কিশোরগঞ্জে তারেক রহমান

জনগণের রায়ে একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতেই হবে

জেলা প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ
প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১: ৪১
আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১: ৫১

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে। এই সরকার কিছু সংস্কারের প্রস্তাবনা দিয়েছে। এই প্রস্তাবনাগুলোর ৯৫ পার্সেন্ট বিএনপি আড়াই বছর আগে দেশের মানুষের সামনে উপস্থাপন করেছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের মতামত দিয়েছে। বিএনপিও মতামত দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

কোনো কোনো বিষয়ে হয়তো অন্য কারও সাথে আমাদের মতপার্থক্য আছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক অধিকার, ভোটের অধিকার, দেশের মানুষের নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারের প্রশ্নে বিএনপির কারও সাথে কোনো আপত্তি নেই। এই কাজগুলো করতে আমাদের অবশ্যই জনগণের রায়ে একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতেই হবে। ওই সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি’র ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ভিডিও কনফারেন্স যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ১৬ বছর ধরে অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করে এসেছেন। গণতন্ত্রে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলো দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। মানুষ সংগ্রাম করেছেন নিজের রাজনৈতিক অধিকার ফিরে পাবার জন্য।

তারেক রহমান বলেন, সন্তানদের শিক্ষার ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য যা করার প্রয়োজন, নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং স্বাবলম্বী করার জন্য যা প্রয়োজন, দেশের কিশোর-যুবক, যাদের এই মুহূর্তে কর্মসংস্থান নেই, সেটি দেশে হোক বিদেশে হোক, তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে একজন দক্ষ শ্রমিক হিসেবে গড়ে তুলে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা জরুরি।

ছোট ছোট উদ্যোক্তা যারা, তাদের সহযোগিতার মাধ্যমে সফল করার পথ সুগম করা হবে।। কৃষকের পাশে গিয়ে দাঁড়ানো প্রয়োজন। সঠিক সময়ে তাদের সার, বীজ, কীটনাশক সরবরাহ নিশ্চিত করা দরকার। চিকিৎসা মানুষের জন্মগত অধিকার। গ্রাম থেকে শুরু করে শহরের মানুষ যেন সুবিধা পায়, এই কাজগুলো করতে জনগণের রায়ে একটি সরকার প্রতিষ্ঠিত হতে হবে।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার আগামী বছর ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। এই নির্বাচনে যদি আমাদের ৩১ দফার পক্ষে জনগণের রায় নিয়ে আসতে হয়, তাহলে যেকোনো মূল্যে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে স্বৈরাচার পালিয়ে যাওয়ার পর আমি মিটিংয়ে একটি কথা বলেছিলাম, স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও অদৃশ্য শক্তি কিন্তু ধীরে ধীরে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আজকে দেশের স্বার্থের আমাদের আর বসে থাকার সময় নেই।

বিএনপি একটি বিশাল পরিবার উল্লেখ্য তারেক রহমান বলেন, আমাদের সকলকে সচেতন থাকতে হবে। কেউ যেন আমাদের নাম ব্যবহার করে, বিএনপি’র নাম ব্যবহার করে নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করতে না পারে। কেউ যেন নাম ব্যবহার করে জনগনের মধ্যে আমাদের সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে। এ ব্যাপারে আপনাদের দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। আজ যারা কাউন্সিল করছেন, প্রার্থীদের কাছে যেমন কাউন্সিলররা গুরুত্বপূর্ণ, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী দলের কাছেও জনগণ গুরুত্বপূর্ণ। এই জনগণের সাথে আমাদের থাকতে হবে, জনগণের পাশে থাকতে হবে, পাশে রাখতে হবে। যেকোনো মূল্যে আপনাদের এটি নিশ্চিত করতে হবে।

কিশোরগঞ্জ জেলা পুরাতন স্টেডিয়ামে আয়োজিত সম্মেলনে জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলামের সঞ্চালনায় সম্মেলনে উদ্বোধক ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম। প্রধান বক্তা বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল। অতিথি ছিলেন সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন, আবু ওয়াহাব আকন্দ।

সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা স্টেডিয়ামে সমবেত হন। কয়েক হাজার কর্মীর উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয় সম্মেলন। এখন চলছে ২ হজার ৯০ জন কাউন্সিলর ভোটের মধ্য দিয়ে জেলা বিএনপির নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন কাজ। এই ভোটের মধ্য দিয়েই গঠিত হবে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির নতুন নেতৃত্ব। সভাপতি পদে ২ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত