খুলনা ব্যুরো
খুলনায় মুখোমুখি অবস্থানে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া পক্ষগুলো। উভয়ের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আর প্রতিহত করার ঘোষণায় বাড়ছে উত্তাপ উত্তেজনা।
সোমবার এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ ও জুলাই আন্দোলনের বর্ষপূর্তির মাসব্যাপি কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
একটি পক্ষ মেলা ও কনসার্ট আয়োজন করতে চাইলে কোনো ধরনের অনৈসলামিক কাজের অনুমতি না দিতে প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছে অন্যপক্ষ।
জানা গেছে, ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান চলাকালে আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি বর্ষণ, গণগ্রেফতার ও বর্বরোচিত নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্ত ছিলেন পুলিশের এসআই সুকান্ত দাস ২৪ মে মঙ্গলবার খুলনায় একটি মামলায় স্বাক্ষী দিয়ে বর্তমান কর্মস্থল চুয়াডাঙ্গায় ফেরার পথে নগরীর ঈস্টার্ণ গেট এলাকায় স্থানীয় জনতার হাতে আটক হন। জনগন তাকে উত্তমমধ্যম দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। পুলিশ তাকে হেফাজতে নিয়ে চিকিৎসা প্রদানের পর ছেড়ে দেয়। পরদিন বিষয়টি জানাজানি হলে নগরীতে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
৫ আগস্টের পরে সুকান্তর বিরুদ্ধে থানায় ও আদালতে চারটি মামলা হয়। অবিলম্বে সুকান্তকে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে নগরী। ছাত্র জনতার ব্যানারে বুধবার (২৫ জুন) খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ হেড কোয়ার্টার ঘেরাও করে বিক্ষোভ হয়।
ওই রাতেই খুলনা ও চুয়াডাঙ্গা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে সুকান্তকে গ্রেপ্তার করে।
এরপর আন্দোলকারীদের একটি অংশ রাজপথ থেকে সরে আসলেও অপর অংশ নগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি, খুন
রাহাজানি, চাঁদাবাজি, কিশোর গ্যাং বৃদ্ধি, মাদকের ভয়াল ছোবল বন্ধে পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দারের পদত্যাগ দাবি করেন। এক দফা দাবিতে তারা সড়ক অবরোধ করে, কেএমপির সদর দরজায় তালা ঝুলিয়ে ও রাস্তায় টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে কর্মসূচি পালন করে। এ পর্যায়ে ঘোষণা দিয়ে কর্মসূচির সাথে যুক্ত হয় বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল।
শনিবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব খুলনা প্রেসক্লাব পরিদর্শনে আসেন। ওই সময় কেএমপি অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেয়া বিক্ষোভকারীরা প্রায় তিন কিলোমিটার পথ মিছিল করে খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে এসে অবস্থান নেয় এবং কেএমপি কমিশনারের বিষয়ে সরকারের সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত দাবি করে। তারা দু’ঘন্টারও বেশি
সময় সেখানে অবস্থান নেন। ঢাকায় ফিরে ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে কথা বলে সমস্যার সুরাহা করবেন- প্রেস সচিবের এমন আশ্বাসের পর ফিরে যান তারা।
এদিকে রোববার জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের বর্ষপূর্তি উপলেক্ষ মাসব্যাপি কর্মসূচির অংশ হিসেবে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে মেলা আয়োজনের অনুমতি চেয়ে খুলনা জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আবেদন দিতে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। এখানে মেলার আয়োজন নিয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে মতবিরোধ দেখা দিলে তারা তিন ঘন্টারও বেশি সময় সেখানে অবস্থান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
নগরীতে একের পর এক মব সৃষ্টির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সোমবার (৩০ জুন) দুপুর দেড়টায় খুলনা প্রেসক্লাবে প্রেস ব্রিফিং করে জুলাই বিপ্লবের সমমনা আট সংগঠনের নেতারা।
তারা এ সকল ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, জুলাই আন্দোলন দমনে এসআই সুকান্তর নির্মম আচরণের জন্য তাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে
