আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

যশোর-২

বিএনপির প্রার্থী সাবিরাকে নিয়ে দলেই চরম অসন্তোষ

ইলিয়াস উদ্দীন, ঝিকরগাছা (যশোর)
বিএনপির প্রার্থী সাবিরাকে নিয়ে দলেই চরম অসন্তোষ

যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন মোছা. সাবিরা সুলতানা। তিনি দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি। আওয়ামী দোসরদের সহায়তায় বিএনপির অফিস দখলের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া মিথ্যা তথ্য ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে দুদকের মামলায় ছয় বছরের দণ্ডিত আসামি তিনি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বিএনপির দুর্দিনে এলাকার সাধারণ নেতাকর্মীরা তাকে পাশে পাননি। এসব কারণে দুই উপজেলার ৫২ নেতা বিএনপির স্থায়ী কমিটিসহ শীর্ষ ১৩ নেতার কাছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। তারা সাবিরা সুলতানার মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। আবেদনকারীদের সবাই বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ সহযোগী সংগঠনের শীর্ষপর্যায়ের নেতা বলে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ২০১৫ সালে উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালে সাবিরা সুলতানা নিজের দলের নেতাকর্মীদের সুযোগ-সুবিধা দেননি। আত্মীয়তার সুবাদে পানিসারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পরিষদ চেয়ারম্যান নওশের আলীর সহযোগিতায় এখানে উন্নয়নমূলক কাজ চালিয়ে যান তিনি।

২০০৯ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন মিথ্যা তথ্য ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে একটি মামলা করেছিল তার বিরুদ্ধে। ২০১৮ সালের ১২ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত তাকে ছয় বছর কারাদণ্ড দেয়। ওই রায়ে সাবিরা সুলতানার এক কোটি ৭৮ হাজার টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করে আদালত। একই বছরের ২৯ আগস্ট উপসচিব আনজুমান আরা স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে তাকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কীভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন—এমন অভিযোগ বিএনপি নেতাদের।

মামলার ব্যাপারে গত বুধবার দুপুরে সাবিরা সুলতানা জানান, দুদকে আমার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা হয়েছিল। বর্তমানে মামলাটি স্থগিত রয়েছে এবং জামিনে আছি।

এদিকে, ২০২৪ সালের এপ্রিলে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের সহযোগিতায় এবং পুলিশের উপস্থিতিতেই বিএনপির অফিস দখল করেছিলেন সাবিরা সুলতানা। এছাড়া উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠনে পরিবারতন্ত্র, আওয়ামীপ্রীতি এবং অযোগ্যদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ রয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হিসেবে পরিচিত মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামকে বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার করেছেন। এত আভিযোগ থাকার পরও তার মনোনয়ন পাওয়ায় মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ চরম আকার ধারণ করেছে।

ঝিকরগাছা উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোনাজ্জেল হোসেন লিটন বলেন, বিএনপির অফিসের দলীয় সাইনবোর্ডটি মুছে ফেলা সত্যিই দুঃখজনক। অফিস দখল করা ও সাইনবোর্ড মুছে ফেলার পরও সাবিরা ধানের শীষ প্রতীক পেয়েছেন।

উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আশরাফুল আলম রানা বলেন, বিএনপির প্রয়াত উপজেলা সভাপতি শহীদ নাজমুল ইসলামের দেওয়া দলীয় কার্যালয়টির সংস্কারকাজ চলছিল ২০২৪ সালে । ঠিক তখনই যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের সহযোগিতায় অফিসটি দখল করে নিয়েছিলেন সাবিরা ।

ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মোর্তোজা এলাহী টিপু বলেন, জেলা বিএনপির সাবেক অর্থবিষয়ক সম্পাদক এবং ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি প্রয়াত নাজমুল ইসলাম অফিসটি বিএনপির নামে উৎসর্গ করেন। কিন্তু ২০২৪ সালে সাবিরা সুলতানা আওয়ামী লীগের সহযোগিতায় সেটি দখল করে নেন।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন