জেলা প্রতিনিধি, শরীয়তপুর
ক্রমেই ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে পদ্মা। বর্ষায় পানি বাড়ায় নদী কাঁদাচ্ছে তীরবর্তী হাজার হাজার পরিবারের সদস্যদের। ইতোমধ্যে ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন শরীয়তপুরের জাজিরার শতাধিক পরিবার। প্রবল ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বাড়ি, মসজিদ, কাঁচা-পাকা ভবনসহ নানা স্থাপনা। ঠিকানা হারিয়ে ভাসমান জীবনযাপন করছেন বহু মানুষ। সব হারিয়ে সরকারি আশ্রয়ের দিকে তাকিয়ে আছেন তারা।
বর্ষায় হালচাল জানতে চাইতেই হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন উপজেলার মাঝিরঘাট এলাকার বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব শিরিনা বেগম। তিনি বলেন, ‘আমার সেই ঘরডা আর জায়গাডাও চোখের সামনে নদীতে চলে গেল। এখন পরিত্যক্ত বস্তা কুড়ায়ে রাইতে শুইতেছি। বাঁচার কোনো উপায় নাই, সরকার যদি খাওন-থাকার ব্যবস্থা না করে, মরাই ভালো।’
এই একটি কণ্ঠেই ধ্বনিত হচ্ছে পুরো এলাকার শত শত পরিবারের অসহায়ত্বের চিত্র। পদ্মা নদীর তীব্র ভাঙনে গত কয়েক মাসে নিঃস্ব হয়ে গেছেন জাজিরার আলম খারকান্দি, ওছিম উদ্দিন মাদবরকান্দি, উকিল উদ্দিন মুন্সিকান্দি ও মাঝিরঘাট এলাকার বহু মানুষ।
একটি উপজেলাতেই এ পর্যন্ত নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে অন্তত ৭৫০ মিটার তীররক্ষা বাঁধ, ধসে গেছে প্রায় ৫০টির বেশি বসতবাড়ি ও ৩০টির বেশি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। আরো ৬০০ পরিবার আছে চরম ঝুঁকিতে। বাজারঘেঁষা এলাকায় ভাঙন অব্যাহত থাকায় মাঝিরঘাটের ২০০টির বেশি দোকান যে কোনো সময় নদীতে চলে যেতে পারে।
২০১২ সালে পদ্মা সেতুর দক্ষিণ প্রান্তের নিরাপত্তায় প্রায় ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ তীররক্ষা বাঁধ। এই বাঁধ সংরক্ষণে ছিল সেনানিবাস, জাজিরা ক্যান্টনমেন্ট স্কুল, থানা ভবনসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
কিন্তু পদ্মার গতিপথ পরিবর্তন হয়ে ধাবিত হয় ওই বাঁধের দিকেই। পানির প্রবল স্রোতের চাপে গত বছরের নভেম্বরে বাঁধে প্রথম ধস নামে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, ৭ জুন, ৭ জুলাই, ৯ জুলাই, ২৩ জুলাই এবং ৩১ জুলাই পর্যন্ত একাধিকবার ভাঙনের কারণে বাঁধটির মূল অংশসহ নদীভূমি ভেঙে গেছে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে।
মানুষের জীবনে নেমে এসেছে দুর্বিষহ বিপর্যয়, বাড়িঘরহীন মানুষগুলো এখন খোলা আকাশের নিচে, রাস্তাঘাটের পাশে, কারও পুরোনো ঘরের বারান্দায় আশ্রয় নিচ্ছেন। পেটের ক্ষুধা আর চোখের পানিতে তাদের জীবন এখন ঘোলা পদ্মার চেয়েও বেশি অন্ধকার।
স্থানীয় সোনিয়া আক্তার বলেন, ‘আমার তিনটা ঘরের একটাও রক্ষা করতে পারিনি। কোনোমতে পোলাপানডিরে লইয়া জীবন বাঁচাইছি। এখন খাবার নাই, মাথাগোঁজার ঠাঁই নাই। সরকার যদি কিছু দিতো, আমাগো নতুন করে বাঁচার সুযোগ হইতো।’
আবুল মাদবর বলেন, ‘কয়ডা টিন আর কাঠ বাঁচাইছি, কিন্তু রাখবো কোথায়? রাস্তার পাশে ফালাইয়া রাখছি। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করলে খোলা আকাশই আমাগো মাথার ছাদ হইবো।’
শিরিনা বেগম নিজের দুর্দশার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘ছোটবেলা মা-বাবারে হারাইছি, ৩২ বছর আগে স্বামীও মরছে। অনেক কষ্টে মানুষের বাসায় কাজ করে একটা ছোট ঘর বানাইছিলাম। সেই ঘর আর জায়গাডাও নদী লইয়া গেছে। এখন সম্বল বলতে কিছু পুরোনো ছেঁড়া জিওব্যাগ, যেগুলো জলে ধুয়ে রাতে বিছানা পেতে ঘুমাই।’
স্থানীয়রা বলছেন, জাজিরার মাঝিরঘাট এলাকাজুড়ে এখন আতঙ্ক, কান্না আর বাঁচার আকুতি। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতি, বাড়ছে মানুষের দুর্ভোগ। এখনই যদি স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধ, খাদ্য সহায়তা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত না করা হয়, তাহলে শুধু ভৌগোলিক ক্ষতিই নয়—এই অঞ্চলে দেখা দিতে পারে এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়।
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা তৈরি করে দ্রুত খাদ্য সহায়তা ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে খাস জমির তালিকা তৈরি করতে। যারা নদীতে সব হারিয়েছেন, তাদের সেই জমিতে পুনর্বাসন করা হবে। অন্যদিকে যাদের জমি আছে, ঘরবাড়ি নেই, তাদের জন্য দেওয়া হবে টিনসহ নির্মাণসামগ্রী।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তারেক হাসান বলেন, ‘আমরা আপদকালীন ব্যবস্থা হিসেবে জিওব্যাগ ফেলার কাজ করছি। তবে এই নদীতে যে ধরনের স্রোত, তাতে ভাঙন পুরোপুরি রোধ করা যায় না। একমাত্র সমাধান স্থায়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।’
তিনি আরো বলেন, স্থায়ী তীররক্ষা প্রকল্পের প্রস্তাবনা ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্রুত কাজ শুরু হবে।
ক্রমেই ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে পদ্মা। বর্ষায় পানি বাড়ায় নদী কাঁদাচ্ছে তীরবর্তী হাজার হাজার পরিবারের সদস্যদের। ইতোমধ্যে ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন শরীয়তপুরের জাজিরার শতাধিক পরিবার। প্রবল ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বাড়ি, মসজিদ, কাঁচা-পাকা ভবনসহ নানা স্থাপনা। ঠিকানা হারিয়ে ভাসমান জীবনযাপন করছেন বহু মানুষ। সব হারিয়ে সরকারি আশ্রয়ের দিকে তাকিয়ে আছেন তারা।
বর্ষায় হালচাল জানতে চাইতেই হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন উপজেলার মাঝিরঘাট এলাকার বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব শিরিনা বেগম। তিনি বলেন, ‘আমার সেই ঘরডা আর জায়গাডাও চোখের সামনে নদীতে চলে গেল। এখন পরিত্যক্ত বস্তা কুড়ায়ে রাইতে শুইতেছি। বাঁচার কোনো উপায় নাই, সরকার যদি খাওন-থাকার ব্যবস্থা না করে, মরাই ভালো।’
এই একটি কণ্ঠেই ধ্বনিত হচ্ছে পুরো এলাকার শত শত পরিবারের অসহায়ত্বের চিত্র। পদ্মা নদীর তীব্র ভাঙনে গত কয়েক মাসে নিঃস্ব হয়ে গেছেন জাজিরার আলম খারকান্দি, ওছিম উদ্দিন মাদবরকান্দি, উকিল উদ্দিন মুন্সিকান্দি ও মাঝিরঘাট এলাকার বহু মানুষ।
একটি উপজেলাতেই এ পর্যন্ত নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে অন্তত ৭৫০ মিটার তীররক্ষা বাঁধ, ধসে গেছে প্রায় ৫০টির বেশি বসতবাড়ি ও ৩০টির বেশি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। আরো ৬০০ পরিবার আছে চরম ঝুঁকিতে। বাজারঘেঁষা এলাকায় ভাঙন অব্যাহত থাকায় মাঝিরঘাটের ২০০টির বেশি দোকান যে কোনো সময় নদীতে চলে যেতে পারে।
২০১২ সালে পদ্মা সেতুর দক্ষিণ প্রান্তের নিরাপত্তায় প্রায় ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ তীররক্ষা বাঁধ। এই বাঁধ সংরক্ষণে ছিল সেনানিবাস, জাজিরা ক্যান্টনমেন্ট স্কুল, থানা ভবনসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
কিন্তু পদ্মার গতিপথ পরিবর্তন হয়ে ধাবিত হয় ওই বাঁধের দিকেই। পানির প্রবল স্রোতের চাপে গত বছরের নভেম্বরে বাঁধে প্রথম ধস নামে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, ৭ জুন, ৭ জুলাই, ৯ জুলাই, ২৩ জুলাই এবং ৩১ জুলাই পর্যন্ত একাধিকবার ভাঙনের কারণে বাঁধটির মূল অংশসহ নদীভূমি ভেঙে গেছে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে।
মানুষের জীবনে নেমে এসেছে দুর্বিষহ বিপর্যয়, বাড়িঘরহীন মানুষগুলো এখন খোলা আকাশের নিচে, রাস্তাঘাটের পাশে, কারও পুরোনো ঘরের বারান্দায় আশ্রয় নিচ্ছেন। পেটের ক্ষুধা আর চোখের পানিতে তাদের জীবন এখন ঘোলা পদ্মার চেয়েও বেশি অন্ধকার।
স্থানীয় সোনিয়া আক্তার বলেন, ‘আমার তিনটা ঘরের একটাও রক্ষা করতে পারিনি। কোনোমতে পোলাপানডিরে লইয়া জীবন বাঁচাইছি। এখন খাবার নাই, মাথাগোঁজার ঠাঁই নাই। সরকার যদি কিছু দিতো, আমাগো নতুন করে বাঁচার সুযোগ হইতো।’
আবুল মাদবর বলেন, ‘কয়ডা টিন আর কাঠ বাঁচাইছি, কিন্তু রাখবো কোথায়? রাস্তার পাশে ফালাইয়া রাখছি। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করলে খোলা আকাশই আমাগো মাথার ছাদ হইবো।’
শিরিনা বেগম নিজের দুর্দশার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘ছোটবেলা মা-বাবারে হারাইছি, ৩২ বছর আগে স্বামীও মরছে। অনেক কষ্টে মানুষের বাসায় কাজ করে একটা ছোট ঘর বানাইছিলাম। সেই ঘর আর জায়গাডাও নদী লইয়া গেছে। এখন সম্বল বলতে কিছু পুরোনো ছেঁড়া জিওব্যাগ, যেগুলো জলে ধুয়ে রাতে বিছানা পেতে ঘুমাই।’
স্থানীয়রা বলছেন, জাজিরার মাঝিরঘাট এলাকাজুড়ে এখন আতঙ্ক, কান্না আর বাঁচার আকুতি। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতি, বাড়ছে মানুষের দুর্ভোগ। এখনই যদি স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধ, খাদ্য সহায়তা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত না করা হয়, তাহলে শুধু ভৌগোলিক ক্ষতিই নয়—এই অঞ্চলে দেখা দিতে পারে এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়।
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা তৈরি করে দ্রুত খাদ্য সহায়তা ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে খাস জমির তালিকা তৈরি করতে। যারা নদীতে সব হারিয়েছেন, তাদের সেই জমিতে পুনর্বাসন করা হবে। অন্যদিকে যাদের জমি আছে, ঘরবাড়ি নেই, তাদের জন্য দেওয়া হবে টিনসহ নির্মাণসামগ্রী।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তারেক হাসান বলেন, ‘আমরা আপদকালীন ব্যবস্থা হিসেবে জিওব্যাগ ফেলার কাজ করছি। তবে এই নদীতে যে ধরনের স্রোত, তাতে ভাঙন পুরোপুরি রোধ করা যায় না। একমাত্র সমাধান স্থায়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।’
তিনি আরো বলেন, স্থায়ী তীররক্ষা প্রকল্পের প্রস্তাবনা ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্রুত কাজ শুরু হবে।
নিখোঁজ মুফতি মুহিবুল্লাহর ছেলে আব্দুল্লাহ জানান, তিনি জুমার নামাজে হিন্দু সম্প্রদায়ের সংগঠন ইসকন নিয়ে বয়ান করে ছিলেন। এরপর থেকে তাকে হুমকি দিয়ে বেশ কয়েকটি উড়ো চিঠি দেয়া হয়। এরপর থেকে তিনি বিষয়টি নিয়ে মসজিদ কমিটির সাথে কথা বলেন। একপর্যায়ে বুধবার সকাল থেকে তিনি নিখোঁজ হন।
১৫ মিনিট আগেগাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ভরতখালীতে নদী শাসন ও ভাঙনরোধ প্রকল্পের কাজে বাধার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে গ্রামবাসী। বুধবার বিকেলে যমুনা নদীর তীর সংলগ্ন এলাকায় স্থানীয় নদীপাড়ের মানুষ এ মানববন্ধন করে।
৩৪ মিনিট আগেস্থানীয়রা জানান, আলমাস উপজেলার ৩ নম্বর চারিকাটা ইউনিয়নের নয়াখেল পূর্ব গ্রামের শরীফ উদ্দিনের ছেলে। জকিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের (১৯ বিজিবি) সুইরঘাট বিওপির চার বিজিবি সদস্য দুটি মোটরসাইকেলযোগে চোরাইপণ্যবাহী একটি পিকআপকে ধাওয়া করেন। এ সময় বিজিবির ছোড়া গুলিতে আলমাস গুলিবিদ্ধ হন।
১ ঘণ্টা আগেচলতি বছরের ডিসেম্বরে নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা হলে বর্তমান সরকার আর কোনো প্রকল্পের উদ্বোধন করতে পারবে না। সে কারণে দ্রুত পিডি নিয়োগ করে নভেম্বরেই কাজ শুরু করতে হবে। সেটি করা না হলে সারা দেশে এই আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে চীন টাকা না দিলেও নিজের টাকা দিয়ে কাজ শুরুর দাবি জানান তারা।
২ ঘণ্টা আগে