আমার আন্দোলন শুরু করেছিলাম। কোনো ব্যক্তিকে টিকিয়ে রাখা বা নামানো জন্য আন্দোলন করিনি। সুকান্ত গ্রেপ্তার হওয়ায় আমার আন্দোলন থেকে সরে আসি। কিন্তু একটি বিশেষ মহল আমাদের গুটিকয়েক সহযোদ্ধাকে ব্যবহার করে আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে।
তারা বলেন, সরকার ও কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির সাথে সমন্বয় করে খুলনায় জুলাই মাসব্যাপি কর্মসূচি পালন করবো। এমন কোনো কাজ করবো না যা জুলাই আন্দোলনকে বিতর্কিত করে। কেউ এমন কাজ করতে চাইলে তাদেরকে প্রতিহত করা হবে বলেও ঘোষণা দেন। জুলাই আন্দোলনের বর্ষপূর্তির সাথে মেলা বা কনসার্টের কোনো সম্পর্ক নেই বা থাকতে পারে না বলে পরিস্কার ভাষায় জানিয়ে দেন তারা।
ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখেন জুলাই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে চোখ হারানো যোদ্ধা আব্দুল্লাহ আল শাফিল। উপস্থিত থেকে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আল শাহিরয়ার, রেড জুলাইয়ের মিরাজুল ইসলাম ইমন, জুলাই রেভ্যুলেশনারী এলায়েন্সের শেখ জাহিদুল ইসলাম জিহাদ, জাস্টিস ফর
জুলাইয়ের সাঈফ নেওয়াজ, ইনকিলাব মঞ্চের আব্দুল মুহাইমিন আদীব, আপ বাংলাদেশের ফয়জুল্লাহ ইকবাল শাকিল, রঙ মশালের মুনতাসির এবং প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট এলায়েন্সের প্রতিনিধিরা।
কেএমপি হেড কোয়ার্টার ঘেরাও কর্মসূচি অব্যাহত:
এদিকে পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ দাবিতে সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে পুনরায় কেএমপি হেড কোয়াটার্রের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। খুলনার সাধারণ ছাত্র-জনতার ব্যানারে অনুষ্ঠিত হলেও এদিনের বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়েছেন ছাত্রদল, যুবদলের বর্তমান ও সাবেক পদধারী নেতারা। তারা মুর্হুমুর্হু শ্লোগানে অবিলম্বে পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ দাবি করেন।
একটি পক্ষের প্রেস ব্রিফিং ও আন্দোলন কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করা হলে জহুরুল তানভির আমার দেশকে বলেন, আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে কর্মসুচি পালন করছি না। ফলে অন্যদের আপত্তি জানানোর কোনো সুযোগ নেই। আজ যারা প্রেস ব্রিফিং করেছেন, তাদের অধিকাংশই কোনো পদে নেই। বরং যারা আন্দোলন করছি তারাই বিভিন্ন পদে আছি। এভাবে প্রেস ব্রিফিং করে তারা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।
কেএমপি হেড কোয়ার্টার ছাড়াও সোমবার পুলিশের ডিসি (সাউথ) ও ডিসি (নর্থ) অফিস ঘেরাও করার কথা ছিল। কিন্ত জনগনের দূর্ভোগের কথা চিন্তা করে শুধুমাত্র হেড কোয়ার্টার ঘেরাও পালিত হচ্ছে। আজকের কর্মসূচি রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। দাবিপূরণ না হলে খুলনা অচল কর্মসূচির চিন্তা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
মেলা বন্ধের দাবিতে ইমাম পরিষদের স্মারকলিপি:
নগরীর শিববাড়ি মোড়ের জিয়া হল প্রাঙ্গণে মেলার আয়োজন বন্ধের জন্য খুলনা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে ইমাম পরিষদ। সোমবার সকালে ইমাম পরিষদের নেতারা এই স্মারকলিপি দেন।
জেলা ইমাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা গোলাম কিবরিয়া স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়, খুলনা শহরের অত্যন্ত ব্যস্তময় স্থান বাবরি চত্বরে (শিববাড়ি মোড়) ও পরিত্যক্ত জিয়া হল এলাকায় মাসব্যাপী মেলার আয়োজনের চেষ্টা চলছে। অতীতে আমরা দেখেছি যেখানেই মেলার আয়োজন করা হয়েছে সেখানে নগ্নতা ও অনৈতিকতা থাকে। লটারি, জুয়াসহ অনেক অসামাজিক ও অনৈসলামিক কাজ চলে থাকে। ফলে সমাজে ও রাষ্ট্রে অপরাধ প্রবনতা বৃদ্ধি পায়। এধরণের কোনো মেলার অনুমতি না দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয় স্মারকলিপিতে ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইমাম পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ এএফএম নাজমুস সউদ, মাওলানা নাসির উদ্দিন কাসেমী, অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রহমান, মাওলানা মুশফিকুর রহমান, মাওলানা আনোয়ারুল আজম, মোল্লা মিরাজুল হক, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা হেকমত উল্লাহ মাদানী, ডক্টর মুফতি আব্দুর রহিম, মুফতি জিহাদুল ইসলাম প্রমুখ।
জানা গেছে, গত বুধবার জিয়া হলের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে জুলাই উদযাপনের জন্য মাসব্যাপী নানা অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি চেয়ে খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়। আবেদনে সেখানে একটি জুলাই মঞ্চ, জুলাই কর্ণার, জুলাই প্রদর্শনী, বইয়ের দোকান, কিছু দেশীয় কুটির শিল্প, সাংস্কৃতি ও দেশীয় খাবারের দোকান থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়। প্রদর্শনী ও দোকান স্থাপনের কথা বলা হলেও সেখানে মেলার আয়োজন চলছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এদিকে আবেদন করার পরপরই মেলার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের মালিক পতিত প্রধানমন্ত্রী হাসিনার চাচাতো ভাইদের আস্থাভাজন যুবলীগ নেতা রাসেল মিয়া তার ফেসবুকে পেজে মেলা নিয়ে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। এ নিয়ে সচেতন মহলে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ, চলছে নানা সমালোচনা।
খুলনায় মুখোমুখি অবস্থানে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া পক্ষগুলো। উভয়ের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আর প্রতিহত করার ঘোষণায় বাড়ছে উত্তাপ উত্তেজনা।
সোমবার এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ ও জুলাই আন্দোলনের বর্ষপূর্তির মাসব্যাপি কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
একটি পক্ষ মেলা ও কনসার্ট আয়োজন করতে চাইলে কোনো ধরনের অনৈসলামিক কাজের অনুমতি না দিতে প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছে অন্যপক্ষ।
জানা গেছে, ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান চলাকালে আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি বর্ষণ, গণগ্রেফতার ও বর্বরোচিত নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্ত ছিলেন পুলিশের এসআই সুকান্ত দাস ২৪ মে মঙ্গলবার খুলনায় একটি মামলায় স্বাক্ষী দিয়ে বর্তমান কর্মস্থল চুয়াডাঙ্গায় ফেরার পথে নগরীর ঈস্টার্ণ গেট এলাকায় স্থানীয় জনতার হাতে আটক হন। জনগন তাকে উত্তমমধ্যম দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। পুলিশ তাকে হেফাজতে নিয়ে চিকিৎসা প্রদানের পর ছেড়ে দেয়। পরদিন বিষয়টি জানাজানি হলে নগরীতে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
৫ আগস্টের পরে সুকান্তর বিরুদ্ধে থানায় ও আদালতে চারটি মামলা হয়। অবিলম্বে সুকান্তকে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে নগরী। ছাত্র জনতার ব্যানারে বুধবার (২৫ জুন) খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ হেড কোয়ার্টার ঘেরাও করে বিক্ষোভ হয়।
ওই রাতেই খুলনা ও চুয়াডাঙ্গা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে সুকান্তকে গ্রেপ্তার করে।
এরপর আন্দোলকারীদের একটি অংশ রাজপথ থেকে সরে আসলেও অপর অংশ নগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি, খুন
রাহাজানি, চাঁদাবাজি, কিশোর গ্যাং বৃদ্ধি, মাদকের ভয়াল ছোবল বন্ধে পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দারের পদত্যাগ দাবি করেন। এক দফা দাবিতে তারা সড়ক অবরোধ করে, কেএমপির সদর দরজায় তালা ঝুলিয়ে ও রাস্তায় টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে কর্মসূচি পালন করে। এ পর্যায়ে ঘোষণা দিয়ে কর্মসূচির সাথে যুক্ত হয় বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল।
শনিবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব খুলনা প্রেসক্লাব পরিদর্শনে আসেন। ওই সময় কেএমপি অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেয়া বিক্ষোভকারীরা প্রায় তিন কিলোমিটার পথ মিছিল করে খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে এসে অবস্থান নেয় এবং কেএমপি কমিশনারের বিষয়ে সরকারের সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত দাবি করে। তারা দু’ঘন্টারও বেশি
সময় সেখানে অবস্থান নেন। ঢাকায় ফিরে ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে কথা বলে সমস্যার সুরাহা করবেন- প্রেস সচিবের এমন আশ্বাসের পর ফিরে যান তারা।
এদিকে রোববার জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের বর্ষপূর্তি উপলেক্ষ মাসব্যাপি কর্মসূচির অংশ হিসেবে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে মেলা আয়োজনের অনুমতি চেয়ে খুলনা জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আবেদন দিতে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। এখানে মেলার আয়োজন নিয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে মতবিরোধ দেখা দিলে তারা তিন ঘন্টারও বেশি সময় সেখানে অবস্থান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
নগরীতে একের পর এক মব সৃষ্টির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সোমবার (৩০ জুন) দুপুর দেড়টায় খুলনা প্রেসক্লাবে প্রেস ব্রিফিং করে জুলাই বিপ্লবের সমমনা আট সংগঠনের নেতারা।
তারা এ সকল ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, জুলাই আন্দোলন দমনে এসআই সুকান্তর নির্মম আচরণের জন্য তাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে
আমার আন্দোলন শুরু করেছিলাম। কোনো ব্যক্তিকে টিকিয়ে রাখা বা নামানো জন্য আন্দোলন করিনি। সুকান্ত গ্রেপ্তার হওয়ায় আমার আন্দোলন থেকে সরে আসি। কিন্তু একটি বিশেষ মহল আমাদের গুটিকয়েক সহযোদ্ধাকে ব্যবহার করে আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে।
তারা বলেন, সরকার ও কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির সাথে সমন্বয় করে খুলনায় জুলাই মাসব্যাপি কর্মসূচি পালন করবো। এমন কোনো কাজ করবো না যা জুলাই আন্দোলনকে বিতর্কিত করে। কেউ এমন কাজ করতে চাইলে তাদেরকে প্রতিহত করা হবে বলেও ঘোষণা দেন। জুলাই আন্দোলনের বর্ষপূর্তির সাথে মেলা বা কনসার্টের কোনো সম্পর্ক নেই বা থাকতে পারে না বলে পরিস্কার ভাষায় জানিয়ে দেন তারা।
ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখেন জুলাই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে চোখ হারানো যোদ্ধা আব্দুল্লাহ আল শাফিল। উপস্থিত থেকে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আল শাহিরয়ার, রেড জুলাইয়ের মিরাজুল ইসলাম ইমন, জুলাই রেভ্যুলেশনারী এলায়েন্সের শেখ জাহিদুল ইসলাম জিহাদ, জাস্টিস ফর
জুলাইয়ের সাঈফ নেওয়াজ, ইনকিলাব মঞ্চের আব্দুল মুহাইমিন আদীব, আপ বাংলাদেশের ফয়জুল্লাহ ইকবাল শাকিল, রঙ মশালের মুনতাসির এবং প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট এলায়েন্সের প্রতিনিধিরা।
কেএমপি হেড কোয়ার্টার ঘেরাও কর্মসূচি অব্যাহত:
এদিকে পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ দাবিতে সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে পুনরায় কেএমপি হেড কোয়াটার্রের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। খুলনার সাধারণ ছাত্র-জনতার ব্যানারে অনুষ্ঠিত হলেও এদিনের বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়েছেন ছাত্রদল, যুবদলের বর্তমান ও সাবেক পদধারী নেতারা। তারা মুর্হুমুর্হু শ্লোগানে অবিলম্বে পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ দাবি করেন।
একটি পক্ষের প্রেস ব্রিফিং ও আন্দোলন কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করা হলে জহুরুল তানভির আমার দেশকে বলেন, আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে কর্মসুচি পালন করছি না। ফলে অন্যদের আপত্তি জানানোর কোনো সুযোগ নেই। আজ যারা প্রেস ব্রিফিং করেছেন, তাদের অধিকাংশই কোনো পদে নেই। বরং যারা আন্দোলন করছি তারাই বিভিন্ন পদে আছি। এভাবে প্রেস ব্রিফিং করে তারা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।
কেএমপি হেড কোয়ার্টার ছাড়াও সোমবার পুলিশের ডিসি (সাউথ) ও ডিসি (নর্থ) অফিস ঘেরাও করার কথা ছিল। কিন্ত জনগনের দূর্ভোগের কথা চিন্তা করে শুধুমাত্র হেড কোয়ার্টার ঘেরাও পালিত হচ্ছে। আজকের কর্মসূচি রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। দাবিপূরণ না হলে খুলনা অচল কর্মসূচির চিন্তা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
মেলা বন্ধের দাবিতে ইমাম পরিষদের স্মারকলিপি:
নগরীর শিববাড়ি মোড়ের জিয়া হল প্রাঙ্গণে মেলার আয়োজন বন্ধের জন্য খুলনা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে ইমাম পরিষদ। সোমবার সকালে ইমাম পরিষদের নেতারা এই স্মারকলিপি দেন।
জেলা ইমাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা গোলাম কিবরিয়া স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়, খুলনা শহরের অত্যন্ত ব্যস্তময় স্থান বাবরি চত্বরে (শিববাড়ি মোড়) ও পরিত্যক্ত জিয়া হল এলাকায় মাসব্যাপী মেলার আয়োজনের চেষ্টা চলছে। অতীতে আমরা দেখেছি যেখানেই মেলার আয়োজন করা হয়েছে সেখানে নগ্নতা ও অনৈতিকতা থাকে। লটারি, জুয়াসহ অনেক অসামাজিক ও অনৈসলামিক কাজ চলে থাকে। ফলে সমাজে ও রাষ্ট্রে অপরাধ প্রবনতা বৃদ্ধি পায়। এধরণের কোনো মেলার অনুমতি না দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয় স্মারকলিপিতে ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইমাম পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ এএফএম নাজমুস সউদ, মাওলানা নাসির উদ্দিন কাসেমী, অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রহমান, মাওলানা মুশফিকুর রহমান, মাওলানা আনোয়ারুল আজম, মোল্লা মিরাজুল হক, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা হেকমত উল্লাহ মাদানী, ডক্টর মুফতি আব্দুর রহিম, মুফতি জিহাদুল ইসলাম প্রমুখ।
জানা গেছে, গত বুধবার জিয়া হলের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে জুলাই উদযাপনের জন্য মাসব্যাপী নানা অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি চেয়ে খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়। আবেদনে সেখানে একটি জুলাই মঞ্চ, জুলাই কর্ণার, জুলাই প্রদর্শনী, বইয়ের দোকান, কিছু দেশীয় কুটির শিল্প, সাংস্কৃতি ও দেশীয় খাবারের দোকান থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়। প্রদর্শনী ও দোকান স্থাপনের কথা বলা হলেও সেখানে মেলার আয়োজন চলছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এদিকে আবেদন করার পরপরই মেলার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের মালিক পতিত প্রধানমন্ত্রী হাসিনার চাচাতো ভাইদের আস্থাভাজন যুবলীগ নেতা রাসেল মিয়া তার ফেসবুকে পেজে মেলা নিয়ে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। এ নিয়ে সচেতন মহলে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ, চলছে নানা সমালোচনা।
এ সময় অসাবধানতাবশত তার শরীরে সার্ভিস তার স্পর্শ করলে তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা দ্রুত তাকে কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
৮ মিনিট আগেবুধবার ভোর রাতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে ২৩০ পিস ইয়াবাসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার সাইফুল ইসলাম সাঘাটা উপজেলার কামালেরপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক। তিনি ওই এলাকার বারকোনা গ্রামের চান মিয়ার ছেলে।
২১ মিনিট আগেমঙ্গলবার রাতে ১২টার দিকে তিনটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার সময় স্থানীয় বাসিন্দারা ধাওয়া করে। এসময় চালসহ একটি অটোরিকশা জব্দ করলেও বাকি দুটি রিকশা দ্রুত গতিতে পালিয়ে যায়।
২৭ মিনিট আগেবিএনপি নেতা সামছুল ইসলাম জেলার সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক। ছাড়া পাওয়া দুই আসামি হলেন, সদর উপজেলার লস্করপুর ইউনিয়ন যুবলীগ সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান ওরফে রানা (৪০) ও একই কমিটির সদস্য মামুন আহমেদ (৩৮)।
৩৮ মিনিট আগে