দেশের রাজনীতিতে এক দীর্ঘ অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আজ থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক। শোকের প্রথম দিনেই যেন থমকে গেছে পুরো নগরজীবন, রাজশাহী জুড়ে নেমে এসেছে গভীর নীরবতা আর ভারাক্রান্ত আবহ।
বুধবার সকালের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই রাজশাহী নগরীর সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব গুরুত্বপূর্ণ ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত দেখা যায়। শহরের মোড়ে-মোড়ে মাইকে ভেসে আসছে শোকের বার্তা এবং কোরআন তেলওয়াত যা শুনে অনেককেই থমকে দাঁড়াতে দেখা গেছে।
রাষ্ট্রীয় শোকের কারণে বুধবার নগরীর অধিকাংশ সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতান বন্ধ রাখা হয়েছে। কর্মব্যস্ত রাজশাহীর চিরচেনা কোলাহল যেন হঠাৎ করেই হারিয়ে গেছে। রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল ছিল স্বাভাবিক দিনের তুলনায় অনেক কম।
বাদ যোহর রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন মসজিদে বেগম খালেদা জিয়ার রূহের মাগফিরাত কামনায় গায়েবানা জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে তাঁর আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হবে।
রাজশাহী মহানগর বিএনপির এক তৃণমূল নেতা আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, বেগম খালেদা জিয়া শুধু একজন রাজনৈতিক নেত্রী ছিলেন না, তিনি ছিলেন আপসহীন সংগ্রামের প্রতীক। আজ আমরা একজন অভিভাবককে হারালাম। রাজশাহীর প্রতিটি নেতাকর্মীর হৃদয়ে তার স্মৃতি অমলিন থাকবে।
নগরীর রাজপাড়া এলাকার এক বিএনপি কর্মী বলেন, অনেক কষ্টের সময়েও তিনি মাথা নত করেননি। তার এই দৃঢ়তা আমাদের রাজনীতির পথ দেখিয়েছে।
রাজশাহীর সাহেববাজার এলাকার এক সাধারণ ব্যবসায়ী বলেন, আমি রাজনীতি করি না, কিন্তু আজ মনে হয়েছে দোকান খোলা রাখা ঠিক হবে না। দেশের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্মান জানাতেই দোকান বন্ধ রেখেছি।
আরেকজন নগরবাসী জানান, আজ শহরটা অদ্ভুতভাবে চুপচাপ। মনে হচ্ছে আমরা সবাই একসঙ্গে কাউকে হারিয়েছি।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় শোক উপলক্ষে রাজশাহীতে সব ধরনের আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি স্থগিত রাখা হয়েছে এবং শোককালীন বিধি-বিধান যথাযথভাবে পালন করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ঘোষিত রাষ্ট্রীয় শোক ৩১ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এ সময় রাজশাহীর বিভিন্ন মসজিদ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন অব্যাহত থাকবে।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

