দারা মামলা আতঙ্কে ভুগছেন। শফিউল আজম নামের এক ব্যক্তির মামলায় আসামি হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত বনিফাস। এই মুক্তিযোদ্ধার জমি দখল করতে না পেরে তার পরিবারের কয়েক সদস্যের নামে দুটি মামলা দায়ের করেছে শফিউল আজম।

বিজ্ঞাপন

মামলায় দীর্ঘদিন হাজতবাস করেছেন কয়েক জন। ইতোমধ্যে মামলা মাথায় নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন একজন।

জানা গেছে, সাভারে বিরুলিয়া ইউনিয়নের খ্রিষ্টান অধ্যুষিত কমলাপুরের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত বনিফাস গমেজ ও তার স্ত্রী জুলিয়েট গমেজ ২০০০ সালের ৩০ জুলাই কমলাপুর মৌজায় সাধনা রোজারিও গংদের কাছ থেকে ১৬ শতাংশ জমি ক্রয় করে ভোগ দখল করে আসছিলেন। সর্ব শেষ বিআরএস রেকর্ডে তারা নাম খতিয়ানভুক্ত করেন। যার নম্বর ৬৬০৭। যার খতিয়ান নম্বর ২১৮০। কিন্তু এ জমির পাশেই একই দাগে ভিন্ন জমি মালিক থেকে আলাদা চৌহদ্দিতে ২০১৪ সালে ৮ শতাংশ জমি কিনেন জনৈক শফিউল আজম।

সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত বনিফাস গমেজ ও তার স্ত্রী জুলিয়েট গমেজের জমি নিজের দাবি করে দখলের নেয়ার জন্য ৩০/৪০ জন সন্ত্রাসী নিয়ে সীমানা প্রাচীর করতে থাকেন শফিউল আজম। তাকে সহযোগিতা করেন স্থানীয় মৃত যোশেফ রোজারিওর পুত্র আওয়ামী লীগ নেতা সত্য রোজারিও, নির্মল রিবেরু, লরেন্স রোজারিও নরুসহ কয়েকজন। তবে এ যাত্রায় গ্রামবাসীর প্রতিরোধের মুখে তারা পালিয়ে যায়।

শফিউল আজম গোপালগঞ্জের বাসিন্দা। পত্রিকার কার্ড ধরিয়ে দিয়ে নিজেকে সাংবাদিক ও আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দিতেন। ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। সম্প্রতি তার দায়ের করা মামলায় তিন মাস হাজতবাস করেন স্বপন রোজারিও, তার ভাই খোকন রোজারিওসহ বেশ কয়েকজন। কারাবাসের ফলে অসুস্থ হয়ে স্বপন রোজারিও জামিন লাভের পরপরই মামলা মাথায় নিয়ে মারা যান।

এছাড়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত বনিফাসের আত্মীয়স্বজনকে। অভিযোগ আছে, প্রতারক শফিউল আজম এলাকার একাধিক ব্যক্তির ছবি ফটোশপের মাধ্যমে এডিট করে তার মনোনীত অনলাইন পোর্টালে আপলোড দেন। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে আদালতে আইসিটি আইনে মামলা করার প্রস্তুতি নিয়েছেন। এরইমধ্যে প্রতারক চক্রের একটি মামলা তদন্তকালে ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। অপর মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছে।

এ বিষয়ে জানতে শফিউল আজমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও ফোন রিসিভ না করায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত বনিফাস বাদী হয়ে চিফ জুডিশিয়াল আদালতে মামলা (১০৮৩/২৫) দায়ের করেছেন। যা পিবিআই তদন্ত করছেন। এ বিষয়ে পিবিআই কর্মকর্তা এস আই মানিক সাহা জানান, তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। দ্রুত মামলার প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। এ ছাড়া অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল আদালতে জমি দখলের অভিযোগে ৫ জকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগী শাহাদাত হোসেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত