আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

শীতে কাঁপছে লালমনিরহাট, দুর্ভোগে ছিন্নমূল মানুষ

হাসান উল আজিজ, লালমনিরহাট
শীতে কাঁপছে লালমনিরহাট, দুর্ভোগে ছিন্নমূল মানুষ

উত্তরের জেলা লালমনিরহাটে জেঁকে বসতে শুরু করেছে শীত। হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় আগাম শীতের দাপট দেখা যাচ্ছে এই জেলায়। ভোর থেকেই ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে জেলার সদরসহ ৫টি উপজেলা। সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টির মতো টপ টপ করে ঝরতে দেখা গেছে কুয়াশা। মহাসড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে বাস ও ট্রাক চলছে। ধীরগতিতে যানবাহন।

বিজ্ঞাপন

যাত্রী বা চালকের চিন্তিত মুখ। ঘন কুয়াশায় দৃষ্টিসীমা কমে আসায় লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কগুলোতে দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলছে যানবাহন। এতে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা। হিমেল বাতাস আর কনকনে ঠান্ডায় স্থবিরতা নেমে এসেছে কর্মজীবী মানুষের জীবনে। পেটের তাগিদে শীত উপেক্ষা করেই কাজে বের হতে হচ্ছে দিনমজুর, কৃষক আর রিকশাচালকদের। দীর্ঘ সময় কুয়াশায় থাকায় ঠান্ডায় হাত-পা অবশ হয়ে আসার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাদের! কুয়াশার ঘনত্ব আর হিমেল হাওয়া অব্যাহত থাকলে সামনের দিনগুলোতে ভোগান্তি আরো বাড়ার আশঙ্কা করছেন এ অঞ্চলের মানুষ।

এদিকে গত কয়েক দিন ধরে লালমনিরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে চিন্তিত অভিভাবকরাও। ঠান্ডাজনিত রোগের কারণে গত কয়েক দিনের মধ্যে লালমনিরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে প্রায় অর্ধশত শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এতে লালমনিরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে জায়গা সংকট দেখা দিয়েছে। রোগীর স্বজনরা জানান, শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগ। জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়াসহ শীতজনিত নানান রোগে আক্রান্ত শিশু ও বয়স্কদের নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন।বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলছেন, শীতের প্রকোপের সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে ঠান্ডাজনিত রোগ। হাসপাতালটিতে নিউমোনিয়া, জ্বর, সর্দি-কাশি ও শীতকালীন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা বেড়েছে। আক্রান্ত হওয়া শিশুদের নিয়ে হাসপাতালে ছুটছেন তাদের বাবা-মায়েরা। এদিকে শিশুদের পাশাপাশি নানা বয়সী নারী-পুরুষরাও ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ফলে হাসপাতালটিতে প্রতিদিন বাড়ছে ঠান্ডায় আক্রান্ত রোগীর চাপ। তাদের কারো কারো পরিস্থিতি যথেষ্ট জটিল। সচেতনতার অভাবে প্রতিবছরই এমন চিত্র দেখা যায়।

এসব রোগ প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই। হাসপাতালে শিশু সন্তানকে নিয়ে আসা অভিভাবক আকলিমা পারভীন (৪২) জানান, ঠান্ডার কারণে তার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর ডাক্তার বলেছেন নিউমোনিয়া হয়েছে সেজন্য ভর্তি করেছি। মনে হচ্ছে দু-একদিনের মধ্যে সুস্থ্য হয়ে উঠবে।

হাসপাতালে নবজাতক ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তপন কুমার রায় বলেন, শীতের কারণে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেশি হয়ে থাকে। তিনি ঠান্ডার এই সময়ে সকলকে সতক থাকার আহবান জানান।

লালমনিরহাটের সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল হাকিম বলেন, শীতকাল এলেই ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন শিশু ও বৃদ্ধরা। এ রোগে প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে হবে। শিশুদের কোনোভাবেই ঠান্ডা লাগানো যাবে না।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন