সদরপুরে যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি, ঘটতে পারে দুর্ঘটনা

উপজেলা প্রতিনিধি, সদরপুর (ফরিদপুর)
প্রকাশ : ১২ জুন ২০২৫, ১৭: ৪৮

ফরিদপুরের সদরপুরে যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে রান্নার কাজে ব্যবহৃত এলপি গ্যাস সিলিন্ডার। একটু অসতর্ক বা নজরদারি না থাকলে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। সদরপুর উপজেলার সাড়ে সাতরশি বাজার, সদরপুরবাজার, মনিকোঠা, পিয়াজখালী, আকটেরচর, চরচাদপুর, ক্বারীরহাট, ভাষানচর, বাবুরচর, চন্দ্রপাড়া সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সরকারি নিয়মনীতি ছাড়াই যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে রান্নার কাজে ব্যবহৃত এলপি গ্যাস সিলিন্ডার।

বিজ্ঞাপন

মুদি দোকান, ওষুধের দোকান, পানের দোকান, মোবাইল রিচার্জের দোকান, চায়ের দোকান, স্টেশনারি ও কসমেটিকসের দোকান, হার্ডওয়ারের দোকানসহ বিভিন্ন দোকানে হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন নামে আবার কোম্পানির সিল বাদেই বেনামে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার।

উপজেলার হাটবাজারসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিভিন্ন দোকানে অবাধে বিক্রি হচ্ছে এসব সিলিন্ডার। খুচরা বিক্রির জন্য সর্বোচ্চ ১০টি সিলিন্ডার মজুত রাখতে পারেন বিক্রেতা। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে বিক্রির জন্য বাইরে রাস্তার পাশে জনগণের চলাচলের জায়গায় স্তূপ করে এসব এলপি গ্যাস সিলিন্ডার সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

একটার ওপর আরেকটা সাজিয়ে রাখা হয়েছে দোকানের বারান্দায়। জনবহুল এলাকায় যত্রতত্রই গ্যাস সিলিন্ডার এলোমেলো অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে। একটু অসতর্ক হলেই যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। সরকারি নিয়মানুযায়ী এলপি গ্যাস বিক্রয়, মজুত ও বাজারজাত করতে হলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়ীকে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহণ এবং ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স ও অগ্নিনির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডার সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক।

উপজেলার আটরশি মোড়ের ভাই ভাই স্টোরেজের মালিক হাছিব ফকিরের কাছে লাইসেন্সবিহীন গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রিতে লাইসেন্স লাগে কি না তা তার জানা নেই। এ ছাড়া একাধিক বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশির ভাগ বিক্রেতারই কোনো লাইসেন্স বা অমুমোদন নেই।

শুধু ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স দিয়েই তারা ব্যবসা করছেন। অনেকের আবার ট্রেড লাইসেন্সও নেই। আইন ও বিস্ফোরক প্রতিরোধ সম্পর্কে জানতে চাইলে অনেকেই তা জানেন না, আবার জানলেও অনেকে তা মানেন না। অনেক বিক্রেতা অভিযোগ করেন তারা দোকানে বসে বিক্রি করলেও অনেক বিক্রেতা মোবাইল ফোনেও গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করে।

হোম ডেলিভারির নামে নেওয়া হয় অতিরিক্ত দাম। সিলিন্ডারের গায়ে উৎপাদনের তারিখে কোম্পানির লোগো থাকার নিয়ম থাকলেও বেশির ভাগ সিলিন্ডারে কোনো কোম্পানির সিলিন্ডার তা উল্লেখ নেই। নিম্নমানের সিলিন্ডারে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন অনেকেই। সচেতন মহলের অভিযোগ দীর্ঘদিন যথাযথ কর্তৃপক্ষের তদারকি না থাকায় দিন দিন অবৈধভাবে এই ব্যবসা বেড়েই চলছে।

অনেকেই আশঙ্কা করছেন, জনবহুল এলাকায় সিলিন্ডার মজুত ও বাজারজাত করার ফলে অগ্নি দুর্ঘটনাসহ যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ রনেন্দ্র নাথ চৌধুরী বলেন, ‘গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির লাইসেন্স জেলা ফায়ার সার্ভিস অফিস থেকে ইস্যু করা হয়, আমরা শুধু তদারকি করি। তবে জনবল কম থাকায় সব সময় সব এলাকায় তদারকি সম্ভব হয় না’।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত