জনবল সংকট আর প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বিকল থাকার কারণে ১০ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে শৈলকুপা মিনি মৎস্য হ্যাচারি। এতে এই অঞ্চলে মাছের সংকট দেখা দিয়েছে। মাছের সংকট নিরসনে শৈলকুপা মৎস্য হ্যাচারি আবার চালু করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, প্রায় চার দশক আগে ১৯৮২ সালে উপজেলার কোর্টপাড়ায় নির্মাণ করা হয়েছিল মিনি মৎস্য হ্যাচারি। হ্যাচারিটি একসময় মাছের রেণু উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও এখন মাছের রেণু পোনা উৎপাদনের স্থাপনাগুলো জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। হ্যাচারিটি বন্ধ থাকায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় মাছ চাষিরা বলছেন, হ্যাচারিটি বন্ধ থাকায় তারা বড় ধরনের সমস্যায় পড়েছেন।
১৯৮৬ সালের দিকে পুরো হ্যাচারিটি একবার বন্ধ হয়ে যায়। পরে ২০১৫ সালে মৎস্য বিভাগ আবারও কিছুদিনের জন্য রেণু উৎপাদন কার্যক্রম চালু করে। কিন্তু জনবল সংকট ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনার অভাবে একই বছরের শেষ দিকে হ্যাচারিটি আবারও বন্ধ হয়ে যায়। তার পর থেকে অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে আছে অবকাঠামো ও যন্ত্রপাতি। ব্যবহার না হওয়ায় ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে যন্ত্রসামগ্রী। এলাকার মৎস্য খামারিরা চাহিদামতো মাছের পোনা ও রেণু না পাওয়ায় একদিকে বাণিজ্যিকভাবে মৎস্য চাষ চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি অর্থনৈতিকভাবেও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন এ জেলার মৎস্য খামারিরা। উপজেলা মৎস্য অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, হ্যাচারিটি চালু থাকলে প্রতি মৌসুমে অন্তত ৪০ কেজি রেণু উৎপাদন করা সম্ভব, যা থেকে পোনা মাছ উৎপাদন হবে প্রায় ৪০ লাখের বেশি।
হ্যাচারিটি দীর্ঘদিন অচল থাকায় ভবন, ট্যাংক ও যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কোনো উদ্যোগ না নিলে ভবিষ্যতে এটি পুরোপুরি অকেজো হয়ে পড়বে। মাছচাষি মশিয়ার রহমান বলেন, ‘এখানে যদি আগের মতো রেণু পাওয়া যেত, তাহলে আমাদের খরচ অর্ধেক কমে যেত। এখন ঝিনাইদহ শহর বা পাশের জেলা থেকে রেণু আনতে বাড়তি টাকা লাগছে, সময়ও নষ্ট হচ্ছে।’ মাছচাষি শিহাব উদ্দিন বলেন, ‘সরকার যদি আবারও হ্যাচারিটি চালু করত, তাহলে স্থানীয়ভাবে ভালো মানের পোনা পাওয়া যেত।’
শৈলকুপা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, ‘পর্যাপ্ত জনবল ও প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না থাকায় হ্যাচারিটি পরিত্যক্ত ছিল। ২০২৪ সালে একটি বরাদ্দের মাধ্যমে হ্যাচারিটি পুনঃসংস্কার করা হয়েছে।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

